Advertisement
০২ মে ২০২৪

অমিত-পুত্রের ব্যবসা বেড়েছে ১৬ হাজার গুণ?

একটি ওয়েবসাইট আজ অমিত-পুত্রকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরেই কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইট করেন, ‘অবশেষে জানা গেল, নোট বাতিলের একমাত্র সুফল পেলেন কে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নয়, গরিব কিংবা কৃষক নন।

জয় শাহ এবং অমিত শাহ

জয় শাহ এবং অমিত শাহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৬
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী এবং অমিত শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরেই অমিতের ছেলে জয় শাহের ব্যবসা প্রায় ১৬ হাজার গুণ ফুলেফেঁপে ওঠে বলে অভিযোগ করল বিরোধীরা। সেই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে বিজেপি জানিয়েছে, জয় সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ভাবে ব্যবসা করেন। দলের তরফে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল দাবি করেন, অমিতের সম্মানহানির লক্ষ্যেই মিথ্যা, বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সিপিএম দফতর পর্যন্ত গেলেনই না অমিত

একটি ওয়েবসাইট আজ অমিত-পুত্রকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরেই কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইট করেন, ‘অবশেষে জানা গেল, নোট বাতিলের একমাত্র সুফল পেলেন কে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নয়, গরিব কিংবা কৃষক নন। নোট বাতিলের শাহের শাহ। জয় অমিত।’ সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের কপিল সিব্বলও দাবি করেন, রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ-এর হিসেবই দেখাচ্ছে, ২০১৪-র পর থেকে কী ভাবে লাভ করে জয়ের সংস্থা।

কপিলের অভিযোগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াই পীযূষ গয়ালের পুরনো মন্ত্রকের (অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক) অধীনস্থ সংস্থা থেকে ঋণ ও বরাত পেয়েছেন অমিত-পুত্র। পাল্টা সাংবাদিক বৈঠকে পীযূষ বলেন, বিষয়টি তিনি জানতেন না। সংস্থাটি দু’হাজার জনকে ঋণ দিয়েছে। রেলমন্ত্রী আরও বলেন, জয় শাহ বাজারের সুদের হারেই নিয়মমাফিক চেকে ঋণ নিয়ে তা সুদ-সহ মিটিয়েছেন। জয়ের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেও ঋণ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। কিন্তু বিবৃতি দিয়ে জয়ের নিজের বক্তব্য, তিনি সম্পূর্ণ বৈধ পথে ব্যবসা করেছেন। আয়কর ও ব্যাঙ্কের রেকর্ডেই তার প্রমাণ রয়েছে।

প্রতিবেদনটির অংশ উদ্ধৃত করে বিরোধীদের আরও দাবি, ২০১৩-’১৪ সালে লোকসানে চলা জয়ের সংস্থা ‘টেম্পল এন্টারপ্রাইজ’ ২০১৪-’১৫ সালে লাভ করেছিল মাত্র ১৮,৭২৮ টাকা। তখন তাদের লেনদেন ছিল ৫০ হাজার টাকার। পরের বছরেই সংস্থার ব্যবসা বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকায়। বিরোধীদের দাবি, রিলায়্যান্স সংস্থার পরিমল নাথওয়ানির পরিবারের রাজেশ খান্ডেলওয়ালের থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ পান জয়। অথচ ২০১৬ সালে ‘লোকসান’-এর যুক্তিতে সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পীযূষের পাল্টা দাবি, ‘‘নাথওয়ানির সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকেই খান্ডেলওয়ালের সম্পর্ক রয়েছে জয়ের সঙ্গে। ৮০ কোটি
এমন কিছু বড় অঙ্ক নয়। তা-ও লোকসানের জন্য তাঁকে ব্যবসা বন্ধ করতে হয়েছে।’’

কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘কুসুম ফিনসারভ’ সংস্থায় ৬০ শতাংশ মালিকানা ছিল জয়ের। শেয়ারের কারবার করত সংস্থাটি। হঠাৎই বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের রতলামে কোনও অভিজ্ঞতা ছাড়াই তারা পেয়ে যায় বায়ু-বিদ্যুতের বরাত। তার জন্য অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সংস্থা এবং নামমাত্র বন্ধকে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেও সংস্থাটি ঋণ পায়। বিজেপি এই ‘মিথ্যা’ অভিযোগের বিরুদ্ধে পুরোদস্তুর আইনি লড়াইয়ে নামছে।

পীযূষ বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটি যারা প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি ধারায় ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হচ্ছে।’’ বিজেপির তরফে প্রকাশ করা জয়ের বিবৃতিতেও এই মামলার কথা জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে যে সমস্ত অভিযোগ তোলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা যদি তা সরাসরি বা ঘুরিয়ে পুনঃসম্প্রচার কিংবা পুনঃপ্রকাশ করে, তা হলে একই দেওয়ানি এবং ফৌজদারি অভিযোগ তাঁদের উপরেও চাপবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE