প্রকাশ কারাটের তৈরি পথে নয়। সীতারাম ইয়েচুরি চলতে চান তাঁর ‘গুরু’ হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের পথেই। তা বুঝিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, ‘‘সাম্প্রদায়িক সরকারের বিরুদ্ধে বিকল্প সরকার তৈরিতে আমরা কাজ করব।’’ ১৯৯৬-এ হরকিষেণ সিংহ সুরজিত করেছিলেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে।
ইয়েচুরির এই বার্তা যতখানি বাইরের জগতের জন্য, তার থেকেও বেশি দলে তাঁর কমরেডদের জন্য। ২০১৮-র পার্টি কংগ্রেসে পার্টির রাজনৈতিক লাইন বদলাতে চাইছেন সীতারাম। কারণ পার্টির বর্তমান রাজনৈতিক লাইন তাঁকে জাতীয় স্তরে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কোনও রকম জোটের অনুমতি দেয় না। কিন্তু সেই লাইন তৈরি হয়েছিল ২০১৫-র বিশাখাপত্তনম পার্টি কংগ্রেসে। বলা হয়েছিল, সিপিএম শুধু দলের শক্তিবৃদ্ধি এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট তৈরিতে মন দেবে। ইয়েচুরি সে বার সাধারণ সম্পাদকের গদিতে বসেছিলেন ঠিকই। কিন্তু ওই রাজনৈতিক লাইন তৈরি হয়েছিল তাঁর পূর্বসূরী প্রকাশ কারাটের হাতে। ইয়েচুরি এ বার গুরুর দেখানো পথে নিজের পথ তৈরি করতে চাইছেন।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে কিছু দিন আগে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে ইয়েচুরির বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠক নিয়ে মুখ খুলে সীতারাম বলেন, ‘‘উত্তরটা ১৯৯৬-এর পরিস্থিতিতে লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের ইতিহাসই আমাদের পথ দেখাবে।’’ ইতিহাস বলছে, ১৯৯৬-এর লোকসভা ভোটে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এ কে গোপালন ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন সুরজিত। নতুন জোট তৈরির কাজ শুরু করেন। চার বাম দলের সঙ্গে জনতা দল, সমাজবাদী পার্টি, অগপ, ডিএমকে, তেলগু দেশম, তামিল মানিলা কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স, এন ডি তিওয়ারির কংগ্রেস, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি মিলে তৈরি হয় ১৩ দলের যুক্তফ্রন্ট। অটলবিহারী বাজপেয়ীর ১৩ দিনের সরকারের পতনের পর সেই যুক্তফ্রন্টই সরকার তৈরি করে। কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন দিয়েছিল।
পরের লোকসভা ভোটে মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে জোট তৈরির প্রসঙ্গে ইয়েচুরির স্পষ্ট মন্তব্য, ‘‘নীতি ও কর্মসূচির ভিত্তিতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। কারণ শুধু একসঙ্গে এলেই বিরোধীদের জোট হবে না। এটা শুধুই পাটিগণিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy