নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী আন্দোলনের জেরে ফের উত্তপ্ত অসমের তিনসুকিয়া। গত রাতে সিজুগুড়ি এলাকায় ১১টি ফল ও আনাজের দোকানে আগুন লাগানো হয়। সিজুগুড়িতেই বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকটি দোকান ও হোটেলে আগুন লাগানোর ফলে এক প্রবীণ হোটেলকর্মী মারা যান। পাশাপাশি, পানবাড়ি এলাকায় চারটি বাঙালি পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে এনে তাঁদের কাঁচা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও আসু অহিংস সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এবং তারা বলছে, রাতে কোনও আন্দোলন চালাচ্ছে না। জারি রয়েছে নৈশ কার্ফুও। তবে আগামিকাল থেকে কার্ফু তুলে নেওয়া হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর। তবে তার মধ্যেও তিনসুকিয়ায় পরপর এমন ঘটনা ঘটায় আতঙ্কে বাঙালিরা। তিনসুকিয়ার এক বাঙালি গায়িকা বলেন, ‘‘এখন উৎসব-অনুষ্ঠানের মরশুম। কিন্তু অনুষ্ঠান করা দূরের কথা, বাড়িতে রেওয়াজ করাও বন্ধ।’’ তাঁর বক্তব্য, এখানকার বাঙালিরা অনেক ভরসা করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল আসল সময়ে সব নেতা দিসপুর সামলাতেই ব্যস্ত। আমাদের পাশে বিজেপি, পুলিশ কেউই নেই।’’ এ দিকে, আজ থেকে তিন দিন, রাজ্যজুড়ে সত্যাগ্রহ ও জেল ভরো আন্দোলন শুরু করল আসু। গুয়াহাটির লতাশিলে সত্যাগ্রহে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন। সমাবেশের পরে মিছিল করে গ্রেফতার হন আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচার্য, সভাপতি দীপাঙ্ক নাথ, সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ-সহ সহস্রাধিক মানুষ। পরে সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সমুজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘কারাগারে যেতে ভয় করি না। সংশোধনী বাতিল না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।’’
অগপ নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত বরাবরই দলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে বিলের বিরুদ্ধে সরব। তিনি বলেন, ‘‘দলের থেকে অসম বড়। এই অগপর কোনও নির্দিষ্ট নীতি নেই।’’ তবে অগপর ক্ষমতাসীন নেতৃত্ব তথা সভাপতি অতুল বরা বলেন, ‘‘আবেগ নয়, যুক্তি দিয়ে ভাবার সময় এসেছে। মহন্তের সময়েই বিদেশিরা নাগরিকত্ব পেয়েছে।’’ বরা জানান, ছয় জনগোষ্ঠীর জনজাতিকরণ, অসমে ইনার লাইন পারমিট, প্রভৃতি দাবি নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে তাঁরা শীঘ্রই দেখা করবেন।