বাঁশি সাপুড়েদের ডেকে এনেও লাভ হয়নি। —নিজস্ব চিত্র।
কাজের দুপুরে ব্যস্ত লুটিয়েন দিল্লি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, শ্রমশক্তি ভবন, নীতি আয়োগ— একটু দূরে রেল ভবন, সংসদ ভবন। তার মধ্যেই হঠাৎ লাউডস্পিকারে সাপুড়ে বিন।
‘নাগিনা’ ছবিতে শ্রীদেবীর মুখে ‘ম্যায় তেরি দুশমন’ গানের মাঝে অমরীশ পুরীর বাঁশি যে সুর তুলছিল, ভরদুপুরে রাজধানীতে সেই সুর কে বাজায়? সাংসদদের কনস্টিটিউশন ক্লাবের উঠোনে গুছিয়ে বসেছেন সাপুড়েরা। ক্লাব কর্মীরা বললেন, ওঁদের কেউটে ধরতে ডাকা হয়েছে!
দিল্লির রাস্তায় হনুমান, বাঁদর, কাঠবেড়ালির সঙ্গে অহরহ দেখা হয়। সাপেরা থাকলেও বড় বড় বাগান, জঙ্গুলে এলাকায় থাকে। রিজ এলাকায় যেমন রক পাইথন আছে বলে শোনা যায়। কিন্তু তারা তো রাস্তাঘাটে উদয় হয় না সে ভাবে। কনস্টিটিউশন ক্লাবে কেউটে কোথা থেকে এল?
আরও পড়ুন:ভাল থাকুক মুরগিরাও, ভাবনা নতুন আইনের
নিত্যদিনই বিনোদন, বিয়েবাড়ি, শরীর-চর্চা, সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে সরগরম থাকে সাংসদদের ক্লাব। ডিসেম্বর মাসে নোট বাতিলের বিরুদ্ধে এখানেই সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন রাহুল গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনে কাচের দরজায় সেন্সর লাগানো। কেউ সামনে এলে আপনা থেকে খুলে যায়। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে কেউটের আবির্ভাব। প্রযুক্তি মেনে কাচের দরজা খুলে গিয়েছে তার জন্যও। নিরাপত্তা কর্মীরা এগিয়ে দেখেন, সাক্ষাৎ ফণীশ্বর! লাঠিসোটা জোগাড় করে তাড়াতে যেতেই সেঁধিয়ে গেল মাটির নীচের নর্দমায়। তার পরেই বুধবার সকালে বদরপুর থেকে সাপুড়েদের ডেকে আনা হয়েছে।
পাশেই ভিপি হাউস, সাংসদদের ফ্ল্যাট। তার মধ্যে দুই সাপুড়ে বিন বাজিয়ে চলেছেন। এমনিতে লুটিয়েন এলাকায় শীতকালেও সাপুড়ের দেখা পাওয়া বিরল। বিন ফুঁকে ‘মন দোলে মেরা’ ধুন শেষ কবে শোনা গিয়েছে, কে জানে! হাতের সামনে বংশীধারী সাপুড়েকে পেয়ে একজন তাই মাইক্রোফোন ধরেছেন। মজা দেখতে ভিড়ও জমেছে।
কিন্তু সাপ তো শুনতেই পায় না। বাঁশির দুলুনি দেখে মাথা নাড়ে। বাঁশি শুনে বেরিয়ে আসা তো তার কম্মো নয়! ক্লাব কমিটিতে বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডি, কংগ্রেসের রাজীব শুক্লর মতো নেতা রয়েছেন। কার মাথায় বাঁশি শোনানোর বুদ্ধি এল? সবারই দাবি, তাঁরা এমন বুদ্ধি দেননি। সাপও এসে ধরা দেয়নি। কিন্তু ভিভিআইপি-দের জীবন বলে কথা। ঠিক হয়েছে, এ বার বন্যপ্রাণী দফতরকে ডাকা হবে। তারা যদি সাপ-মুক্তি ঘটাতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy