প্রতীকী ছবি।
চণ্ডীগড়ের বর্ণিকা কুণ্ডূ বা গুরুগ্রামের অফিস-ফেরত যুবতীর পিছনে ধাওয়া করা, কিংবা উত্তরপ্রদেশে বন্ধুত্ব করার ছুতোয় পিছু নিয়ে শেষ পর্যন্ত সাড়া না পেয়ে তরুণীকে হত্যা— এই সব ঘটনা কোনও ব্যতিক্রম নয়| উল্টে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র ‘ছেলেরা তো মেয়েদের পিছনে ছোটেই’ এই তত্ত্ব মেনেই যেন বছরে বছরে বাড়ছে পিছু নেওয়ার ঘটনা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে মহিলাদের পিছু ধাওয়া করার ঘটনা এক লাফে বেড়েছে ৫২ শতাংশ। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের, ধরপাকড়-গ্রেফতারি হলেও, শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হচ্ছে মাত্র ৫-৭ শতাংশ অভিযুক্ত। মন্ত্রকের কাছে সেটাই এখন সব চেয়ে চিন্তার বিষয়। বিষয়টি নিয়ে মহিলা কমিশনের তদ্বিরের পরে নারী নিগ্রহ রুখতে প্রতিটি রাজ্যকে বাড়তি পদক্ষেপ করার জন্য চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: বর্ণিকা কাণ্ডের ছায়া গুরুগ্রামে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৪ সালে গোটা দেশে ৪৬৯৯টি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। যাতে গ্রেফতার হয় ৫৪৩৯ জন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হন ২৬২ জন। ২০১৬ সালে পিছু ধাওয়া করার ঘটনা প্রায় ৫২% বেড়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৭১৩২টি। গ্রেফতার ৮৬২০ জন। শাস্তি পেয়েছে মাত্র ৪৮১ জন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, অভিযোগ বা গ্রেফতারির সংখ্যা উল্লেখজনক ভাবে বাড়লেও, শাস্তিপ্রাপ্তদের সংখ্যা ৫-৭ শতাংশই রয়ে গিয়েছে। মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, পিছু নেওয়ার মতো আপাত নিরীহ অপরাধেই হাতেখড়ি করে আরও বড় অপরাধের পথে পা বাড়াচ্ছে অভিযুক্তরা। তাই পিছু নেওয়ার মতো ঘটনার ক্ষেত্রেও কড়া শাস্তি হওয়া জরুরি বলেই মনে করছে মন্ত্রক। সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকেও।
স্বরাষ্ট্রকর্তাদের মতে, অভিযোগ গ্রহণ থেকে অভিযুক্ত গ্রেফতার-এই পর্যন্ত কোনও সমস্যা থাকে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামলা চালিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্যাতিতার পরিবার পিছিয়ে আসে। মামলা চালানোর অক্ষমতা, জামিনে মুক্ত অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারকে ভয় দেখানো, প্রমাণ জোগাড়ে পুলিশি ব্যর্থতা বা অর্থের বিনিময়ে মামলা দুর্বল করে দেওয়া—নানাবিধ কারণে শেষ পর্যন্ত বহু মামলা মাঝপথেই থমকে যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্ণিকা কুণ্ডূ সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি। ফেসবুকের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের সমর্থন পেয়ে তাঁর লড়াইটিকে ওই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। যে সুযোগ পান না অনেকেই। এমনকী বর্ণিতা যে ভাবে পরিবারের সাহায্য পেয়েছেন বহু মেয়ে সেই সমর্থনটুকুও পান না। উল্টে বহু ক্ষেত্রে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না করা বা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ থাকে।’’
গত তিন বছরে গোটা দেশে মহিলাদের পিছু ধাওয়া করার ঘটনায় একেবারে শীর্ষে মহারাষ্ট্র (৩৭৮৩টি)। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে গত তিন বছরে এই ধাঁচের অপরাধের অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৭৬৫টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy