কট্টরপন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই)-কে নিষিদ্ধ করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হতে পারে আদালতে। পিএফআইয়ের ছাত্রশাখা ‘ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’ (সিএফআই) বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক এবং ভারতীয় সংবিধানের মূল্যবোধের পরিপন্থী’ বলা হয়েছে।
পিএফআই এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলিকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বুধবার বলেন, ‘‘আমরা পিএফআইয়ের মতাদর্শ সমর্থন করি না। কিন্তু এ ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তকেও সমর্থন করতে পারছি না।’’
তেলঙ্গানার হায়দরাবাদের সাংসদ ওয়েইসির অভিযোগ, একতরফা ভাবে পিএফআই এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করার কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ ভারতীয় রাজনৈতিক ‘স্বৈরাচারী পদক্ষেপের’ একটি বড় প্রমাণ। তিনি বলেন, ‘‘এর পর কোনও মুসলিম যুবকের কাছে পিএফআইয়ের প্রচারপত্র পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ এনে সহজেই ‘কালো আইন’ ইউএপিএর ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে। এর ফলে আসলে মুসলিম যুবকদের মনের কথা প্রকাশ করার উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
কংগ্রেস নেতা তথা মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বুধবার পাঁচ বছরের জন্য পিএফআই এবং সহযোগী সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন এই পদক্ষেপ করা হল, সে বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সে বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ সামনে আনা উচিত।’’ কংগ্রেসের আর এক নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘সমাজে মেরুকরণ এবং সামাজিক বিভাজন ঘটায়, এমন সব দল ও সংগঠনের বিরোধী কংগ্রেস।’’ অন্য দিকে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বুধবার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা কোনও সমাধান নয়। কট্টরপন্থী সংগঠনগুলিকে রাজনৈতিক ভাবে একঘরে করা প্রয়োজন।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার পিএফআই-এর পাশাপাশি তাদের সহযোগী সংগঠন অল ইন্ডিয়া ইমামস্ কাউন্সিল, ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া, রেহাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল উইমেন’স ফ্রন্ট, জুনিয়র ফ্রন্ট, ন্যাশনাল কনফারেন্স অফ হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, এমপাওয়ার ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এবং রেহাব ফাউন্ডেশন (কেরল)-কেও কেন্দ্রের তরফে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পিএফআই এবং তার ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জঙ্গিগোষ্ঠী স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি), জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস) এর সঙ্গেও ওই সংগঠনগুলির যোগাযোগের ‘তথ্য’ মিলেছে। যদিও সিএফআই জানিয়েছে, তারা রাষ্ট্রবিরোধী কোনও তৎপরতায় জড়িত নয়।