তেজস্বীর বাংলোর অন্দরমহল। —নিজস্ব চিত্র
পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে সাত তারা হোটেলের মতো নিজের বাংলো সাজিয়েও তা রক্ষা করতে পারলেন না তেজস্বী যাদব। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই বাংলো ছেড়ে যেতে হল তাঁকে।
রাজ্যে মহাজোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা ভবন নির্মাণ দফতরের মন্ত্রী থাকার সময়ে বাংলোটিকে তিনি মনের মতো করে সাজান। যেহেতু দফতরটি নিজের হাতে ছিল, তাই বিদেশ থেকে টাইলস আনা থেকে শুরু করে আধুনিক সেন্সর লাগানো বাথরুম সবই তৈরি করান তিনি। রাজ্যের বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী গতকাল, মাঘি পূর্ণিমায় পুজোপাঠ সেরে ঢুকলেন ৫ দেশরত্ন রোডের সেই বাংলোটিতে। বাংলোর অন্দরসজ্জা দেখে চোখ কপালে উঠেছে তাঁর। শুধুমাত্র ৪৫টি এয়ার কন্ডিশনই রয়েছে বাংলোটিতে।
মহাজোট সরকার তৈরি হওয়ার পরে ২০১৫ সালে পটনার ৫ দেশরত্ন রোডের বাংলোটি উপমুখ্যমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। সেই বাংলো বরাদ্দ হয় তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদের কনিষ্ঠ পুত্র তেজস্বীর জন্য। তারপরেই বাংলোর ভোল পাল্টে দেন তিনি। সুন্দর লন থেকে জগিং ট্রাক, বিলিয়ার্ডস বোর্ড থেকে অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরি করান তিনি। কিন্তু ২০১৬ সালে মহাজোট ভেঙে দিয়ে বিজেপির সঙ্গে ফিরে যান নীতীশ।
সরকার ভেঙে যাওয়ার পরে নিয়ম মেনে বাংলোটি ছেড়ে দেওয়ার কথা বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু বার বার সরকারি নির্দেশ পেয়েও বাংলো ছাড়েননি তেজস্বী। উল্টে পটনা হাইকোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সিঙ্গল বেঞ্চে তেজস্বীকে বাংলো ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই রায় বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। বাংলো ধরে রাখতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তেজস্বী। কিন্তু আদালত হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখার পাশাপাশি আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করে। এরপরেও বেশ কয়েক দিন টালবাহানার পর অবশেষে বাংলো ছাড়েন তেজস্বী। গতকাল গৃহপ্রবেশ করেন সুশীল মোদী।
সাংবাদিক ও দলের নেতাদের নিয়ে গতকাল বাংলোটি ঘুরে দেখেন সুশীল মোদী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাংলোটিতে সরকারি টাকার অপব্যবহার করা হয়েছে। নিজের বিলাসের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের এমন খরচ সাধারণের মনে বিরূপ প্রভাব তৈরি করবে।’’ জানান, বাংলোয় থাকা ‘অপ্রয়োজনীয় সামগ্রী’ সরকারকে ফেরত নিতে অনুরোধ করবেন তিনি। পাশপাশি, এখানে থাকার চেয়ে রাজেন্দ্রনগরে নিজের পৈত্রিক বাড়িতে থাকতেই তিনি পছন্দ করবেন বলে জানিয়েছেন। আর তাঁর ছেড়ে যাওয়া সাত তারা বাংলো নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তেজস্বী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy