সপ্তাহখানেক আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে পড়শি দেশকে কড়া সুরে বিঁধেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তার পরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করতে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। সেই আক্রমের পর পরই বারামুলায় ফের পাক জঙ্গিদের হামলা। গত কয়েক দিনে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উত্তাপ কেবলই চড়েছে।
এই সময়ে পাকিস্তান থেকে এসেছিল ১৯ জন মেয়ে। এই টানাপড়েনের আবহেও তাদের নিজের সম্তানস্নেহে আপন করে নিতে এতটুকু দ্বিধা করলেন না ভারতের বিদেশমন্ত্রী। দায়িত্ব নিয়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে দিলেন। এমনিতে দেশে-বিদেশে কেউ বিপদে পড়লে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কখনওই কসুর করেন না সুষমা। টুইটারের সুবাদে তাঁর এই ভাবমূর্তি এখন সর্বজনবিদিত। তবে এ ক্ষেত্রে ঘটনাটি একটু আলাদা।
গত সপ্তাহে পাকিস্তান থেকে এক দল মেয়ে চণ্ডীগড়ে একটি শান্তি সম্মেলনে এসেছিল। তাদের ফিরে যাওয়ার কথা ছিল আজ, অর্থাৎ ৪ অক্টোবর। কিন্তু এর মাঝেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হিসেব এলোমেলো করে দেয়। মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে পাকিস্তানে চিন্তায় পড়ে যান অভিভাবকরা। মেয়েদের ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে সেই সময় প্রশাসনের তরফে দিল্লিতে থাকা পাকিস্তানি ওই দলটিকে যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তাদের বাবা-মায়েরা চাইছিলেন, ঘরের মেয়েরা যত দ্রুত সম্ভব ঘরে ফিরে আসুক।
এই সঙ্কটের জেরে ১ অক্টোবর শান্তি সম্মেলনের উদ্যোক্তা আলিয়া হারির বিদেশমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। সুষমা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আশ্বাস দেন, পাক মেয়েদের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধে হবে না। পাক অভিভাবকদের স্বস্তি দিয়ে অনুষ্ঠান শেষে ৪ অক্টোবরের আগেই মেয়েরা বাড়ি ফিরে গিয়েছে নিরাপদে।
কূটনীতি রয়েছে কূটনীতিতে। সীমান্ত পারের মেয়েদের সঙ্গে তার বিরোধ নেই। সুষমা টুইট করে আলিয়াকে বলেছেন, ‘‘তোমাদের নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কারণ ওরা তো আমাদের সবার মেয়ে।’’ ভারতের আতিথেয়তায় পাকিস্তানের মেয়েরা ও তাদের অভিভাবকরা তো মুগ্ধ বটেই। মুগ্ধ পাকিস্তানের আম জনতাও।
ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে ফের যুদ্ধ বাধবে কি না, তা নিয়ে দু’দেশেই মানুষের মধ্যে জল্পনা চলেছে বিস্তর। সেই দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যে সুষমার উদ্যোগ যেন দমকা হাওয়া। আমেরিকার ট্রয় ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আলিয়া বিদেশমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে টুইটারে বলেছেন, ‘‘ভারত বরাবর অতিথিদের ঈশ্বরের সমান মনে করে। মেয়েদের ওই দলটি নিরাপদে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আপনি মেয়ের মতো মনে করায় ওরা অভিভূত। অসংখ্য ধন্যবাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy