Advertisement
০৭ মে ২০২৪

অসমে পাঁচ নতুন জেলার ঘোষণা গগৈয়ের

৬৯ তম স্বাধীনতা দিবসে অসমবাসীকে পাঁচটি নতুন জেলা উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। আসন্ন নির্বাচনের আগে, রাজ্যবাসীকে খুশি করতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের উদাহরণ জোরদার করতে জেলার সংখ্যা ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩২ করলেন গগৈ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও ধুবুরি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

৬৯ তম স্বাধীনতা দিবসে অসমবাসীকে পাঁচটি নতুন জেলা উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।

আসন্ন নির্বাচনের আগে, রাজ্যবাসীকে খুশি করতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের উদাহরণ জোরদার করতে জেলার সংখ্যা ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩২ করলেন গগৈ। রাজ্যে বেশ কিছু নতুন মহকুমার দাবি থাকলেও, এ দিন নতুন মহকুমা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রশাসনকে মানুষের আরও কাছে নিয়ে যেতেই শোণিতপুরকে ভেঙে বিশ্বনাথ, শিবসাগরকে ভেঙে চড়াইদেও, নগাঁওকে ভেঙে হোজাই, ধুবুরিকে ভেঙে দক্ষিণ শালমারা ও কার্বি আংলংকে ভেঙে পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা গঠন করা হল।

গত বছর ডিসেম্বরে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার জন্য বিশ্বনাথ, হোজাই, দক্ষিণ শালমারা, কার্বি আংলং-এর হামরেন, যোরহাটের মাজুলি ও তিনসুকিয়ার শদিয়াকে পুলিশ জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন গগৈ। নতুন জেলা ঘোষণার পরে দক্ষিণ শালমারা-সহ বিভিন্ন প্রস্তাবিত জেলায় উৎসব পালিত হয়। মানকাচরের মানুষ দীর্ঘদিন থেকেই পৃথক জেলার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। দক্ষিণ শালমারা জেলায় গোয়ালপাড়া পূর্বের খানিকটা অংশ ও জলেশ্বর থাকবে। জেলা গঠনের পাশাপাশি গগৈ জানান, রাজ্যের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ও জরিপ সংক্রান্ত কাজ দ্রুততর করার জন্য অসম ল্যান্ড অ্যান্ড রেভেনিউ সার্ভিস নামে নতুন দফতর তৈরি করা হয়েছে।

জেলাগুলির উন্নয়নমূলক কাজ তদারকের জন্য তৈরি হল জেলা উন্নয়ন কমিশনারের পদ। ওষুধ ও খাদ্যের গুণাগুণে নজরদারির জন্যও নতুন বিভাগ গড়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গারো ও তফশিল জাতিভুক্তদের জন্য উন্নয়ন পরিষদ গড়ার পাশাপাশি, সুত, গরিয়া, মদাহি, হাজোং, কুমার, চাউডাং, বাঙালি ও হিন্দীভাষীদের

জন্য উন্নয়ন পরিষদ গড়ার কাজও দ্রুততর করা হবে। রাজ্যের ছ’টি জনগোষ্ঠীকে তফশিল উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে গগৈ বলেন, বর্তমানে তফশিল উপজাতিদের অধিকার ও সুবিধা খর্ব না করেই নতুন ছ’টি জনগোষ্ঠীকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রকে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ১১৫০ জন ক্রীড়াবিদকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পেনশন ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার করার কথাও ঘোষণা করেন। অধিকাংশ জঙ্গি সংগঠন শান্তি আলোচনায় আগ্রহ দেখানোয় খুশি গগৈ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ বুঝেছেন আর্থিক বিকাশ না হলে, লড়াই করে, অশান্তি বজায় রেখে রাজ্যের উন্নতি সম্ভব

নয়। তাই জঙ্গিরা দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছে। তাদের ভিত দুর্বল হচ্ছে। আশা করি, বাকি সংগ্রামপন্থী জঙ্গিরাও এই সত্য উপলব্ধি করে মূল স্রোতে ফিরে আসবে।’’

গগৈ বলেন, ‘‘নাগাল্যান্ডে শান্তি ফেরাবার উদ্দেশে ভারত সরকার নাগা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে তাকে স্বাগত জানালেও, চুক্তির ব্যাপারে বিশদ না জানানোয় মানুষের মনে আশঙ্কা বাড়ছে।’’ তিনি রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, রাজ্যের সাংবিধানিক সীমানায় থাকা কোনও জমি বেহাত হতে দেবেন না।

রাজ্যের সব গ্রামকে স্মার্ট গ্রাম বানাতে চান বলে জানিয়ে গগৈ বলেন, রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য যখন আরও টাকা প্রয়োজন, তখনই কেন্দ্র গত বছর থেকে কেন্দ্রীয় সাহায্য কমাচ্ছে। ফলে রাজ্য সরকারের প্রায় ৯০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজ্যের

জন্য প্রাপ্য টাকা চেয়ে ও অসমকে বিশেষ সাহায্যপ্রাপ্ত রাজ্যের তালিকায় রেখে প্রকল্প রূপায়ণে ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ দিয়ে চলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE