ছবি: পিটিআই।
রাফাল জটে সংসদে অচলাবস্থা জারি রইল আজও।
সরকার রাজি রাফাল নিয়ে আলোচনায়। বিরোধীদের দাবি, প্রস্তাব স্বাগত। কিন্তু রাফাল তদন্ত করতে হবে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-কে দিয়েই। সেখানেই যত আপত্তি নরেন্দ্র মোদীদের। শাসক শিবিরের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যেখানে রাফাল প্রশ্নে ক্লিনচিট দিয়েছে সেখানে পুনর্তদন্তের প্রশ্নই ওঠে না। সব মিলিয়ে জট না কাটায় মূলত রাফাল প্রশ্নে আজও বারবার ভেস্তে গিয়েছে অধিবেশন। সংসদ চলতে না দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। আজ মুম্বইয়ের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ভিডিয়ো আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অগণতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগুলি ধ্বংসের মুখে।’’
গত সপ্তাহে রাফাল প্রশ্নে সরকারকে স্বস্তি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু পরে সেই রায়ে ভ্রান্তি রয়েছে বলে সরকার স্বীকার করে নেয়। তারপর থেকেই সরকারকে লোকসভায় বিপাকে ফেলতে সচেষ্ট হয়েছে কংগ্রেস। গত কয়েকদিনের মতো আজও অধিবেশন শুরু হতেই রাফাল নিয়ে জেপিসির দাবিতে সরব হয় কংগ্রেস শিবির। তাদের সমর্থন করেন বাম ও ডিএমকে সাংসদেরা। যদিও তৃণমূল এ নিয়ে আগের মতোই নীরব ছিল। প্রবল হট্টগোলে অধিবেশন শুরু হওয়ার পরেই কার্যত ভেস্তে যায়। পরে বেলা বারোটায় অধিবেশন ফের শুরু হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ লোকসভাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘সরকার রাফাল-সহ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় রাজি।’’ কিন্তু কংগ্রেস জেপিসি-র দাবিতে অনড় থাকে। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জ্জুন খড়্গের কথায়, ‘‘একমাত্র জেপিসি হলেই রাফাল সংক্রান্ত ফাইল হাতে পাওয়া যাবে। চুক্তিতে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা ফাইল পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে। তাই আমরা জেপিসি-র উপরে জোর দিচ্ছি। এর আগে বফর্স বা টুজি-র সময়েও জেপিসি হয়েছিল। জেপিসি গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেই সংসদ সুষ্ঠু ভাবে চলবে। কারণ আমাদের অন্য কোনও দাবি নেই।’’
খড়্গের ওই দাবি উড়িয়ে দিয়ে সংসদীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর জানিয়েছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে রাফাল নিয়ে কোনও সংশয় নেই। তাই জেপিসির কোনও প্রয়োজন নেই।’’ সরকারের ওই বক্তব্য জানার পরেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদেরা। বেলা দু’টো পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় দিনের অধিবেশন। তবে আজ সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়া বলেন, ‘‘রাফাল বিমানের যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ওই বিমান বায়ুসেনার হাতে আসতে যে সময় লেগেছে তাতে আমাদের প্রতিবেশীরা প্রতিযোগিতায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, রাফাল প্রশ্নে কংগ্রেস যে ভাবে সুর চড়াচ্ছে, রাহুল গাঁধী ফি দিন সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছেন তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে মোদী-অমিত শাহ। বিশেষ করে পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলের পরে সেই অস্বস্তি আরও তীব্র হয়েছে। তাই গত ক’দিনের মতো আজও রাফাল প্রশ্নে পাল্টা আক্রমণ
শানাতে নামেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুম্বইয়ের বুথ কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের অভিযোগ তোলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘পছন্দ না হওয়ায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। তার আগে আদালতকে ভয় দেখাতে না পেরে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণ করার চেষ্টা করেছিল তারা।’’ দলীয় কর্মীদের মোদীর পরামর্শ, ‘‘কংগ্রেসের এ ধাঁচের অগণতান্ত্রিক মনোভাবের যোগ্য জবাব হল গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করে তোলা। কংগ্রেসের ওই চক্রান্ত সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy