E-Paper

তৃণমূলের কাছে এ বার গুরুত্ব বাড়ছে মল্লিকার্জুনের

রাজনৈতিক শিবিরে এই প্রশ্নটাও উঠছে, কর্নাটকের পরে কি কংগ্রেসের প্রতি ‘অ্যালার্জি’ বাধ্যতামূলক ভাবে কমতে দেখা যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৬:৫০
Mamata banerjee and Mallikarjun Kharge

তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের কাছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের উচ্চতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফাইল চিত্র।

কর্নাটকে বিপুল জয়ের পরে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের কাছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের উচ্চতা অনেকটাই বেড়ে গেল। ঘরোয়া ভাবে এ কথা স্বীকারও করছে তৃণমূল বা আপ-এর মতো দল, যারা রাহুল গান্ধী তথা দশ জনপথের ছড়ি ঘোরানোকে এত দিন আদৌ মেনে নেয়নি আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে। সূত্রের খবর, আগামী জুলাইয়ে শুরু হতে চলা সংসদের বাদল অধিবেশনে বিরোধীদের কক্ষ সমন্বয়ের প্রশ্নে খড়্গের নেতৃত্বকে অগ্রাহ্য করবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও আজ বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির কাছে জোট-বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, আদর্শগত ভিন্নতার কারণে কিছু আঞ্চলিক দলের সঙ্গে, কিছু রাজ্যে লোকসভায় কংগ্রেসের লড়াই হতেই পারে। কিন্তু তাদের সঙ্গে ভোট-পরবর্তী জোটের আলোচনায় বসতে কংগ্রেসের দিক থেকে কোথাও আটকাবে না। দলের নেতা কে সি বেণুগোপালের কথায়, “বিরোধী ঐক্যের জন্য আমরা পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু করব। কেরলে সিপিএম বা তেলঙ্গানায় বিআরএস-এর সঙ্গে ভোটের আগে জোট সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের সঙ্গে লোকসভা ভোটের পরে জোট হতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ভোটের আগেও নির্বাচনী জোট সম্ভব।” এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের নাম করেননি কংগ্রেস নেতা। তবে বার্তা স্পষ্ট। আবার সার্বিক বিরোধী জোটের প্রশ্নে তৃণমূলের অবস্থানও ভিন্ন কিছু নয়। দিল্লিতে তৃণমূলের সংসদীয় নেতারা বার বার বলছেন, ভোটের পরেই জোটের প্রকৃত চেহারা এবং নেতৃত্বের বিষয়টি বোঝা সম্ভব।

ওই সময়ে সকলের হাতে প্রাপ্ত সংখ্যা (আসন) থাকবে। তখন একসঙ্গে বসে আলোচনা করা যাবে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আজ কংগ্রেসের এই বার্তা থেকে স্পষ্ট যে, পশ্চিমবঙ্গে চব্বিশের লোকসভায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই হওয়ার পরেও, ফলাফল প্রকাশ হলে হাত মেলানোর পরিসর তাদের দিক থেকেও থাকছে।

রাজনৈতিক শিবিরে এই প্রশ্নটাও উঠছে, কর্নাটকের পরে কি কংগ্রেসের প্রতি ‘অ্যালার্জি’ বাধ্যতামূলক ভাবে কমতে দেখা যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের? দলীয় সূত্রেই বোঝানো হচ্ছে, রাহুল গান্ধীকে বিরোধী শিবিরের প্রধান শক্তি হিসেবে বেশি গুরুত্ব দিতে এখনও একই রকম নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।

গত কাল কর্নাটকের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর রাহুলের নাম বা তাঁর ভারত জোড়ো যাত্রার বিষয় নিয়ে মুখ খুলতেই দেখা যায়নি তৃণমূল নেত্রীকে। তবে কর্নাটকের পরে খড়্গের রাজনৈতিক গুরুত্ব যথেষ্ট বেড়েছে বলেই স্বীকার করছে তৃণমূল, এবং সেটা সংসদের অধিবেশন চলার সময়ে প্রতিফলিতও হবে। তৃণমূল শিবিরের মতে, খড়্গে দিল্লির প্রতিনিধিত্ব করেন না (অর্থাৎ তিনি রাহুল বা দশ জনপথের প্রতিভূ নন)। তিনি কর্নাটকের নেতা। স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিষয়গুলিকে সামনে নিয়ে এসে নিজের রাজ্যে তিনি বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছেন। আবার খড়্গে দলের সভাপতিও বটে।

ফলে এত দিন খড়্গের সংসদীয় অফিসে বিরোধীদের সমন্বয়ের জন্য বৈঠক ডাকা হলে তাকে কার্যত বয়কটের যে সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছিলেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতারা (শেষ অধিবেশনে অবশ্য পাঠানো হয়েছিল প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জহর সরকারকে), এ বার সেই কৌশলের পরিবর্তন হতে দেখা যাবে।

খড়্গের ডাকা বৈঠকে যেতে পারেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এর ফলে বিজেপি-বিরোধী জোটকে শক্তিশালী করার প্রশ্নে ইতিবাচক আবহাওয়া তৈরি হবে।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ এটাও মনে করেন যে, খড়্গের সবাইকে নিয়ে চলার একটা সহজাত ক্ষমতা রয়েছে। গত কাল ভোটের ফল প্রকাশের পরে কংগ্রেসের সদর কার্যালয় ২৪ আকবর রোডের বাইরে উৎসবের পরিবেশের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যানার দেখা গিয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে ‘অজাতশত্রু মল্লিকার্জুন খড়্গে’। এই বিশেষণ কতটা কার্যকরী হবে, তা অদূর ভবিষ্যৎই বলবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mallikarjun Kharge Karnataka Assembly Election 2023 TMC Congress Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy