শেষবেলায় বেঁকে বসল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যখন পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) নিয়ে সংসদে ঐকমত্য তৈরির পথে, তখন কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তরফে আপত্তি উঠতে চলেছে। তৃণমূল এত দিন জিএসটি বিলে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে এসেছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’র চেয়ারম্যান হিসেবে অমিত মিত্রকেও ইতিবাচক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। কিন্তু তিনিই কাল জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাবে আপত্তি তুলতে চলেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে।
গত মাসে কলকাতায় অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে মোটামুটি ঐকমত্য হয়েছিল যে, বছরে দেড় কোটি টাকার কম ব্যবসা করে এমন সংস্থার উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকবে শুধু রাজ্য সরকারের হাতে। ব্যবসার অঙ্ক তার বেশি হলে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই তরফেরই নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কিন্তু কেন্দ্র প্রস্তাব দিয়েছে, এমন সীমারেখার কোনও দরকার নেই। রাজ্যে জিএসটি-তে কর ফাঁকি দেখলে কেন্দ্র নোটিস পাঠাতে পারবে। আবার কেন্দ্রের জিএসটি-তে ফাঁকি ধরা পড়লে রাজ্য সরকার নোটিস পাঠাতে পারবে। নোটিস যারা পাঠাবে, তারাই নথি পরীক্ষা ও বকেয়া কর আদায় করবে। বড়-ছোট সব সংস্থার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। রাজ্য এই দাবি না মানলে কেন্দ্রের বিকল্প প্রস্তাব হল, দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা করে এমন সংস্থার নিয়ন্ত্রণ শুধু রাজ্যের হাতে ছেড়ে দিতে হলে যাদের ব্যবসার অঙ্ক দেড় কোটি টাকার বেশি, সেই সব সংস্থার উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকবে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে।
কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে আপত্তি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিতবাবুকে নির্দেশ দিয়েছেন, আগামিকালের বৈঠকে এর প্রবল বিরোধিতা করতে। কারণ, কেন্দ্রের প্রথম প্রস্তাব মানলে কেন্দ্র-রাজ্য, দুই সরকারের রাজস্ব দফতরের কাছে জবাবদিহির জন্য তৈরি থাকতে হবে ছোট ব্যবসায়ী বা শিল্প সংস্থাগুলিকে। তাতে হেনস্থার মুখে পড়বে সেগুলি। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের মতো তামিলনাড়ু, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, এমনকী গুজরাতেরও এ বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। রাজ্যগুলির আপত্তির আরও একটি কারণ হল, গত মাসে কলকাতায় অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বিলের খসড়াও অনুমোদিত হয়েছিল। এর পরে কেন্দ্র কেন রদবদল করছে!
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য দাবি, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আগামিকাল রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে জেটলির বৈঠক বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। মন্ত্রকের কর্তাদের ধারণা, পশ্চিমবঙ্গের তরফে আপত্তি উঠলেও জিএসটি-র কাজে বাধা পড়বে না। রাজ্যসভায় এখন যে বিলটি ঝুলে রয়েছে, সেটি হল জিএসটি চালু করার জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল। তাতে তৃণমূলের কোনও আপত্তি নেই। অন্যান্য আঞ্চলিক দলও তার পক্ষে। আপত্তি তুলছে একমাত্র কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। পশ্চিমবঙ্গের তরফে যে আপত্তি উঠছে, সে’টি হল জিএসটি-র মূল বিলের প্রসঙ্গে। সে’টি এখনও সংসদে পেশই হয়নি। খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy