Advertisement
E-Paper

ঘুরে দাঁড়াতে রেলের ভরসা জনতাই

রাজ্য সফরে এসে খোদ রেলমন্ত্রীই হুটহাট ট্রেনে উঠে পরিষেবা নিয়ে যাত্রিসাধারণের অভিযোগ-অনুযোগ শুনছিলেন কিছু দিন আগে। তাতে রেল-সেবার হাল কতটা ফিরেছে, ভালই জানেন ভুক্তভোগীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০৯

রাজ্য সফরে এসে খোদ রেলমন্ত্রীই হুটহাট ট্রেনে উঠে পরিষেবা নিয়ে যাত্রিসাধারণের অভিযোগ-অনুযোগ শুনছিলেন কিছু দিন আগে। তাতে রেল-সেবার হাল কতটা ফিরেছে, ভালই জানেন ভুক্তভোগীরা। রেলের লজ্‌ঝড়ে অবস্থা কী ভাবে কাটানো যায়, সেই বিষয়ে এ বার প্রস্তাব-পরামর্শ-মতামত পাঠানোর জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানাল রেল মন্ত্রক। প্রস্তাবের উৎকর্ষ বিচার করে হরেক পুরস্কারের ব্যবস্থাও থাকছে।

ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এর আগে নিজেদের কর্মীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার দ্বারস্থ হয়েছিল রেল। সংস্থার হাল ফেরাতে কী কী করা দরকার, সব জোনের রেলকর্মীদের কাছ থেকে সেই বিষয়ে প্রস্তাব-পরামর্শ নিয়েছে রেল মন্ত্রক। কর্মীদের পেশ করা শলাপরামর্শের ডালি থেকে বেশ কয়েকটি ইতিমধ্যে গ্রহণও করা হয়েছে। রেলকর্তারা জানান, ওই সব প্রস্তাব যাচাই করে সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী রূপায়ণও করা হবে। কিন্তু কর্মীদের কাছ থেকে যে পর্যাপ্ত সাহায্য আসেনি, রেলের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় এ বার সাধারণ মানুষকে সামিল করার চেষ্টায় সেটা পরিষ্কার।

গুজরাতের সুরজকুণ্ডে ২০ নভেম্বর থেকে তিন দিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সামনে রেলকর্মীরা কয়েকশো প্রস্তাব-পরামর্শ-চিন্তাভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। সেখানে গ্রহণযোগ্য অনেক কিছু মিলেছে বলেই রেলের অন্দরের খবর। তার পরেও সংস্থার হাল ফেরাতে আমজনতার প্রস্তাব বা চিন্তাভাবনার দরকার হচ্ছে কেন?

রেলকর্তাদের বক্তব্য, কর্মীরা রেলের অঙ্গ, যাত্রীরা প্রাণ। রেলের ভাল-মন্দের সঙ্গে বেশি জড়িত আমজনতাই। তাঁরাই ট্রেনের যাত্রী। রেল-সফরের দৈনন্দিন ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয় তাঁদেরই। সেই সব সমস্যার মোকাবিলার রাস্তা তাঁরাই ভাল দেখাতে পারবেন বলে মনে করছে রেল মহল। বেশির ভাগ মানুষেরই কমবেশি রেল সফরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যাত্রীরা যদি অন্তত একটি করেও নতুন প্রস্তাব, পরামর্শ বা চিন্তাভাবনার কথা জানান, তা হলেই অনেক কিছু করা সম্ভব। এই ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের কাছে রেলের প্রত্যাশা বেশি। কেননা রেলকর্তাদের বিশ্বাস, বর্তমান প্রজন্ম অনেক বেশি সংবেদনশীল। এবং নিত্যনতুন প্রযুক্তি ব্যবহারেও তাঁরা যথেষ্ট সড়গড়। সেই জন্য তাঁদের কাছ থেকে নতুন নতুন চিন্তাভাবনার দিশা পাওয়া গেলে রেলকে আরও আধুনিক করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রস্তাব-পরামর্শ বা চিন্তাভাবনার লাইনটাও মোটামুটি বেঁধে দিচ্ছে রেল। রেলকর্তারা জানান, মোট পাঁচটি বিষয় বেছে দিয়েছে রেল মন্ত্রক। ঘোষিত বিষয়গুলির উপরেই আম-আদমি নিজেদের প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। তুলে ধরতে পারবেন নতুন ভাবনার কথা। পাঁচটি বিষয় কী?

ট্রেনে কী ভাবে যাত্রী বাড়ানো সম্ভব।

নিচু প্ল্যাটফর্ম থেকে যাত্রীরা যাতে সহজে ট্রেনের কামরায় উঠতে পারেন, তার ব্যবস্থা।

নতুন নতুন পণ্য পরিবহণের জন্য নতুন ধরনের মালগাড়ির কামরা।

রেলের কাজকর্ম কী ভাবে আরও উন্নত করা যায়।

ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে কী ভাবে স্টেশনগুলিকে আরও ভাল করে সাজানো যায়, তার পরিকল্পনা।

রেল সূত্রের খবর, আমজনতার পাঠানো প্রস্তাব-পরামর্শ থেকে সেরা ছ’টি বেছে নেওয়া হবে। ছ’টি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং‌ তৃতীয় পুরস্কার প্রাপকের দেওয়া হবে যথাক্রমে ছ’লক্ষ, তিন লক্ষ এবং দু’লক্ষ টাকা। রেলের এইচটিটিপিএস:// ইনোভেট.মাইগভ.ইন ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র থেকে শুরু করে নিয়মনীতি পর্যন্ত সব কিছুই আপলোড করা আছে। আবেদনের শেষ তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭।

বিভিন্ন মহল পরিকল্পনাটিকে সাধুবাদ দিচ্ছে। তবে হাল ফেরাতে রেলকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের কাছে প্রস্তাব চেয়ে আবেদন করতে দেখে রেলেরই একাংশের প্রশ্ন, চিন্তাভাবনাটা যদি বাইরের লোকের কাছ থেকেই ধার করতে হয়, তা হলে আর রেল বোর্ডের আর প্রয়োজন কী!?

Railway Passengers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy