দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নন্দিনী সুন্দর। ছবি: সংগৃবীত।
ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই গত সপ্তাহে খুন হতে হয় শ্যামনাথ বাঘেলকে। এ বার সেই খুনের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ দিল্লি এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল।
শুধু খুনের মামলাই নয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নন্দিনী সুন্দর এবং জেএইউ-এর অধ্যাপক অর্চনা প্রসাদ-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন নন্দিনী। তাঁর দাবি, পুলিশ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু, কেন? জবাবে ওই অধ্যাপক জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মামলায় সরব হয়েছিলেন। তারই বদলা নিতেই পুলিশ এমনটা করছে।
গত শুক্রবার ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় শ্যামনাথ নামের ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করা হয়। অভিযোগের আঙুল ওঠে মাওবাদীদের দিকে। ঘটনার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী। ওই এফআইআর-এ নন্দিনী এবং অর্চনার নাম উল্লেখ করা হয়। ওই দু’জন ছাড়াও সমাজকর্মী বিনীত তিওয়ারি ও সিপিআই (মাওবাদী) নেতা সঞ্জয় পারাতের নামও এফআইআর-এ রয়েছে। ছত্তীসগঢ় পুলিশের আধিকারিক এসআরপি কাল্লুরি জানিয়েছেন, এফআইআর-এর ভিত্তিতে ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে খুন ছাড়াও ষড়যন্ত্র ও দাঙ্গা বাঁধানোর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাইপুর থেকে সাড়ে চারশো কিলোমিটার দূরে নিজের গ্রামেই খুন হয়েছিলেন শ্যামনাথ। রাতের অন্ধকারে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে মাওবাদীরা। সেখানেই কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাওবাদী প্রভাবিত ওই এলাকায় গত এপ্রিলে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন শ্যামনাথ। মাওবাদীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এলাকায় আন্দোলন চালাচ্ছিলেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা। এফআইআর-এ শ্যামনাথের স্ত্রী অভিযোগ করেন, ওই সংগঠন গড়ে তোলার পর থেকেই মাওবাদীরা খুনের হুমকি দিতে শুরু করে। পুলিশের দাবি, গ্রামবাসীরা তাদের জানিয়েছেন, এ বছরের মে মাসে শ্যামনাথদের গ্রামে গিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন নন্দিনী। এমনকী, মাওবাদীদের সমর্থনের এগিয়ে আসতেও অনুরোধ করেন তিনি। ওই সময় নন্দিনী নিজেকে রিচা যাদব নামে পরিচয় দিয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি। এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন শ্যামনাথ। নন্দিনী যদিও ওই গ্রামে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেননি। কিন্তু তাঁর পাল্টা দাবি, পাঁচ মাস আগে একটি গ্রামে যাওয়ার সহ্গে এই খুনের কী সম্পর্ক থাকতে পারে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তাঁর মতে, পুলিশের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পুলিশ যদিও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেএনইউ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে এই অবিযোগের কথা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন
পিছু হটল সরকার, এনডিটিভির উপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy