Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৩
জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড

ক্ষমা চান মে, প্রস্তাব পেশ ভারতীয় এমপি-র

এ বার ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ লেবার এমপি চাইছেন, জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। 

সে দিনের জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড। ছবি: সংগৃহীত

সে দিনের জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন। ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। পঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালা বাগে নিরস্ত্র বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ভারতীয়দের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ সেনার তৎকালীন সাময়িক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড এডওয়ার্ড হ্যারি ডায়ার। ব্রিটিশ সেনা সে দিন ৩৭৯ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর হিসেব দিলেও বেসরকারি ভাবে নিহতের সংখ্যাটা ছিল হাজারেরও উপর। এই ঘটনার পরে ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশেই ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ডায়ারকে। তখন তো বটেই, তার পরেও একাধিক বার এই হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করেছে ব্রিটিশ সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও দিন এই হত্যালীলার জন্য ক্ষমা চাননি সরকারের কোনও প্রতিনিধি। কিন্তু এ বার ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ লেবার এমপি চাইছেন, জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে।

আরও পড়ুন: লক্ষ লক্ষ অকালমৃত্যু স্রেফ দূষণে! তালিকায় সবচেয়ে উপরে ভারত

বীরেন্দ্র শর্মা। ব্রিটেনের সবচেয়ে সিনিয়র এই লেবার এমপি এই সপ্তাহের গোড়ায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি ‘আর্লি ডে মোশন’ (ইডিএম) বা প্রস্তাব পেশ করেছেন। তাঁর

দাবি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মে গোটা ঘটনার জন্য ভারতীয়দের কাছে ক্ষমা চান। ‘জালিয়ানওয়ালা বাগ ম্যাসাকার অব ১৯১৯’ নামে ওই ইডিএমে ইতিমধ্যেই পাঁচ জন ব্রিটিশ এমপি সই করেছেন। নির্দিষ্ট কোনও বিষয়ে সরকারের নজর টানতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, হাউস অব কমন্সে সাধারণত এই ইডিএম পেশ করা হয়।

ইলিং সাইথহলের লেবার নেতা বীরেন্দ্রের কথায়, ‘‘এই ঘটনা ব্রিটিশদের ভারত শাসনের ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মনে করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের পরেই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন আরও গতি পেয়েছিল। আমি চাই, এই বর্বরোচিত হত্যালীলাকে ব্রিটেনবাসী যেন ভুলে না যান।’’ আর দু’বছর পরেই জালিয়ানওয়ালা বাগ কাণ্ডের শতবর্ষ। বীরেন্দ্রের আনা ইডিএমে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের উচিত এই ঘটনাকে স্মরণ করে শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতি বছর এই দিনটাকে পালন করা। বীরেন্দ্রের আরও বক্তব্য, ব্রিটিশ স্কুল পড়ুয়ারাও যাতে এই নিন্দনীয় ঘটনার কথা জানতে পারে, তার জন্য দেশের ইতিহাস বইতেও ব্রিটিশদের ভারত শাসনের অধ্যায়ে এই ঘটনার উল্লেখ থাকাটা দরকার। ব্রিটিশ সরকার যে এখন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সমর্থন করে, সে কথাও অবশ্য জানাতে ভোলেননি বীরেন্দ্র।

২০১৩ সালে ভারতে গিয়েছিলেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সে বার জালিয়ানওয়ালা বাগের শহিদ বেদীতে ফুল রেখে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘লজ্জাজনক’ বললেও ক্ষমা চাওয়ার রাস্তায় হাঁটেননি তিনি। টেরেসা মে কী করেন, এখন দেখার সেটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE