অসম আন্দোলন দেখিনি। কিন্তু গুয়াহাটির রাস্তার এমন চেহারা দেখেছিলাম ২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পরে। জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, আতঙ্কে অগ্নিগর্ভ হয়েছিল গুয়াহাটির রাস্তাঘাট। কিন্তু নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আজ যে চেহারা নিল শহর, তা এক দশকে নজিরবিহীন বলে জানাচ্ছেন এখানকার শান্তিকামী বাসিন্দারাই। তাঁরা এ-ও বলছেন, ছাত্র নেতা, কৃষক নেতারা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। অথচ আজ শহরের অবস্থা দেখিয়ে দিল, নেতৃত্বহীন আন্দোলন লাগামছাড়া হলে কী হতে পারে!
আজ ছিল বিয়ের তারিখ। দু’টো নিমন্ত্রণ ছিল। আমাদের অফিস শান্ত এলাকা উলুবাড়িতে। সকালে ভেবেছিলাম, বড় রাস্তাগুলো বন্ধ হলেও গলি দিয়ে যাওয়া যাবেই। কিন্তু রাজ্যসভায় আলোচনা যত এগিয়েছে, ততই উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। বিক্ষোভের পুরোভাগে ছাত্রছাত্রীরা। তাই পুলিশ কড়া হতে পারছিল না। বিভিন্ন স্থানে পরিচয়পত্র দেখে, নাম-পদবি যাচাই করে হেনস্থা চলছিল।
এক সহকর্মীর সঙ্গে গাড়িতে বেরিয়েছিলাম অবস্থা দেখতে। দেখলাম, আন্দোলনকারী যুবকেরা হাতের কাছে যা পাচ্ছে রাস্তায় টেনে ফেলছে, ভাঙছে। উলুবাড়ির রাস্তায় প্লাস্টিক ডিভাইডারগুলো টেনে এনে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হল হঠাৎ। জ্বলে উঠল আগুন। রিপোর্টার বলে লাভ হল না। গাড়ি ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে বেরোনোর চেষ্টা হল। ততক্ষণে সেই রাস্তায় জড়ো হয়েছে প্রতিবাদীর দল। ফের জ্বলল আগুন। গাড়ি লক্ষ্য করে উড়ে আসতে লাগল বাঁশ, পাথর। আমাদের গাড়ির সামনেই দুটো গাড়ি ভাঙা হল। কোথাও নজরে পড়ল না পুলিশ। কোনও মতে গাড়ি ঘুরিয়ে অফিসে ফিরলাম।