উর্দু লেখকদের মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে, তাঁদের বইয়ে দেশবিরোধী কথা নেই। তবেই সেই বই কিনবে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা উর্দু ভাষা উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় পরিষদ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। অসহিষ্ণুতা বিতর্কে ফের জড়িয়ে গিয়েছে স্মৃতি ইরানির মন্ত্রক। উর্দু ভাষা উন্নয়ন পরিষদ জানাচ্ছে, তাদের কেনা বই যাতে ঐক্যের বার্তা দেয় সে জন্যই ওই মুচলেকা দেওয়ার ব্যবস্থা।
বেশি পরিমাণে বিক্রির জন্য সরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হন নানা ভাষার লেখকেরা। উর্দু লেখকেরা বই পাঠান উর্দু ভাষা উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় পরিষদে। সম্প্রতি সেই পরিষদের তরফে একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছে লেখকদের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহনাজ নবিও হাতে পেয়েছেন সেটি। শাহনাজ জানাচ্ছেন, একটি নিবন্ধের বই পাঠিয়েছিলেন কাউন্সিলে। বইটি গৃহীত হয়েছে, এই মর্মে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই চিঠি পান তিনি। বিশেষ এই ফর্মটিও তখনই হাতে পান। ফর্মে জানাতে হবে, বইয়ে দেশ বা সরকার বিরোধী এবং বিভেদমূলক কোনও বক্তব্য নেই। দু’জন সাক্ষীর সইও চাওয়া হয়েছে কাউন্সিলের তরফে। শাহনাজের কথায়, ‘‘এ তো লেখকের বাক্-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ! চূড়ান্ত অপমান।’’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগও আনেন তিনি।
শাহনাজের মতে, ‘‘খুব খারাপ অবস্থা উর্দু সাহিত্যের। লেখকদের হাতেও টাকা নেই। এরই সুযোগ নেওয়া চলছে।’’
কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহের মতে, ‘‘এমন মুচলেকা চালু হলে তা সব ভাষার লেখকদের জন্যই বাধ্যতামূলক করা উচিত। শুধু উর্দু লেখকদের নিশানা করা হচ্ছে কেন? এতেই বোঝা যাচ্ছে বিজেপি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছে।’’
উর্দু উন্নয়ন পরিষদের অধিকর্তা ইরতেজা করিম স্পষ্টই জানাচ্ছেন, তাঁদের কেনা বই যাতে ঐক্যের বার্তা দেয় তা নিশ্চিত করতেই ওই ফর্ম চালু করা হয়েছে। কারণ, গত বছরে একটি বইয়ে তথ্য বিভ্রান্তি রয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছিল কাউন্সিল। তা ছা়ড়া অন্য সমস্যাও আছে। করিম জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে এক লেখকের নামে অন্য লেখকের বই কাউন্সিলে জমা প়ড়ে। ফলে আইনি সমস্যা দেখা দেয়। তাই ওই ফর্মের মাধ্যমে দায় লেখকদের উপরেই চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাউন্সিল। তবে ফর্মটি বেশ কিছু দিন ধরেই চালু রয়েছে বলে দাবি করেছেন করিম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy