Advertisement
E-Paper

ভোট-আশ্বাসে ভুলতে নারাজ করিমগঞ্জ

নির্বাচনের সময় এগোলেই করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজে তৈরির আশ্বাস ছড়ান রাজনৈতিক নেতারা। তার অন্যতম উদাহরণ মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বেসরকারি একটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর নির্বাচন সমষ্টি এরালিগুলে মেডিক্যাল কলেজের জায়গা ঠিক করতে পরিদর্শন করেছিলেন সিদ্দেক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০২:৫২

নির্বাচনের সময় এগোলেই করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজে তৈরির আশ্বাস ছড়ান রাজনৈতিক নেতারা।

তার অন্যতম উদাহরণ মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বেসরকারি একটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর নির্বাচন সমষ্টি এরালিগুলে মেডিক্যাল কলেজের জায়গা ঠিক করতে পরিদর্শন করেছিলেন সিদ্দেক। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাঁচ বছরে সেই কাজ একটুকুও এগোয়নি। এ বার ফের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একই ভাবে করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ তৈরিতে উদ্যোগী হলেন শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী। তবে জায়গাটা বদলে গিয়েছে। এরালিগুল নয়, দক্ষিণ করিমগঞ্জের বেড়াজাল এলাকায় মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করতে চাইছেন সিদ্দেক।

গত নির্বাচনের আগে এরালিগুলে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির আশ্বাস দেওয়া হলেও, এখনও কাজ কেন এগোল না? এরালিগুলের পরিবর্তে কেন বেড়াজালকে বেছে নিলেন সিদ্দেক? এ সব প্রশ্নের কোনও জবাব মেলেনি।

বিরোধীদের বক্তব্য, নিজের সমষ্টির উন্নয়ন দূরের কথা, সেখানে কোনও প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলতে পারেননি সিদ্দেকবাবু। ভোট টানতে রাজনৈতিক চমক দেখাতেই তিনি ফের মেডিক্যাল কলেজ তৈরির আশ্বাস দিচ্ছেন। এ নিয়ে সিদ্দেক বলেন, ‘‘করিমগঞ্জ অপেক্ষাকৃত ভাবে অনগ্রসর। এই জেলার পাশেই রয়েছে ত্রিপুরা, মিজোরাম। তাই করিমগঞ্জে আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হলে আশপাশের রাজ্য এমনকী বাংলাদেশের রোগীরাও সেখানে চিকিৎসা করাতে পারবেন।’’

বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তিনি কেন করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির উদ্যোগ নেন কেন? মন্ত্রীর জবাব, ‘‘এরালিগুলে মেডিক্যাল কলেজ গড়তে অসম সরকারের কাছ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা চেয়েছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। রাজ্য সরকার তাতে আগ্রহ দেখায়নি।’’ সিদ্দেকের দাবি, তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা করিমগঞ্জে এসে জানিয়েছিলেন, সরকারি উদ্যোগে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। হিমন্ত দলত্যাগ করেছেন। পুরনো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার কেউ নেই। সিদ্দেক এ বার তাই চাইছেন দক্ষিণ করিমগঞ্জের বেড়াজালে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করতে।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বেসরকারি একটি ঠিকাদার সংস্থার চার সদস্যের প্রতিনিধিদল ওই জায়গাটি পরিদর্শন করেছে। সিদ্দেক নিজে সেখানে হাজির ছিলেন। ওই সংস্থা সেখানে ‘মেডিসিটি’ তৈরি করতে চাইছে। অর্থাৎ মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি সেখানে অন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। সে জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করতেও রাজি ওই সংস্থা।

সিদ্দেক বলেন, ‘‘করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, সব রকম ভাবে সাহায্য করবেন।’’ বিরোধী শিবিরের একাংশের বক্তব্য, ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কথা ফের তুলবেন সিদ্দেক। জনসভায় তার বদলে ভোট চাইবেন। বিরোধীরা বলছেন, করিমগঞ্জের মতো অনুন্নত এলাকায় ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ‘মেডিসিটি’ তৈরির পরিকল্পনা শুধু ভোটের জন্য করা হচ্ছে। অসম প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র শিপ্রা গুণ বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক চাল। ভোটারদের টানতেই এ সব কথা বলা হচ্ছে। ভোট গেলে মেডিক্যাল কলেজও করিমগঞ্জ থেকে চলে যাবে।’’

পূর্ত বিভাগের পরিষদীয় সচিব মণিলাল গোয়ালার সমষ্টিতে একই কারণে সড়ক অবরোধ করলেন এলাকার জনগণ। ৫ বছর পরও আছিমগঞ্জ-আনিপুর পূর্ত সড়ক সংস্কার না হওয়ায় অবরোধ করেন এলাকাবাসী। আজ সকালে আছিমগঞ্জে অবরোধ করেন মুসলিম ছাত্র সংগঠন। সংগঠনের সদস্যরা জানান, ভোটে জিততে আনেক প্রতিশ্রুতি দেন নেতারা। কিন্তু ৫ বছরে রাস্তার মেরামতিটুকু করতে পারেন না। করিমগঞ্জ জেলার জাতীয় সড়ক, পূর্ত সড়কের অবস্থা বেহাল। আছিমগঞ্জ থেকে আনিপুর পর্যন্ত রাস্তার অবস্থাও করুণ।

সম্প্রতি জলসেচ বিভগের মন্ত্রী চন্দন সরকার করিমগঞ্জে এসেছিলেন। জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্য তিনি আছিমগঞ্জের পূর্ত সড়ক দিয়ে শিলচরে গিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রীর কনভয় আছিমগঞ্জে রাস্তার গর্তে ফেঁসে যায়।

৫ বছর ধরে পূর্ত বিভাগের পরিষদীয় সচিব মণিলাল গোয়ালা যেখানে সড়কের হাল ফেরাতে পারেননি, সেখানে নির্বাচনের আগে সড়ক সংস্কার হবে না বুঝে আন্দোলনে এগোন আছিমগঞ্জ এলাকার জনগণ। অবরোধের জেরে আছিমগঞ্জ, দুল্লভছড়া, রামকৃষ্ণনগরের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আছিমগঞ্জ পাথারকান্দি বিধানসভার অন্তর্গত হলেও রামকৃষ্ণনগর, দুল্লর্ভছড়া রাতাবাড়ি বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধায়ক কৃপানাথ মালা কংগ্রেস ত্যাগ করার ফলে তাঁর বিধায়ক পদ বাতিল হয়ে যায়। আর তাতে সমষ্টির উন্নয়ন থমকে গিয়েছে।

voters assurance political parties
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy