Advertisement
E-Paper

বাঙালির নতুন ‘পশ্চিমে’ বাড়ছে উৎসবের আলো

সাবেকি ‘পশ্চিম’ তার জৌলুস হারাচ্ছে। প্রবাসীদের হাত ধরে পুজোর রমরমা বাড়ছে নতুন ‘পশ্চিমে’! এক সময় বাঙালির পশ্চিম বলে পরিচিত মধুপুরের দুর্গাপুজো ছিল জাঁকজমকে ভরা। সে সময় পুজোর ছুটিতে হাওয়া বদলাতে মধুপুরে পাড়ি দিতেন ফিল্মি তারকা, নামী গাইয়েরাও।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৪
ঢাকের তালে। দক্ষিণ দিল্লির সফদরজঙ্গের মাতৃমন্দিরের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। সেখানেই ঢাক বাজাচ্ছেন তাঁরা। — নিজস্ব চিত্র

ঢাকের তালে। দক্ষিণ দিল্লির সফদরজঙ্গের মাতৃমন্দিরের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। সেখানেই ঢাক বাজাচ্ছেন তাঁরা। — নিজস্ব চিত্র

সাবেকি ‘পশ্চিম’ তার জৌলুস হারাচ্ছে। প্রবাসীদের হাত ধরে পুজোর রমরমা বাড়ছে নতুন ‘পশ্চিমে’!

এক সময় বাঙালির পশ্চিম বলে পরিচিত মধুপুরের দুর্গাপুজো ছিল জাঁকজমকে ভরা। সে সময় পুজোর ছুটিতে হাওয়া বদলাতে মধুপুরে পাড়ি দিতেন ফিল্মি তারকা, নামী গাইয়েরাও। হাওয়া বদলের মধুপুরের এখন নিজেরই ‘হাওয়া’ বদলে গিয়েছে। বাঙালি চেঞ্জার তো দূর, মধুপুরের ছেড়ে পালাচ্ছে প্রবাসী বাঙালিদের নব্য প্রজন্মও। তার সঙ্গে সঙ্গেই জৌলুস হারাচ্ছে মধুপুরের সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের ৯১ বছরের পুরনো পুজো। আর বাঙালির নতুন ‘পশ্চিম’ মুম্বই, চণ্ডীগড়, বেঙ্গালুরুতে প্রতি বছরই বাড়ছে দুর্গাপুজোর রেওয়াজ।

‘কল্লোল’ নাটকের দলের হাত ধরে ৫২ বছর আগে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল মুম্বইয়ের পশ্চিম গোরেগাঁওয়ে। এ বার সেখানে মণ্ডপ সেজে উঠছে যামিনী রায় ঘরানার ছবি দিয়ে। প্রতিমা থাকছেন সাবেকি রূপে। পুজোর দিনগুলিতে দুপুরে থাকছে ভোগের ব্যবস্থা। পুজোকর্তা উৎপল চৌধুরী বলছেন, ‘‘নাটকের দল দিয়ে কল্লোলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখনও দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজোয় নাটকের আসর বসে।’’

পওয়াইয়ের বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পুজোর মণ্ডপ এ বার বিবেকানন্দ রকের আদলে। বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে যাত্রাপালার আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। থাকছে রোল, মোগলাই পরোটার মতো ‘পুজোর খাবারের’ দোকানও। সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে তালসারির গ্রামে পানীয় জল পৌঁছনোর ভার নিয়েছে পুজো কমিটি।

পওয়াই সর্বজনীনের পুজোয় প্রবাসী সন্তানদের বাবা-মায়ের একাকীত্ব নিয়ে ‘জনক-জননী’ থিম তৈরি হয়েছে। কলকাতার বনেদি বাড়ির আদলে তৈরি মণ্ডপ উদ্বোধন করবেন বৃদ্ধাশ্রমের ১০০ জন আবাসিক। এসি বাসে চাপিয়ে তাঁদের মুম্বইয়ের পুজো দেখানোর বন্দোবস্তও করেছেন উদ্যোক্তারা। মণ্ডপ চত্বরের মুক্ত মঞ্চে নিজেদের প্রতিভা দেখাবেন প্রবীণেরা। ৮ বছর ধরে নবি মুম্বইয়ে পুজো করছে বঙ্গ সম্মিলনী সামাজিক সংস্থা। এ বছর রথের আদলে মণ্ডপ। রাজবাড়ির আদলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ম়ঞ্চ। সপ্তমী থেকে নবমী, দুপুরে থাকছে ভোগের ব্যবস্থাও।

চণ্ডীগড়ের বঙ্গভবনে আয়োজিত বঙ্গীয় সাংস্কৃতিক সম্মিলনী পুজোর সম্পাদক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ষষ্ঠীতে আগমনী গান, সপ্তমী-অষ্টমী নিজেরাই নাটক করবেন। রোজ দুপুরে থাকছে খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি, পায়েসের আয়োজন। প্রতিমা তৈরির দায়িত্বে বাঙালি শিল্পী খোকন অধিকারী।

আইটি প্রজন্মের বাঙালির ঠিকানা বেঙ্গালুরুতে গত বছর পর্যন্ত প্রায় ৯০টি পুজো হয়েছিল। এ বারে সেই তালিকায় নয়া সংযোজন শারজাপুরের সুকৃতি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন। ১০ বছরে পা দিয়ে উত্তর বেঙ্গালুরুর আরটি নগর তুলে ধরছে দশমহাবিদ্যার থিম। পুজোর দুপুরে লুচি, ভাত, খিচুড়ি, পোলাওয়ের মতো বাঙালি খাবারের আয়োজন থাকছে। দশমীতে আলসুর লেকে বিসর্জন শেষে মাংস-ভাত দিয়ে পেটপুজোর ব্যবস্থা। নব্য প্রজন্মের চাহিদা মেনে পুজোয় রয়েছে বাংলা ব্যান্ডের শো-ও!

নতুন ‘পশ্চিমের’ কাছে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়ছেন না শুভেন্দু দাঁ, মৃত্যুঞ্জয় সিংহের মতো মধুপুরের বাঙালিরা। প্রতি বছরের মতো এ বারও সাবেকি প্রতিমা তৈরি হয়েছে। রীতি মেনে দেবীর ভোগে থাকছে সোনামুগ ডালের খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, ফুলকপির তরকারি, গোরুর দুধের পায়েস। রাতে দেবী খাবেন লুচি, হালুয়া, বোঁদে। পুজোর দিনগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাতবেন সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

mumbai durga puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy