সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপড়েনে সাফল্য পেল ভারত। জম্মু ও কাশ্মীরে বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার উপরে কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে নামে দু’টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ছে ভারত। দ্রুত এগোচ্ছে তার কাজও। কিন্তু এতে সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন হচ্ছে, এই যুক্তিতে শুরু থেকেই ওই প্রকল্পগুলির বিরোধিতা করে পাকিস্তান। আজ ওয়াশিংটনে দু’দেশের বৈঠকের পরে ভারতকে ওই দু’টি প্রকল্প গড়ার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
টানা ৯ বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না, এই শর্তও ছিল চুক্তিতে। কিষেণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্প গড়ে ভারত জল আটকে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা দেখা দেয় পাকিস্তানে। দু’দেশের সাম্প্রতিক টানাপড়েনের সময়ে জলচুক্তি নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছিল ভারত।
এই বিষয়ে পাকিস্তান বিশ্ব ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল গত বছরই। তাদের অভিযোগ ছিল, কিষেণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নকশায় ত্রুটি রয়েছে। ফলে সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। বিষয়টি মেটাতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে সালিশি আদালত গড়ার আর্জি জানায় পাকিস্তান। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞকে দিয়ে প্রকল্পের নকশা পরীক্ষা করানোর আর্জি জানায় ভারত। বিশ্ব ব্যাঙ্ক দু’দেশের আর্জিই মেনে নেয়। কিন্তু সালিশি আদালত নিয়ে ভারতের আপত্তিতে দু’টি প্রক্রিয়াই থমকে যায়।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস বিধায়কদের ‘আগলে’ রাখা মন্ত্রীর বাড়িতে আয়কর হানা
এর মধ্যেই চলতি বছরের মার্চে পাকিস্তানে স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের বৈঠকে ওই দু’টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এর পরেই বিশ্বব্যাঙ্ক আলাদা ভাবে দু’দেশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু তাতেও কোনও সমাধান হয়নি।
আজ ওয়াশিংটনে সচিবস্তরে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে ভারত ও পাকিস্তান। এই আলোচনাতেও লাভ কতটা হবে তা নিয়ে সন্দিহান ছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই। কিন্তু বৈঠকের পরে বিশ্ব ব্যাঙ্ক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভারত চুক্তির শর্ত মেনে কিষেণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্প তৈরি করতে পারে। পাকিস্তান কোনও নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই বিতস্তা, চন্দ্রভাগা ও সিন্ধুর জল ব্যবহার করতে পারবে। সেপ্টেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে ফের বৈঠকে বসার কথা দু’দেশের প্রতিনিধিদের।