বুলন্দশহর কাণ্ডে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ইস্তফার দাবি তুললেন দেশের ৮৩ জন শীর্ষস্থানীয় প্রাক্তন আমলা। তবে পুলিশ ইন্সপেক্টর হত্যার তদন্তে তাঁর অনীহা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও হেলদোল নেই মুখ্যমন্ত্রীর। বুলন্দশহর নিয়ে আজ উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ও বিধান পরিষদের অধিবেশন উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘ওই ঘটনা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অঙ্গ। রাজনীতিতে জমি হারিয়েছে যারা, তারাই চক্রান্ত করেছে।’’ যোগী বলেন, ‘‘যে ভাবে তদন্ত হচ্ছে, তাতে আমাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে কেউ কেউ অযথা সরকারের সমালোচনা করছেন।’’
৩ ডিসেম্বরের সংঘর্ষের ঘটনাকে এর আগে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন যোগী। তিনি আজ নতুন করে চক্রান্তের তত্ত্ব সামনে আনায় বিজেপি-বিরোধী দলগুলি তীব্র আপত্তি তুলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যোগী ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে প্রাক্তন আমলাদের খোলা চিঠি। তাঁরা অভিযোগ এনেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সংঘর্ষের ঘটনার তাৎপর্য ও সাম্প্রদায়িক দিকটি বুঝতে চাইছেন না। ইনস্পেক্টর সুবোধকান্ত সিংহের হত্যায় অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার কোনও উদ্যোগ দেখাচ্ছেন না তিনি। বরং ওই ঘটনার আগে ঘটে যাওয়া গো-হত্যার বিষয় নিয়েই তদন্ত করতে তৎপর প্রশাসন।
মোদী সম্পর্কে প্রাক্তন আমলাদের ক্ষোভ, সংবিধানকে নিয়ে যোগী যখন ছেলেখেলা করছেন, তখন নীরবতার পথ বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে সই করেছেন শিবশঙ্কর মেনন, শ্যাম শরণ, সুজাতা সিংহ, জহর সরকার, অর্ধেন্দু সেন, শিবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন আমলারা। চিঠিতে অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে চাপে রাখতেই বুলন্দশহরে হিংসা ছড়ানো হয়েছে। দেশের সংবিধানের মূল সুরকে ধ্বংস করতে বিভেদের এই রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন প্রাক্তন আমলারা। বুলন্দশহরের ঘটনায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট যাতে নিজেই বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়, সেই আর্জি জানানো হয়েছে।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই বুলন্দশহরের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৪ জন অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়ানোর ব্যবস্থা করতে চলেছে যোগী সরকার। পুলিশ জানাচ্ছে, এরা নির্দোষ। সারফুদ্দিন, সাজিদ আলি, বান্নে খান ও আসিফকে ৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বজরং দলের কর্মী যোগেশ রাজের এফআইআরে সারফুদ্দিন ও সাজিজ আলির নাম ছিল। তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বান্নে খান ও আসিফকে গ্রেফতার করা হয়। ১৭ দিন হেফাজতে রাখার পরে পুলিশ আজ জানিয়েছে, সে দিন পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে ‘নিরপেক্ষ’ তদন্তে দেখা গিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় এরা যুক্ত ছিল না। আদালতের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে এদের মুক্তি দেওয়া হবে। গত কালই গো-হত্যার ঘটনা নিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy