কাজের সূত্রে কেরলে গিয়েছিলেন বাঁকুড়ার ছাতনার দুই যুবক। বন্যার বাড়াবাড়ির পরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যখন রাতের ঘুম উড়েছে পরিজনদের, তখনই এল ফোন। জানা গেল, ছেলেরা সাঁতরে আশ্রয় নিয়েছেন পেরুমবাভুর থানা এলাকার টিলায়। ছিলেন মুর্শিদাবাদের এক যুবকও। জ্বর আসায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। পুলিশ দাবি করেছে, প্রায় তিন হাজার বাঙালিকে উদ্ধার করে ত্রাণ-শিবিরে রাখা হয়েছে। ওই এলাকায় আপাতত কোনও বাঙালির নিখোঁজ থাকার খবর নেই।
ছাতনার সুয়ারাবাকরা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকদের নাম অভিজিৎ মণ্ডল এবং রামশঙ্কর মণ্ডল। বছর চব্বিশের রামশঙ্কর এক বছর ধরে কেরালার এর্নাকুলামে একটি ফলের বাগানে কাজ করছেন। মাস তিনেক আগে সে কাজেই বছর আঠারোর অভিজিৎকে সেখানে নিয়ে যান। পেরুমবাভুর থানা এলাকারই চুংডাকুড়িতে ছ’জন শ্রমিক মিলে মেসে থাকতেন। রামশঙ্কর শনিবার ফোনে বলেন, ‘‘১৫ অগস্ট জল খুব বেড়ে গিয়েছিল। মেসের সব ভেসে যায়। সবাই গামছা পরে সাঁতরে মামনজোড় টিলায় গিয়ে উঠি।’’ টিলার উপরে মামনজোড়ে গ্রামে রামশঙ্করের চেনা কয়েক জন থাকেন। তাঁদের বাড়িতেই আশ্রয় নেন ওই যুবকেরা। ‘নেটওয়ার্ক’-সমস্যার জন্য বাড়িতে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা।
অভিজিতের বাবা কিরীটী মণ্ডল এবং রামশঙ্করের বাবা নরেন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, শুক্রবার রাতে ছেলেদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। খবর পেয়েই ছাতনা থানায় যোগাযোগ করেন তাঁরা। শনিবার পুলিশ বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে গিয়েছে। রামশঙ্কর জানান, তাঁরা পরিচিতের বাড়িতেই রয়েছেন। শুধু খাওয়াদাওয়া করছেন ত্রাণ-শিবিরে।
ওই দু’জনের সঙ্গে ছিলেন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার চকরমপুরের রাহুল মণ্ডল নামে এক যুবকও। এ দিন তিনি ফোনে বলেন, ‘‘জ্বর হয়েছে বলে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। তবে আগের থেকে ভাল আছি।’’ বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, ‘‘জেলার কত জন কেরলে রয়েছেন, সেটা জানার চেষ্টা করছি। কেউ কোথাও আটকে থাকলে, পরিজনেরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা রাজ্য সরকারকে জানাব।’’