রাজ্যের নেতারা চান একলা চলতে। আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ইচ্ছে জোট। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়খণ্ডের জন্য রণকৌশল তৈরির সময় বিজেপি-র অন্দরেও কংগ্রেসের মতোই শুরু হয়েছে গৃহবিবাদ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধিতাও শুরু হয়েছে প্রকাশ্যে। যদিও জোট অনির্বায বলেই এখনও পর্যন্ত খবর।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থী তালিকা এবং নির্বাচনী কৌশল তৈরি করতে ঝাড়খণ্ডের সিংহভাগ বিজেপি নেতাই এখন দিল্লিতে। শনিবার বিকেলে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতাদের ডাকে দিল্লি পৌঁছেছেন অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (আজসু) নেতা সুদেশ মাহাতোও। তাঁর দলের সঙ্গে জোটের কথা চলছে বিজেপির। রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুদেশ বরাবরই এনডিএ জোটে থেকেছেন। রাজ্য বিধানসভাতেও তিনি কংগ্রেস-জেএমএম জোট সরকারের বিরোধী আসনেই বসেছেন। তবে লোকসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপি-র সঙ্গে
জোট ভেঙেই তিনি নিজে প্রার্থী হন রাঁচিতে। বেশ কয়েকটি আসনেও প্রার্থী দেয় আজসু।
বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যসভার এক সাংসদের উদ্যোগেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আজসুর সঙ্গে জোটের বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। শনিবার রাতে সুদেশের সঙ্গে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আলোচনায় বসবেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে বিরোধিতা করার জন্য সুদেশকে জোটের শরিক করার সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না ঝাড়খণ্ডের অনেক প্রবীণ বিজেপি নেতা।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধিতা করে রাঁচির বিজেপি সাংসদ রামটহল চৌধুরি আজ দলীয় বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে সোজা রাঁচি ফিরে আসেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “রাজ্যসভার এক সাংসদকে হাত করে ওই লোকটি (সুদেশ) জোটে আসতে চাইছে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ক্ষতি করতে চেয়েছিল ও। ওকে সঙ্গে নিলে আমাদের ক্ষতি হবে।” তাঁর বক্তব্য, “এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ওই লোকটিকে আমাদের কোনও প্রয়োজন নেই। সারা বছর যাঁরা পার্টির হয়ে খাটলেন, তাঁদের দল এখন ভুলে যাচ্ছে!” উল্লেখ্য, রাঁচিতে রামটহলের বিরুদ্ধেই সুদেশ প্রার্থী হয়েছিলেন।
রাজ্যের জন্মের পর থেকে ঝাড়খণ্ডে স্থায়ী কোনও সরকার হয়নি। বিজেপি যত বার জোট সরকার করেছে, তার মধ্যে দু’বার সুদেশের সমর্থন পেয়েছে তারা। বিনিময়ে সুদেশ একবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং একবার উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ফলে তাঁকে সুযোগ-সন্ধানী নেতা হিসেবেই দেখেন রাজ্যের অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে, কেন সুদেশ? রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, “রাজ্য নেতৃত্বের অধিকাংশ নেতাই ওঁকে চান না। কিন্তু সুদেশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠক যিনি করাচ্ছেন, তিনি রাজ্য নেতাদের অনেকের থেকে বেশি শক্তিশালী। ফলে না চাইলেও এই সিদ্ধান্ত মানতে হবে। যাঁর টিকিট কাটা যাবে, তিনি চিৎকার করবেন!”
এ দিনই দিল্লিতে কংগ্রেস-আরজেডি-জেডিইউ জোট ঝাড়খণ্ডে প্রথম দফার ১৩ টি আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে।
তার মধ্যে ন’টি আসনে কংগ্রেস লড়বে। বাকি চারটিতে লড়বে আরজেডি আর জেডিইউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy