ন’মাসের মধ্যেই তিরটা এ ভাবে ঘুরে যাবে, সম্ভবত ভাবেননি নরেন্দ্র মোদীরা! গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ৪৪টি আসনে নেমে আসার পর, প্রধান বিরোধী দলনেতার পদ নিয়ে টালবাহানা হয়েছিল বিস্তর। বিজেপির পক্ষ থেকে সে সময় রসিকতা করে বলা হয়েছিল, এঁদের আর সংসদে বসে লাভ কী, একটি বাসেই তো সবাই এঁটে যাবেন!
সেই রসিকতাই এ বার ব্যুমেরাং হয়ে ফিরছে বিজেপির দিকে। আপ শিবিরের এক নেতা মস্করার সুরে আজ বলেন, “বিধানসভায় বিরোধী আসনের কী দরকার, তিন জন তো একটি স্কুটারেই (অটোরিকশা যে নামে পরিচিত দিল্লিতে) এঁটে যেতে পারেন!”
মোট আসনের দশ শতাংশ না পেলে, সাধারণত সেই দলকে প্রধান বিরোধী দলনেতার পদটি দেওয়া হয় না। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি নেতারা বই খুলে ব্যাখ্যা করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলনেতার পদ পাওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা নেই কংগ্রেসের। কংগ্রেস পাল্টা যুক্তি দিয়েছিল, বিভিন্ন সংসদীয় প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবে চালু রাখার জন্যই প্রধান বিরোধী নেতা থাকাটা জরুরি। ঘনিষ্ঠ শিবিরে বিজেপি নেতারা প্রশ্ন তুলেছিলেন, কোন মুখে এই পদ চাইছেন সনিয়া গাঁধী?
দিল্লির ভোট-ফল সেই প্রশ্নটিরই মুখ ঘুরিয়ে দিয়েছে বিজেপির দিকে। দিল্লি বিধানসভার ৭০ আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি হাতে নিয়ে বিজেপি কি প্রধান বিরোধী দলনেতার পদটি পেতে পারে? অরবিন্দ কেজরীবালের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই উঠে এসেছে এই প্রশ্ন। তবে কেজরীবাল টুইট করে জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিকে বিরোধী দলনেতার পদটি দিতে চান। আজ আপ নেতা যোগেন্দ্র যাদবও বলেন, “এই যে প্রায়-বিরোধীশূন্য বিধানসভা, এটা মোটেও কাম্য নয়। সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য প্রধান বিরোধী দলনেতা থাকা দরকার।” আপ নেতা কুমার বিশ্বাস দুপুরেই টুইট করে বলেন, “বিজেপি ৭টির চেয়ে কম আসন পেলেও আমরা তাদের প্রধান বিরোধী দলনেতার পদটি দেব।” পরে কেজরীবালও জানান রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রাখার কথা।
দিল্লি বিধানসভায় এ বার দেখা মিলবে বিজেপির তিন মূর্তির। ওমপ্রকাশ শর্মা, বিজেন্দ্রকুমার ও জগদীশ প্রধান। আম দিল্লিওয়ালা দূর স্থান, বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদেরও ভাল করে জানা নেই এঁদের কথা! দু’জনকে পাশে নিয়ে এঁদেরই এক জন হবেন প্রধান বিরোধী দলনেতা। আর তাঁদের ঘিরে বসে থাকবেন সরকার পক্ষের ৬৭ জন বিধায়ক। দিল্লি বিধানসভার ইতিহাসে এ-ও হবে এক অভিনব নজির!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy