Advertisement
E-Paper

গগৈকে মুখ্যমন্ত্রী রেখেই বিদ্রোহ সামাল সনিয়ার

অসমে ভোট বিপর্যয়ের ছবি স্পষ্ট হতেই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেমে পড়েছিলেন দলের কিছু বিধায়ক। বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তরুণ গগৈ। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা তো আজ নিলেনই না সনিয়া গাঁধী, উল্টে রদবদল করে পছন্দের মন্ত্রিসভা গড়তে আজ সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিলেন। তবে সেই পছন্দের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রেখে চলার নির্দেশও তিনি গগৈকে দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৪ ০৩:২৭

অসমে ভোট বিপর্যয়ের ছবি স্পষ্ট হতেই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেমে পড়েছিলেন দলের কিছু বিধায়ক। বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তরুণ গগৈ। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা তো আজ নিলেনই না সনিয়া গাঁধী, উল্টে রদবদল করে পছন্দের মন্ত্রিসভা গড়তে আজ সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিলেন। তবে সেই পছন্দের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রেখে চলার নির্দেশও তিনি গগৈকে দিয়েছেন।

তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর ১ জুন গগৈ সরকারের তিন বছর পূর্ণ হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, তার পরেই রদবদল হতে পারে রাজ্য মন্ত্রিসভায়।

কিন্তু গগৈয়ের ইস্তফা কেন গ্রহণ করলেন না সনিয়া? আজ সন্ধ্যায় দশ নম্বর জনপথে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বেরিয়ে গগৈ অবশ্য কিছু বলতে চাননি। কিন্তু সর্বভারতীয় কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সনিয়ার সামনে গগৈয়ের বিকল্প এখনও অসমে নেই। তা ছাড়া গগৈ প্রকাশ্যে ইস্তফার কথা বললেও, সনিয়ার কাছে গিয়ে ‘বিরোধী গোষ্ঠীর চক্রান্তের কাহিনী’ই তুলে ধরেছেন। এই অবস্থায় আপাতত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার সিদ্ধান্তই নিয়েছে হাইকম্যান্ড। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝেছেন, যে গগৈ তৃতীয় বারের জন্য কংগ্রেসকে অসমে ক্ষমতায় ফিরিয়েছেন, দেশজুড়ে দলের বিপদের দিনে তাঁকে ছেঁটে ফেলা ঠিক হবে না। তবে ভারসাম্য রাখতে বিক্ষুব্ধদেরও অবশ্য দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন সনিয়া। তাঁদের কথাও শোনা হবে।

লোকসভা ভোটে অসমে কংগ্রেস ৭টির কম আসন পেলে তিনি পদত্যাগ করবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন গগৈ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ নেতাদের বক্তব্য, তার পর থেকেই দলের বিক্ষুব্ধরা তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়েন। তাঁদের মতে মোদী হাওয়া নয়, অসমে অন্তর্ঘাতই কংগ্রেসের সর্বনাশ করেছে। ফলে মাত্র তিনটি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। এই অবস্থায় গগৈ ব্যর্থতার দায় নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু দোষ শুধু তাঁর নয়।

গগৈ মুখে ইস্তফার কথা বলে তলে তলে যে অন্য কৌশল ভাঁজছেন, তা বিক্ষুব্ধরাও আঁচ করেছিলেন। সেই কারণে তাঁরাও চাপ বাড়াতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর। বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। শর্মার দাবি, অন্তত ৪৫ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। বরাকের মন্ত্রী গৌতম রায় ঘোষণা করে দেন, “পরের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন হিমন্ত। ১৫ দিনের মধ্যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী পাবো আমরা।”

কিন্তু সনিয়া আজ সেই বিদ্রোহের আগুনে জল ঢেলে দিয়েছেন। কংগ্রেসের এক শীর্ষ সারির নেতা বলেন, এমন নয় যে সনিয়া গগৈ-কে খেয়ালখুশি মতো চলার ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছেন। কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত তিনি চান না। সেই জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতাকেও তিনি দিল্লিতে ডেকেছেন। কিন্তু সনিয়া গগৈয়ের ইস্তফা ফিরিয়ে দেওয়ায় পেশী ফোলাতে শুরু করেছেন তাঁর-অনুগামীরা। সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর গগৈ নিজে কিছু না-বললেও, বিধায়ক অঞ্জন দত্ত ও প্রাক্তন মন্ত্রী বিজয়কৃষ্ণ সন্দিকৈ সাংবাদিকদের বলেন, “সভানেত্রী পদত্যাগপত্র তো গ্রহণ করেননি, বরং রাজ্যে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে গগৈকে আরও বেশি ক্ষমতা দিয়েছেন।” গগৈ-ঘনিষ্ঠ এক নেতা এ কথাও বলেন, হয়তো কাল থেকে অসন্তোষ ছেড়ে নিজেদের গদি বাঁচাতে নেমে পড়বেন বিক্ষুব্ধরা।

তবে অসমে বিদ্রোহ সামাল দেওয়া গেলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ থামছে না। তালিকায় এ বার সংযোজন মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের দুই পরাজিত নেতা-নেত্রী। বিদায়ী মন্ত্রী মিলিন্দ দেওরা বলেছেন, “দলের ব্যর্থতা অবধারিতই ছিল। কারণ, ভোট রাজনীতিতে যাঁদের অভিজ্ঞতা নেই, তাঁরাই শীর্ষ নেতৃত্বকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন।” আর এক পরাজিত নেত্রী প্রিয়া দত্ত বলেন, “শীর্ষ নেতৃত্বের উচিত কৌশল নির্ধারণের সময় দলের সব অংশের সঙ্গে কথা বলা। নিচু তলার কংগ্রেস নেতা-কর্মীর থেকে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন।” মুরলী দেওরার পুত্র মিলিন্দ অবশ্য বলেছেন, তাঁর মন্তব্যের অন্য কোনও অর্থ করা উচিত হবে না। সনিয়া-রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস আবার হৃত গৌরব ফিরে পাক এটাই তাঁর কাম্য।

gogoi sonia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy