Advertisement
E-Paper

নিচু রাজনীতি, মোদীকে পাল্টা জবাব রাহুলের

নরেন্দ্র মোদীর জাতপাতের গুগলি আজ সোজা ব্যাটে বাউন্ডারি পার করাতে চাইলেন রাহুল গাঁধী! বললেন, “জাত কখনও নিচু হয় না, কারও কারও মানসিকতা নিম্ন মানের হয়!” ঘটনার সূত্রপাত হয় পরশু। রাহুলের নির্বাচন কেন্দ্র অমেঠীতে সে দিন ভোট প্রচারে গিয়ে রাজীব গাঁধী-সহ গোটা গাঁধী পরিবারকে মোদী আক্রমণ করায় তার জবাব দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা। রাজীব কন্যা বলেছিলেন, “অমেঠীর মানুষ বুথে গিয়ে এই নীচ রাজনীতির জবাব দেবেন।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০২:৫৮

নরেন্দ্র মোদীর জাতপাতের গুগলি আজ সোজা ব্যাটে বাউন্ডারি পার করাতে চাইলেন রাহুল গাঁধী! বললেন, “জাত কখনও নিচু হয় না, কারও কারও মানসিকতা নিম্ন মানের হয়!”

ঘটনার সূত্রপাত হয় পরশু। রাহুলের নির্বাচন কেন্দ্র অমেঠীতে সে দিন ভোট প্রচারে গিয়ে রাজীব গাঁধী-সহ গোটা গাঁধী পরিবারকে মোদী আক্রমণ করায় তার জবাব দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা। রাজীব কন্যা বলেছিলেন, “অমেঠীর মানুষ বুথে গিয়ে এই নীচ রাজনীতির জবাব দেবেন।” প্রিয়ঙ্কার কথার সূত্র ধরে মোদী পর দিনই জাতপাতের রাজনীতি উস্কে দেন। ট্যুইট করে বলেন, “আমি নিচু জাতি থেকে এসেছি বলেই আমার রাজনীতি ওঁদের নীচ মনে হয়।” প্রিয়ঙ্কা বলেছিলেন, রাজনীতির নিচু মানের কথা। কিন্তু সেই কথাকেই জাত-পাতের রং লাগিয়ে ভোট-বাজারে ছেড়ে দেন মোদী।

বারাণসী থেকে প্রার্থী হয়ে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে এমনিতেই মেরুকরণের রাজনীতি উস্কে দিয়েছেন মোদী। তাঁর লক্ষ্য বারাণসী ও সংলগ্ন পূর্ব উত্তরপ্রদেশ ও লাগোয়া বিহারে উচ্চবর্ণের হিন্দু ভোটারদের বিজেপির পক্ষে সংহত করা। পূর্ব উত্তরপ্রদেশে এই মুহূর্তে বিজেপির মাত্র দু’টি আসন রয়েছে। বারাণসী ও গোরক্ষপুর। বাকি আসনগুলিতে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির যথেষ্ট প্রভাব ছিল এত দিন। এ বার উচ্চ বর্ণের পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া শ্রেণি ও ওবিসি-র ভোট পেতেও মরিয়া বিজেপি। তাই তিনি নিচু জাতের প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদীর এই কৌশলকে ভেস্তে দিতেই আজ পাল্টা দলিত স্বাভিমানের তাস-ও খেলেন রাহুল। বলেন, “প্রিয়ঙ্কার কথার খামোখা অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কোনও জাতিই নীচ হতে পারে না।” রাহুল একা নন, গোটা কংগ্রেস আজ এই বিষয়ে মোদীর বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়ে। দলের মুখপাত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর বলেন, “কংগ্রেসের কোনও নেতা কোনও দিন দলিতদের নিচু জাতি বলে মন্তব্য করেননি। বরাবর বলেছেন, পিছিয়ে পড়া জাতি। তাঁরা সামাজিক ও আর্থিক ভাবে অনগ্রসর। কিন্তু সেই অনগ্রসরতার কারণে কারও মর্যাদা খাটো হয় না। অথচ নিচু মানসিকতার পরিচয় দিয়ে দলিতের মর্যাদাকেও এখন খাটো করছেন মোদী।”

কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, জাতপাতের প্রশ্নে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে মোদীর বিরুদ্ধে প্রচার কাল থেকে আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে যাবেন রাহুল গাঁধী। মোদী যেমন অমেঠীতে প্রচার করেছেন, তেমনই ১০ মে বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে প্রচার করবেন রাহুল।

পূর্ব উত্তরপ্রদেশে সপা বা বসপা-র খোলাখুলি জাতপাতের রাজনীতি নতুন বিষয় নয়। কিন্তু মজার বিষয় হল, মুখে উন্নয়নের কথা বলেও, কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়েই এ বার তলে তলে জাতপাতের রাজনীতি করছে। মোদী নিজে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র আওতায় পড়েন। তা সামনে রেখে বিজেপি যেমন পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভোট পেতে চাইছে, কংগ্রেস আবার গোটা উত্তর প্রদেশ জুড়ে এই প্রচার করছে বিজেপিতে ব্রাহ্মণ নেতাদের ডানা ছাঁটছেন মোদী। দলের বর্ষীয়ান ব্রাহ্মণ নেতা মুরলীমনোহর জোশীকে বারাণসীতে থেকে সরিয়ে কানপুরে পাঠিয়ে দিয়েছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী। এমনকী মোদী যে হেতু পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতিনিধি, সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে উচ্চ বর্ণের ভোটারদের মনেও জাত্যভিমান উস্কে দিতে চাইছেন কংগ্রেসের ব্রাহ্মণ নেতারা। আর সেই কারণেই কংগ্রেস নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা আজ বলেছেন, “মোদী যদি জাতপাতের রাজনীতিই করতে চান, তা হলে উনি নিজেই বলুন ওঁর কী জাত?”

উত্তরপ্রদেশে শেষ দফার ভোট ১২ মে। তার আগে ১০ তারিখ শেষ হচ্ছে প্রচার। সুতরাং আগামী তিন দিন জাতপাতের রাজনীতি নিয়ে এই চাপানউতোর আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

narandra modi rahul
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy