নীতীশের অস্ত্রেই নীতীশকে বিঁধতে চায় বিজেপি। তা-ই জেডিইউ শীর্ষনেতার কায়দায় তাঁরই বক্তৃতার ভিডিও, অডিও সিডি নিয়ে প্রচারে নামছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের শিবির।
কয়েক মাস আগে বিহারের বিভিন্ন প্রান্তে ‘সম্পর্ক যাত্রা’ করেন নীতীশ কুমার। লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদী কী কী আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার অডিও রেকর্ডিং শোনাতেন তিনি। পাশাপাশি বলতেন, “কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করলেও, কালো টাকা দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি পালন করেননি নরেন্দ্র মোদী।”
পাল্টা জবাবের ছক তখনই কষে নিয়েছিল বিজেপি। বিধানসভা ভোটের মুখে সেই অস্ত্রেই শান দিচ্ছে তাঁরা। বিজেপি সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ১৫ অগস্ট এক সমাবেশে নীতীশ মন্তব্য করেছিলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে বিহারের সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। দিনে ১৫-২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাবেন গ্রামবাসীরা। না হলে ফের তিনি কোথাও ভোট চাইতে যাবেন না। পরেও একাধিক বার একই কথা বলেন নীতীশ। সে সব সমাবেশের ভিডিও, অডিও রেকর্ডিং জোগাড় করে বিজেপি। ভোটের আগে গ্রামে গ্রামে তা নিয়ে প্রচার চালাবেন দলীয় প্রার্থীরা। আজ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে বলেন, “শুধু ভোট টানতেই যে নীতীশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করব।” তিনি আরও জানিয়েছেন, দু’দশকের শত্রুতার সময় লালু প্রসাদ ও নীতীশ একে অন্যের বিরুদ্ধে যে সব কথা বলতেন, তা-ও এ বার মানুষকে শোনানো হবে।
বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নীতীশ। তাঁর মন্তব্য, “আমি বলেছিলাম রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি করতে না পারলে ভোট চাইতে যাব না। সে কাজ তো অনেকটাই হয়েছে।” ভোটের ময়দানে বিজেপি-র অস্ত্রের মোকাবিলা করতে তিনিও প্রস্তুত হচ্ছেন। দু’দিনের দলীয় কর্মী প্রশিক্ষণ শিবিরে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন নীতীশ। ইন্টারনেটে প্রচারের কেন্দ্রে থাকবে, দেশে কালো টাকা ফিরিয়ে আনতে মোদীর ভুয়ো প্রতিশ্রুতি ও বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি। নীতীশ বলেছেন, “পুরনো জনতা পরিবারের দলগুলির মিশে যাওয়ার বিষয় আপাতত মনে না রেখে, জেডিইউ-আরজেডি জোটের দিকে তাকিয়েই নির্বাচনের কাজে কর্মী-সমর্থকদের এগোতে হবে।”
বিজেপি অবশ্য দাবি করছে, নীতীশ গ্রামে গ্রামে ১৫-২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের আশ্বাস দিলেও, বাস্তবে সে সব এলাকায় দিনে ১০ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ থাকছে। রাজ্যের ৪৩ হাজার গ্রামের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছেছে ২৭ হাজার গ্রামে। বিজেপি নেতা সুশীল মোদী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝির জন্মস্থান গয়ায় গ্রামীণ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হয়েছে মাত্র ১ শতাংশ। নীতীশের জেলা নালন্দায় ১৬ শতাংশ। তা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হল কোথায়?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy