Advertisement
০২ মে ২০২৪

বিপণনে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মুখেই ভরসা রাহুলের

বিপণনের দুর্বলতা কাটাতে অবশেষে দলকে দাওয়াই দিলেন রাহুল গাঁধী। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ- সহ মন্ত্রিসভার ৬ জন সদস্যকে আজ রাতারাতি দলের মুখপাত্র করে দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দলের মুখপাত্র পদে ফিরিয়ে আনা হল প্রবীণ ও অভিজ্ঞ কিছু মুখকে। এমনকী, রাজ্যের বিষয় নিয়ে জাতীয় স্তরে সওয়াল করার জন্য তিরিশ জনের একটি নয়া বাহিনীও গড়ে দিলেন রাহুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:২৬
Share: Save:

বিপণনের দুর্বলতা কাটাতে অবশেষে দলকে দাওয়াই দিলেন রাহুল গাঁধী। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ- সহ মন্ত্রিসভার ৬ জন সদস্যকে আজ রাতারাতি দলের মুখপাত্র করে দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দলের মুখপাত্র পদে ফিরিয়ে আনা হল প্রবীণ ও অভিজ্ঞ কিছু মুখকে। এমনকী, রাজ্যের বিষয় নিয়ে জাতীয় স্তরে সওয়াল করার জন্য তিরিশ জনের একটি নয়া বাহিনীও গড়ে দিলেন রাহুল।

দু’দিন আগে দলের অধিবেশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাহুল বলেছিলেন, কংগ্রেসের মূল সমস্যা হল ‘মার্কেটিং’-এর দুর্বলতা। বহু ক্ষেত্রে সরকার সফল হলেও সেই বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেনি দল। রাহুলকে সমর্থন জানিয়ে গত কাল চিদম্বরমও বলেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার জোরদার হওয়ার কিছুটা দায় সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বেরও রয়েছে। কারণ, তাঁরা মুখচোড়া। সংবাদমাধ্যমের সামনে সচরাচর মুখ খুলতেই চাননি। এ কথা বলে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দৃষ্টান্তও দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বারাক ওবামাও সপ্তাহে অন্তত দু’ থেকে তিন দিন টিভি ক্যামেরার সামনে আসেন। কারণ এটাই সময়ের দাবি।”

সন্দেহ নেই চিদম্বরম প্রধানমন্ত্রীর দিকেই প্রকারান্তরে আঙুল তুলেছেন। তবে কংগ্রেসের একাধিক নেতার মতে, কথাটা রাহুল গাঁধীর জন্যও প্রযোজ্য। তিনি যে এখন সংবাদমাধ্যমের সামনে বেশি করে মুখ খুলছেন তা ইতিবাচক। কিন্তু এটা আগেই করা উচিত ছিল। অথচ সেটা তো তিনি করেনইনি উল্টে মিম আফজল বা ভক্তচরণ দাসের মতো এমন নেতাদের মুখপাত্র করেছিলেন যাঁরা ডাহা ফেল করেছেন। আর সে জন্যই অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নরেন্দ্র মোদীরা ফাঁকা মাঠ পেয়ে গিয়েছেন।

তবে রাহুল যে এ বার ভুল শুধরে বিজেপি-কে সমানে সমানে টক্কর দিতে চাইছেন, তা আজকের পদক্ষেপেই পরিষ্কার। যে ৬ জন মন্ত্রীকে আজ দলীয় মুখপাত্র করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে চিদম্বরম, সলমন ছাড়াও রয়েছেন আনন্দ শর্মা, গুলাম নবি আজাদ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং শশী তারুর। এ ছাড়াও মুখপাত্র করা হয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অনগ্রসর শ্রেণির নেতা মুকুল ওয়াসনিককেও।

রাহুল শিবিরের এক নেতার কথায়, রাহুল বেছে বেছে এমন সব নেতাদের তুলে এনেছেন যাঁরা যে কোনও বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে দল ও সরকারের অবস্থান তুলে ধরতে পারবেন। এ ব্যাপারে চিদম্বরমের জুড়ি নেই দলে। কেন্দ্রের আর্থিক সিদ্ধান্তই হোক বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়, কিংবা আইনি কোনও বিষয় নিয়ে বিতর্কের জবাব দিতে সরকারে তাঁর সমতুল নেতা বিশেষ নেই। আনন্দ শর্মাও দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের মুখপাত্র ছিলেন। একই কারণে মুখপাত্র পদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও সত্যব্রত চতুর্বেদীর মতো নেতাকেও। তুলনায় নবীনদের মধ্যে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শশী তারুরও যে সরকারের পক্ষে যুক্তি সাজাতে বেশ দক্ষ, একাধিক বার তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

এই নেতাদের মুখপাত্র পদের দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ২৪ জন তরুণ নেতা-নেত্রীকে নিয়ে রাহুল একটি প্যানেল তৈরি করেছেন। যাঁরা বেসরকারি টিভি চ্যানেলে গিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে অংশগ্রহণ করবেন। রাজ্যওয়াড়ি বিষয় নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনার জন্যও একটি প্যানেল গড়ে দিয়েছেন রাহুল। তাতেও রাখা হয়েছে তিরিশ জন তরুণ নেতাকে। এর মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ পাণ্ডেও।

রাহুল শিবির সূত্রে বলা হচ্ছে, এমন নয় যে তিরিশ জনের এই প্যানেল যেমন খুশি ভাবে তৈরি হয়েছে। এই প্যানেল গড়ার জন্য প্রতিটি রাজ্য থেকে পাঁচ জনের নাম চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের দিল্লিতে ডেকে রাহুল ও জনার্দন দ্বিবেদী এবং অজয় মাকেন ইন্টারভিউ নিয়ে তবেই চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

marketing rahul gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE