Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশি নেই ত্রিপুরায়: মানিক

কয়েক বছর আগেও তিনি অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে সরব ছিলেন। আর এখন সেই মানিক সরকারই বলছেন, ত্রিপুরায় কোনও অনুপ্রবেশকারী নেই। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে কেউ নেই। এ রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী সমস্যাও নেই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০২:৪৬

কয়েক বছর আগেও তিনি অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে সরব ছিলেন। আর এখন সেই মানিক সরকারই বলছেন, ত্রিপুরায় কোনও অনুপ্রবেশকারী নেই। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে কেউ নেই। এ রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী সমস্যাও নেই।’’

কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগে নির্বাচনী ইস্তাহারে বিজেপি জানিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তারা সে দেশে ফেরত পাঠাবে। ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদীর সরকার জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকেই এই কাজ শুরু হবে। সেই মোতাবেক অসমে ইতিমধ্যেই অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেই উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। অসমের মতো ত্রিপুরাতেও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির কাজ শুরু হয়েছে কিনা বা হবে কিনা তা নিয়ে অবশ্য এখনও অন্ধকারে ত্রিপুরার বাম সরকার।

খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এমন কোনও কাজের কথা শোনেননি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ত্রিপুরায় এ ধরনের কোনও কাজ চলছে কি না, তা আমার জানা নেই।’’

বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময় ত্রিপুরাতেও ওপার বাংলা থেকে এসে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরবর্তী কালেও বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় চলে আসেন। কংগ্রেস-জোট সরকারের সময়ের বিধানসভার কার্যবিবরণী দেখলে দেখা যাবে সেই সময় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে সব থেকে সরব ছিল তৎকালীন বিরোধী দল, সিপিএমই।

রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সুধীররঞ্জন মজুমদারের কাছে সিপিএম লিখিত অভিযোগ করে: উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় বাংলাদেশি মানুষ এসে আস্তানা তৈরি করছে। বাংলাদেশি ‘ফরেনার্স’ এ রাজ্যে এসে বিভিন্ন উপায়ে ভারতীয় ‘নাগরিকত্ব’ কার্ড সংগ্রহ করে ভোটার তালিকায় নাম তোলাচ্ছে। কংগ্রেস-জোট সরকারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে সিপিএমের তরফে রাজ্যের ‘অনুপ্রবেশ সমস্যা’ নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়। উপজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে উপজাতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখার জন্য ‘ইনার লাইন পারমিট’ চালুর দাবিও করে সিপিএম। পাশাপাশি, সিপিএমের তখনকার নেতা মানিক সরকার, বর্তমানে যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তিনি দাবি করেন, “ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুসারে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর বাংলাদেশ থেকে যাঁরা ত্রিপুরায় এসেছেন, সেই বিদেশিদের চিহ্নিত করে আলাদা ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ রাখতে হবে।” সে দিন তাঁর দাবি ছিল, ‘‘এখনই যদি এদের চিহ্নিত না করা হয়, তাহলে আর্থিক ভাবে দুর্বল উপজাতি সম্প্রদায় মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।”

১৯৯২ সালের পর থেকে ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। ২০১৩ সালে চতুর্থবারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মানিকবাবু। ১৯৯২ সালের পর থেকে ত্রিপুরায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে কোনও কথা বলেনি বামফ্রন্ট তথা সিপিএম।

ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি আশিস সাহা বলেন, ‘‘রাজ্যের ভুয়ো ভোটারদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক। ১৯৯২ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কোনও কথা বলেনি।” তাঁর অভিযোগ, এই বেআইনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ‘পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট’ দিয়ে প্রতি বছর রাজ্যের ভোটার তালিকায় নাম তোলা হচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতির বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।

bangladeshi manik sarkar tripura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy