আগের লোকসভা ভোটের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে লালুর সঙ্গত্যাগের সাহস দেখালো না কংগ্রেস। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও বিহারে পশুখাদ্য মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লালুর দল আরজেডি-র হাতই ধরল রাহুল-সনিয়া গাঁধীর দল।
কয়েক দিন টানাপড়েনের পর আজ কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাঁতের কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করলেন লালু। মাস দু’য়েক আগে জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরোনোর পর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ায় তৎপর ছিলেন লালু। তবে কংগ্রেসের তরফে সদর্থক সাড়া না-পাওয়ার অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন লোক জনশক্তি পার্টির রামবিলাস পাসোয়ান।
আজ সন্ধ্যায় ১০ নম্বর সার্কুলার রোডে, রাবড়ি দেবীর সরকারি বাসভবনে রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন লালু। ছিলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অশোক চৌধরি এবং মুখপাত্র প্রেমচাঁদ মিশ্র। লালু বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতেই এই জোট। বিহারে দুই শক্তির মধ্যে লড়াই হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তি বনাম কংগ্রেস-আরজেডি।” আঁতাঁতের জন্য সনিয়া-রাহুলকে ধন্যবাদ জানান লালু। ২০০৯ সালে কংগ্রেসের হাত না-ধরার জন্য আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “সেটা মস্ত ভুল হয়েছিল।”
আরজেডি সূত্রের খবর, বিহারে ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১২টি কংগ্রেসের জন্য ছাড়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলি হল সাসারাম, কিষাণগঞ্জ, ঔরঙ্গাবাদ, হাজিপুর, পূর্ণিয়া, পটনা সাহিব, নালন্দা, সুপৌল, সমস্তিপুর, বাল্মিকীনগর, গোপালগঞ্জ ও মজফ্ফরপুর। কাটিহারে লড়বে শরদ পাওয়ারের এনসিপি। এর আগে, আরজেডি-র সঙ্গে জোটের শর্ত হিসেবে বিহারে ১৫টি আসন চেয়েছিল কংগ্রেস। রাজি ছিলেন না লালু। শেষ পর্যন্ত ১৩টি আসন তিনি ছাড়লেন।
আজই গয়া ও জহানাবাদে নির্বাচনী জনসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লালু। জেল থেকেই লালু জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গেই নির্বাচনী জোট গড়তে চান। জেল থেকে বেরোনোর পরই দিল্লিতে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে তেমন সাড়া না পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। দিন দু’য়েক আগে তিনি জানিয়েছিলেন, বিহারে ১১টি আসন কংগ্রেসকে এবং একটি শরদ পাওয়ারের এনসিপিকে দিতে প্রস্তুত আরজেডি। ওই কেন্দ্রগুলির তালিকা বিহারের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা সি পি যোশীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও, কংগ্রেস হাইকমান্ডের তরফে উত্তর না-পেয়ে, সংবাদ মাধ্যমের সাহায্যে কংগ্রেস সভানেত্রীর হস্তক্ষেপ চান লালু। তিনি যে অপেক্ষা করতে রাজি নন, কংগ্রেসকে সেই বার্তা দিতে দলের ভোট-প্রচারও শুরু করে দেন তিনি।
কংগ্রেসের মন বুঝতে লালু গত কাল জানিয়েছিলেন, “আসন সংখ্যা নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। আলোচনা করে আরও একটি আসন ছাড়তেই পারি। জোটের স্বার্থে এটা করতে অসুবিধা হবে না।” ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে কংগ্রেসকে ৪টি আসন দিতে চেয়েছিল আরজেডি। নারাজ হয়ে রাজ্যের ৪০টি আসনেই তারা প্রার্থী দেয়। ওই নির্বাচনে আরজেডি জেতে চারটি আসনে, কংগ্রেস দু’টি। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই লালু সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাননি। চায়নি কংগ্রেসও।
দলীয় সূত্রের খবর, এ বার তাঁর মূল ভোট-ব্যাঙ্ক যাদব এবং মুসলমানদের সমর্থন আরও বেশি করে চাইছেন লালু। রাজপুত সম্প্রদায়ের ভোটেও ভাঙন ধরাতে চাইছেন। সরকারি হিসেবে, রাজ্যে যাদব ভোটার রয়েছেন ১৭ শতাংশ। মুসলমান ভোটার ১২ শতাংশ। ৫ শতাংশ রাজপুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy