Advertisement
০২ মে ২০২৪

বদায়ূঁর ছায়া এ বার সীতাপুরে, গাছে কিশোরীর ঝুলন্ত মৃতদেহ

বয়স সেই পনেরো। এ বারও শৌচাগার না থাকায় বেরোতে হয়েছিল বাড়ির বাইরে। এবং এ বারও সেই একই কায়দায় ধর্ষণ করে গাছের ডালে টাঙিয়ে দেওয়া হল কিশোরীর দেহ। একই দিনে বদায়ূঁ কাণ্ড নিয়ে আদালতে বিপাকে পড়ল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এক সপ্তাহ যাবৎ একের পর এক ধর্ষণের খবর এসেছে গোটা উত্তরপ্রদেশ থেকে। কিন্তু নৃশংসতায় সবার উপরে ছিল বদায়ূঁর জোড়া গণধর্ষণ। এ বার সেই বদায়ূঁ কাণ্ডেরই ছায়া দেখা গেল সীতাপুরে।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:৫৬
Share: Save:

বয়স সেই পনেরো। এ বারও শৌচাগার না থাকায় বেরোতে হয়েছিল বাড়ির বাইরে। এবং এ বারও সেই একই কায়দায় ধর্ষণ করে গাছের ডালে টাঙিয়ে দেওয়া হল কিশোরীর দেহ। একই দিনে বদায়ূঁ কাণ্ড নিয়ে আদালতে বিপাকে পড়ল উত্তরপ্রদেশ সরকার।

এক সপ্তাহ যাবৎ একের পর এক ধর্ষণের খবর এসেছে গোটা উত্তরপ্রদেশ থেকে। কিন্তু নৃশংসতায় সবার উপরে ছিল বদায়ূঁর জোড়া গণধর্ষণ। এ বার সেই বদায়ূঁ কাণ্ডেরই ছায়া দেখা গেল সীতাপুরে। অভিযোগ, ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করেছিলেন ছয় ব্যক্তি। গাছের ডাল থেকে উদ্ধার হয়েছে তার দেহ। কিশোরীর বাবার দাবি, তাঁদেরই এক প্রতিবেশী মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বয়সের কারণে বাধা দেন মা-বাবা। সেই আক্রোশেই মেয়ের উপর এই হামলা, অভিযোগ বাবার। ছ’জনের নামে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে থানায়।

ধর্ষণ নিয়ে এত তোলপাড়, দেশ জুড়ে প্রতিবাদ, রাজনৈতিক তৎপরতা, মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে এত প্রতিশ্রুতি নারকীয় নির্যাতন রুখতে কোনও কিছুই যে যথেষ্ট নয়, এ দিন যেন ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সীতাপুরের ঘটনাই।

শুধু সীতাপুরই বা কেন, তালিকায় যোগ হয়েছে বাচ্চি মাঝা ও বাহরাইচ জেলার বেগনাপুরের নামও। ওই দুই জায়গা থেকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার খবর এসেছে আজই।

বদায়ূঁর জোড়া ধর্ষণ নিয়ে সমালোচনা করে কালই চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর আজ সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল চার দিন আগে। কিন্তু এখনও সেই তদন্তের সুপারিশ জমা করেনি রাজ্য। এক জনস্বার্থ মামলায় এ দিন ইলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৯ জুনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে সিবিআই তদন্তের লিখিত সুপারিশের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে কোর্টে। ধর্ষিতাদের ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং তাঁদের পরিবারের করা এফআইআরের প্রতিলিপিও ওই দিনের মধ্যে পেশ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

সিবিআই তদন্ত নিয়ে নির্দেশের পাশাপাশি আবেদনকারীর আর্জি ছিল, অপরাধী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে ধর্ষিতাদের বাড়ির লোকজনের নিরাপত্তা। কেন্দ্রীয় তদন্তের সুপারিশ করতে এত দিন কেন লাগল? বেঞ্চের এই প্রশ্নের জবাবে সরকারি কৌঁসুলি জানান, প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে রদবদলের কারণেই এই বিলম্ব।

হাইকোর্টে প্রশ্ন ওঠার পর সরকার যে বিষয়টা ফেলে রাখতে চায় না এ দিন তার প্রমাণ মিলেছে রাজ্য পুলিশের ডিজির পদক্ষেপে। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের নির্দেশে আজ নির্যাতিতার পরিবারের কাছ থেকে সিবিআই তদন্তের লিখিত দাবি সংগ্রহ করেন তিনি। সমালোচনা তো ছিলই, আজ আবার হাইকোর্টের নির্দেশ সব মিলিয়ে অস্বস্তি প্রকট উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের। তার মধ্যেই ফের সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অখিলেশ।

তাঁর মতে, দেশের অন্য প্রান্তেও একের পর এক ধর্ষণ হয়েই যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের নজর শুধু উত্তরপ্রদেশেই। বদায়ূঁ কাণ্ডে যে যে পদক্ষেপ করা সম্ভব, তার সবই করা হয়েছে দাবি অখিলেশের।

মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন, থামছে না ধর্ষণের ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

badaun sitapur rape uttar pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE