মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে কেউ যদি যৌন সম্পর্কে আগ্রহী না হন, তা হলে সেটা নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না বিবাহ বিচ্ছেদের একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট।
যদিও পারিবারিক আদালত ওই দম্পতির বিচ্ছেদে সায় দিয়েছিল। সেই রায়ের সঙ্গে সহমত হয়নি বম্বে হাইকোর্ট। মামলার সূত্রে বিচারপতি ভি কে তাহিল রামানি এবং বিচারপতি পি এন দেশমুখের বেঞ্চ এ-ও জানিয়েছে, বিয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যে শার্ট-প্যান্ট পরে স্ত্রী অফিস যান বা অফিসের কাজে শহরের বাইরে গিয়ে থাকেন এমন সব কারণের জন্য তিনি স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুর, এ কথা বলা যায় না। বেঞ্চের দাবি, অনেক কিছু নিয়ে বৈবাহিক জীবন তৈরি হয়। এমন দু’একটা ছোটখাটো উদাহরণ নিষ্ঠুরতার পরিচায়ক নয়।
২০১২-র ডিসেম্বরে পারিবারিক আদালত এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদে সায় দিয়েছিল। নিষ্ঠুরতার অভিযোগ দেখিয়ে স্ত্রীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে যেতে চেয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু ২৯ বছরের স্ত্রী পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানিতেই হাইকোর্ট বিচ্ছেদ খারিজ করে দিয়েছে।
২০০৯ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল। তার পরে মহাবালেশ্বরে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন তাঁরা। স্বামীর অভিযোগ, তিনি সেখানে সহবাসে আগ্রহী হলেও তাঁর স্ত্রী সাড়া দেননি। কিন্তু স্ত্রীর আইনজীবী জানান, ওই সময়ে মহিলার ঋতুস্রাব হচ্ছিল। তাই স্ত্রী আপত্তি জানান। মহাবালেশ্বরে কাটানো ওই চার দিন ছাড়া অন্য কোনও সময় যে স্ত্রী কখনও যৌন সম্পর্কে যেতে নারাজ ছিলেন, এমন কথা কিন্তু স্বামীও দাবি করেননি।
স্বামীর আরও অভিযোগ ছিল, স্ত্রী তাঁর সঙ্গে এবং তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে যখন-তখন ঝগড়া করেন। শ্বশুর শাশুড়িকে সম্মান করেন না। বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই সব দাবির পক্ষে স্বামী যথেষ্ট মজবুত প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
এ ছাড়াও স্বামীর দাবি ছিল, বিয়ের ৪৫ দিনের মাথায় তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও অফিসের কাজে নাসিকে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কোর্ট বলেছে, প্রয়োজন ছিল বলেই স্ত্রী কাজে গিয়েছিলেন। এতে দোষের কিছু নেই। আর এর ফলে স্বামীর প্রতি মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে, তা-ও বলা যায় না।
স্বামী বা স্ত্রী যদি দীর্ঘ সময় ধরে কেউ কারও প্রতি দুর্ব্যবহার করে চলেন বা এক জনের খারাপ আচরণে অন্য জন তাঁর সঙ্গে থাকতেই পারছেন না, এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলেই সেটা মানসিক নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য হবে বলে জানিয়েছে কোর্ট। দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ ঝগড়া বা মতানৈক্য সব পরিবারেই ঘটে থাকে। সেটাকে মানসিক নিষ্ঠুরতা দাবি করে কেউ ডিভোর্স পেতে পারেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy