Advertisement
E-Paper

যাব কোথায়, আতঙ্কে যোজনা কর্মীরা

১৫ অগস্ট দিনটা ছিল শুক্রবার। তারপর শনি, রবি এমনিতেই ছুটি। সোমবার আবার জন্মাষ্টমীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সব দফতর বন্ধ। চার দিনের লম্বা ছুটি পেয়ে দিব্যি খোশ মেজাজে ছিলেন সকলে। কেউ কেউ দিল্লির বাইরে বেড়াতে চলে গিয়েছিলেন। কারও পরিকল্পনা ছিল, শুক্রবার সকাল থেকেই বাড়ির ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়াবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৮

১৫ অগস্ট দিনটা ছিল শুক্রবার। তারপর শনি, রবি এমনিতেই ছুটি। সোমবার আবার জন্মাষ্টমীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সব দফতর বন্ধ। চার দিনের লম্বা ছুটি পেয়ে দিব্যি খোশ মেজাজে ছিলেন সকলে। কেউ কেউ দিল্লির বাইরে বেড়াতে চলে গিয়েছিলেন। কারও পরিকল্পনা ছিল, শুক্রবার সকাল থেকেই বাড়ির ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়াবেন।

সাত সকালে লাল কেল্লা থেকে নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণাতেই ছুটির মজা মাটি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, যোজনা কমিশন তুলে দেওয়া হবে। তাতেই ঘুম ছুটেছে যোজনা কমিশনের কর্তাদের। যাঁরা আইএএস এবং আইইএস (ইন্ডিয়ান ইকনমিক সার্ভিস)-এর অফিসার, তাঁদের চিন্তা নেই। তাঁরা জানেন, অন্য কোথাও তাঁদের নিয়োগ করা হবে। কেরানি থেকে অফিসের বড় বাবুর মতো যাঁরা কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের কর্মী, তাঁরাও নিশ্চিন্ত। কিন্তু একেবারে যোজনা কমিশনে কাজের জন্যই যে সব পেশাদারকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ।

নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন, যোজনা কমিশনের বদলে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি হবে। যার কাজ হবে অর্থনৈতিক ও মানব উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা জোগানো। অনেকটা ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’-এর মতো কাজ করবে এই প্রতিষ্ঠানটি। সেই প্রতিষ্ঠানে কি জায়গা হবে যোজনা ভবনের আধিকারিকদের, যাঁদের শুধুমাত্র যোজনা কমিশনে পেশাদার হিসেবে কাজ করার জন্যই নিয়োগ করা হয়েছিল? এই প্রশ্নেরই উত্তর হাতড়াচ্ছেন সকলে। আগামিকাল, মঙ্গলবার দফতর খুলবে। এই চার দিন ধরে চিন্তিত হয়ে কেউ সহকর্মীদের ফোন করেছেন। কেউ আবার নিজের দফতরের শীর্ষ কর্তার বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন। জানতে চাইছেন, নতুন সংস্থা হলে তাঁদের কী হবে? নাকি, অন্য কোনও মন্ত্রকে কোথাও একটা গুঁজে দেওয়া হবে? প্রবীণরা নবীনদের আশ্বস্ত করছেন, নতুন সংস্থাতেই সকলের জায়গা হবে। না হলে, যাঁর যেমন দক্ষতা, সেই অনুযায়ী কোথাও ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিন্তু প্রবীণরা নিজেরাও একেবারে চিন্তামুক্ত থাকতে পারছেন না।

যোজনা কমিশনের মোট কর্মী সংখ্যা এখন প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই দিল্লির যোজনা ভবনে কাজ করেন। বাকিরা কলকাতা, গুয়াহাটির মতো বিভিন্ন শহরে যোজনা কমিশনের যে আঞ্চলিক মূল্যায়ন দফতর রয়েছে, সেখানে কর্মরত। যোজনা কমিশনে মোট ১৫৫টি পেশাদার পদ রয়েছে। রিসার্চ অফিসার থেকে বিভিন্ন দফতরের উপদেষ্টা পর্যন্ত এই ১৫৫টি পদগুলিতে ইউপিএসসি-র পরীক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র যোজনা কমিশনে কাজ করার জন্যই নিয়োগ করা হয়। মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার জমানায় অবশ্য নতুন নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১৫৫টি পদের মধ্যে মাত্র জনা পঞ্চাশেক আধিকারিক কাজ করছেন। উদ্বেগ ছড়িয়েছে মূলত এই আধিকারিকদের মধ্যেই।

নতুন সংস্থার চেহারা কী রকম হবে, যোজনা কমিশনের শীর্ষ আধিকারিকরাও সেই বিষয়ে অন্ধকারে। গত সপ্তাহে দু’দিন ক্যাবিনেট সচিবালয়ে যোজনা কমিশনের সচিব সিন্ধুশ্রী খুল্লারকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে মূলত বর্তমান যোজনা কমিশনের কাঠামো, কোথায়, কোন বিভাগে ক তজন কাজ করছেন, তার হিসেব নেওয়া হয়েছে। নতুন সংস্থার চেহারা সম্পর্কে কোনও আলোচনাই হয়নি।

সরকারি সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নতুন সংস্থার চেহারাটা ঠিক হয়ে যাবে। নতুন সংস্থায় দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে? এ বিষয়ে সব থেকে বেশি আলোচিত নাম অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী সুরেশ প্রভু। যোজনা কমিশনে আট সদস্য ছিলেন। নতুন সংস্থার আকার আরও কম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই হিসেবে, সংস্থার সার্বিক বহরও কমতে পারে। ফলে এখন যাঁরা যোজনা কমিশনে কাজ করছেন, নতুন সংস্থায় তাঁদের সকলেরই জায়গা হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। বরঞ্চ যোজনা কমিশনের অধিকাংশ আধিকারিকেরই ধারণা, নতুন সংস্থায় একেবারে নতুন ‘টিম’ নিয়ে আসতে চাইবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে পুরনোদের বদলে নতুন মুখ দেখার সম্ভাবনাই বেশি।

planning commission employee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy