Advertisement
০৩ মে ২০২৪

স্কচ মানে শুধুই স্কটল্যান্ড

সারা বছরই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ধরমশালা’য় অতিথি আসেন। বলতেই হয়, সার্থকনাম। গাড়িতে ম্যাগির পাশে বসে যেতে যেতে বৈচিত্রে ভরা এই দেশটা দেখতে দেখতে মনে হয়, হমিনঅস্ত, হমিনঅস্ত, হমিনঅস্ত। অসাদউল্লা বেগ খানের স্মরণ নিতেই হল। স্বর্গ যদি কোথাও থাকে তবে তা এখানেই, এখানেই, এখানেই। ওহো, কে এই অসাদউল্লা বেগ খান? আরে বাবা মির্জা গালিব। পাহাড়-সমুদ্র-গহিন অরণ্য-নদী-ফুল-পাখিস্কটল্যান্ড অনন্যা। কালিম্পং-গ্যাংটকের মতো সব বাড়িতেই ফুল। বেশির ভাগই বাগান। না হলে অনেক টব। স্কটল্যান্ড ভ্রমণ নিয়ে লিখছেন রাজা দত্ত।আমেরিকানরা অনেক কিছু পারেন, কয়েকটা জিনিষ পারেন না। বিশাল বিশাল গাড়ি-বাড়ি-ব্রিজ-বিমান-জাহাজ-পাঠাগার-মহাকাশ যান-সৌধ নির্মাণ করতে পারেন, কিন্তু টাকে চুল গজাতে পারেন না। তেমনই ফরাসি সুরা-শ্যাম্পেন-সুগন্ধি বা স্কচ তৈরি করতে পারেন না। শত চেষ্টাতেও না। স্কচ মানে শুধুই স্কটল্যান্ড। কুয়াশা মাখা ঝর্নার জল এবং খাঁটি ওক কাঠের পিপে ছাড়া যে স্কচ হয় না। ছোট্ট দেশ, কিন্তু কী সুন্দর। পুরো দেশটাই যেন পিকচার পোস্টকার্ড!

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

আমেরিকানরা অনেক কিছু পারেন, কয়েকটা জিনিষ পারেন না। বিশাল বিশাল গাড়ি-বাড়ি-ব্রিজ-বিমান-জাহাজ-পাঠাগার-মহাকাশ যান-সৌধ নির্মাণ করতে পারেন, কিন্তু টাকে চুল গজাতে পারেন না। তেমনই ফরাসি সুরা-শ্যাম্পেন-সুগন্ধি বা স্কচ তৈরি করতে পারেন না। শত চেষ্টাতেও না। স্কচ মানে শুধুই স্কটল্যান্ড। কুয়াশা মাখা ঝর্নার জল এবং খাঁটি ওক কাঠের পিপে ছাড়া যে স্কচ হয় না। ছোট্ট দেশ, কিন্তু কী সুন্দর। পুরো দেশটাই যেন পিকচার পোস্টকার্ড!

চলো মুসাফির, বাঁধো গাঠোরি। পথ চলব বলেই তো পথে নেমেছি। সেই কবে থেকে। এ চলা এক রকম বিরাম বিহীন। কিছু বিরতি, ফের পথ চলা। ‘আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ’। এ বার গন্তব্য স্কটল্যান্ড।

কলকাতা থেকে এমিরেটস-এর বিমানে দুবাই হয়ে খাস লন্ডনের হিথরো, বিশ্বের ব্যস্ততম বিমান বন্দরগুলোর অন্যতম। হিথরো থেকে ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজ-এর বিমানে গ্লাসগো। বিমান বন্দর থেকে কুইন্স স্ট্রিট রেলওয়ে স্টেশন। স্কট রেলে ইনভারনেস হয়ে টেন (Tain)।

স্কটল্যান্ড বলতে আম আদমি, যাঁরা প্যাকেজ ট্যুরে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বেড়াতে যান, তাঁরা এডিনবরা এবং গ্লাসগো বোঝেন। কোনও সন্দেহ নেই, এই দু’টো শহরই খুব সুন্দর। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এডিনবরা ক্যাসেল, যেটা এখনও স্কটিশ সেনাবাহিনীর সদর দফতর, স্থাপত্য শিল্পে তুলনাহীন। এ ছাড়া স্কটিশ পার্লামেন্ট, হোলিরড প্যালেস (স্কটল্যান্ডে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সরকারি বাসভবন), সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল এবং কালটন হিল এই শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য। প্রতি বছর আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় এডিনবরা আন্তর্জাতিক উৎসব। বর্ণাঢ্য ফেস্টিভ্যাল। তুলনায় গ্লাসগো শহর ততটা পর্যটক-প্রিয় নয়। তবে সম্প্রতি পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে। গ্লাসগোর মানুষ খুব অতিথি পরায়ণ, এটা বহু প্রাচীন প্রবাদ, যা আজও সমান সত্য। গ্লাসগো ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বিশ্ব বিখ্যাত। কিংবদন্তি স্থপতি চার্লস রেনি ম্যাকিন্টস এই শহরেরই সন্তান। রেনি ম্যাকিন্টস বিশ্ব বন্দিত নাম। গ্লাসগোর সিটি সেন্টার ও তার স্থাপত্য, বিশেষ করে ভিক্টোরীয় স্থাপত্য-কীর্তি, এই বিশ্বে বিরল। গ্লাসগো ১৯৯০ সালে ‘ইউরোপিয়ান সিটি অফ কালচার’-এর শিরোপা পায়। যে দেশের লোখ সংখ্যা এক কোটিরও কম, সেই দেশের অন্তত আঠারো লক্ষ মানুষ থাকেন বৃহত্তর গ্লাসগোয়!

এই পৃথিবীটা বা প্রকৃতি এখনও কত সুন্দর সেটা স্কটল্যান্ড ভ্রমণ না-করলে বোঝা যায় না। প্রকৃতি আর স্কটল্যান্ডের মানুষের টানে এই অধম কলমচি তথা পর্যটক বহুবার গিয়েছে সেই দেশে। এ বার স্কটল্যান্ডের যে সমস্ত জায়গাগুলো নিয়ে লিখব, মনে হয়, বহু ভারতীয় ভ্রমণ-পিপাসুর কাছে তা অজানা এবং আকর্ষনীয় হবে।

শহরের নাম ইনভারনেস। স্কটল্যান্ডের পার্বত্য অঞ্চলের রাজধানী। পাহাড় এবং সমুদ্রের পটভূমিতে ইনভারনেস অতুলনীয়। ইনভারনেস বিমানবন্দর থেকে ইংল্যান্ডের যে কোনও বড় শহরে সরাসরি অথবা বিমান পাল্টে যাওয়া যায়। যাওয়া যায় বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেও। বিমান ছাড়াও যাওয়া যায় বাস অথবা ট্রেনে। বাস ও ট্রেন-যাত্রা খুবই মনোরম।

এই প্রতিবেদক ইনভারনেস স্টেশন থেকে ট্রেনে পৌঁছয় টেন স্টেশনে। গন্তব্য ডরনক শহর। এই শহরটা নিয়ে পরে জানাব। টেন স্টেশন থেকে ডরনক ১৩ কিলোমিটার দূর। ইনভারনেস থেকে ডরনক আসতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ৭ মিনিট। ট্রেন থেকে দেখা যায় বিরল রূপসী প্রকৃতিকে। ট্রেন-যাত্রায় পথে পরে গভীর বন, সুন্দরী নদী। মন কাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিভিন্ন ঋতুতে পাল্টে যায় প্রকৃতির সাজ। বর্ষায় এক, বসন্তে আর এক রকম। শীতে আবার পুরো বিপরীত। বসন্তে যেন ফাগুন-বউ বসন্তী ফুলে ভরে ফেলে চরাচর। হলুদ বনে ডেকে যায় রঙিন পাখি। স্কটল্যান্ডের প্রকৃতি রং-রূপ-রসে মদির। রামধনুকেও হার মানায়। কিশোরীর নরম স্বপ্নের মতো একটা গোটা দেশ!

ইনভারনেস থেকে টেন যেতে যেতে মনটা বড় বেদনা-বিধুরও হয়ে যায়। রঙের রায়ট মনে বিষাদও জাগায়। পথে পড়ে ৮টা স্টেশন। প্রতিটা স্টেশন স্বকীয়তায় উজ্জ্বল। এদের মধ্যে সবথেকে সুন্দর ইনভারনেস, অলনেস এবং ডিংওয়াল। ১৮৬০ থেকে ১৮৬২ সালতৈরি হয় এই স্টেশনগুলো, ইনভারনেস ও রসসায়ার রেল-এর উদ্যোগে। এখন পুরো ব্যবস্থা অর্থাৎ স্টেশন-রেল লাইন-টিকেটিং ইত্যাদি করে স্কট রেল। এই জায়গাগুলোকে শহর বললে ভুল হবে। আমাদের যেমন মিউনিসিপ্যালিটি, ওদের তেমনই কাউন্সিল। অলনেস বিখ্যাত ডালমোর ডিস্ট্রিলারির জন্য। তৈরি হয় উঁচু মানের মল্ট হুইস্কি। ইনভারগর্ডন-এ আছে ডান রবিন ক্যাসেল।

এই প্রতিবেদকের পুরো সফরটা ডরনককে কেন্দ্র করে। টেন স্টেশন থেকে ডরনক ১৩ কিলোমিটার। স্টেশনে এই প্রতিবেদককে নিতে এসেছিল ম্যাগি ও মনীশ বাসু। এঁদের সম্পর্কে দু’টো কথা বলে না-নিলে খুবই অন্যায় হবে। কারণ এঁদের উদ্যোগেই দেখলাম স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা। এই প্রতিবেদক সামান্য ভারতীয় পর্যটক। এঁদের সাহায্য না-পেলে স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত। কারণ, অনেক কিছুই আমার সাধ্যাতীত।

কর্মজীবনে মণীশ বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যলয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তাঁর বিষয় ছিল মুখ গহ্বরের ক্যান্সার ও তার নিরাময়। খুবই শিক্ষিত এবং মার্জিত। আর ম্যাগি, মানে মার্গারেট ম্যাকলাউড, ছিলেন দন্ত চিকিৎসক। ইউরোপ-আমেরিকায় ডেন্টিস্টদের দর-কদর খুবই বেশি। অবসরের পর দু’জনে ডরনকের বাসিন্দা।

নর্থ সি-র উপর ডরনকের অবস্থান। শান্ত-স্নিগ্ধ শহর। সৌন্দর্যে অপরূপা। প্রাণের আরাম, আত্মার আনন্দ-শান্তি মেলে ডরনকে। ম্যাগি ও মণীশের বাড়ির নামটি ভারী অদ্ভুত। বাড়ির নাম ‘ধরমশালা’! ভাবা যায়! পৃথিবীর এক কোণে, হাজার হাজার মাইল দূরের একটা শহরের একটা বাড়ির নাম ধরমশালা!

এই ভারতের বিভিন্ন ধর্মস্থানে সস্তায় থাকার জায়গা আছেই। সবাই তো আর হোটেলে থাকতে পারেন না। আমরা তাকে বলি ধরমশালা। ঠিক তেমনই ম্যাগি ও মণীশের বাড়িটিও ধরমশালা শব্দের ভারতীয় সংজ্ঞার উজ্জ্বল উদাহরণ। বন্ধু বৎসল, অতিথি পরায়ণ, প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর এই দম্পতি। ঘরের কাজ, বাগান পরিচর্যা, রান্না সব কাজ ম্যাগে একা হাতে সামলায়। যেন দশভুজা। এলাকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের খোঁজখবর নেওয়া, রান্না করে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া, সমস্ত রকম সামাজিকতা ম্যাগি হাসি মুখে করে। ‘ধরমশালা’য় আছে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার। আদতে দু’জনেই গ্রন্থকীট।

সারা বছরই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ধরমশালা’য় অতিথি আসেন। বলতেই হয়, সার্থকনাম। গাড়িতে ম্যাগির পাশে বসে যেতে যেতে বৈচিত্রে ভরা এই দেশটা দেখতে দেখতে মনে হয়, হমিনঅস্ত, হমিনঅস্ত, হমিনঅস্ত। অসাদউল্লা বেগ খানের স্মরণ নিতেই হল। স্বর্গ যদি কোথাও থাকে তবে তা এখানেই, এখানেই, এখানেই। ওহো, কে এই অসাদউল্লা বেগ খান? আরে বাবা মির্জা গালিব। পাহাড়-সমুদ্র-গহিন অরণ্য-নদী-ঝর্না-ফুল-পাখি--- স্কটল্যান্ড অনন্যা। কালিম্পং-গ্যাঙটকের মতো এখানেও সব বাড়িতেই ফুল। বেশির ভাগই বাগান। না হলে অনেক টব।

ডরনক শহর বিখ্যাত গল্ফ কোর্সের জন্য। নর্থ সি-র উপর রয়্যাল ডরনক গল্ফ ক্লাব। পৃথিবীর অন্যতম সেরা গল্ফ মাঠ। গল্ফ কোর্সের স্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। বহু বিত্তবান ব্রিটিশ ও আমেরিকানের দ্বিতীয় বাড়ি ডরনক শহরে। সমুদ্রের মুখোমুখি। গল্ফ খেলার তাগিদেই বাড়ি করা। বিল ক্লিন্টন বহু বার এখানে গল্ফ খেলে গিয়েছেন। ম্যাগি নিয়মিত গল্ফ মাঠে যায়। তার সূত্রেই আলাপ কয়েক জন ক্লাব সদস্যের সঙ্গে। তাঁদের সবার বাড়ি ডরনকেই। ভারতবর্ষ নিয়ে এঁদের অসীম আগ্রহ। এঁদের অনেকের বাড়ি গিয়ে চা/কফি/ডিনার খেয়েছি। আবার ‘ধরমশালা’য় এঁদের ডেকে ম্যাগির সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুরো বাঙালি খাবার তৈরি করে পরিবেশন করেছি। এর মধ্যে ম্যাগি-মণীশ এক দিন নিয়ে গেল ইন্ডিয়ান ফুড ডিনারে।

ফ্রায়েড রাইস-চিলি চিকেন-ফিস ফ্রাই-ফুলকপির তরকারি-আমসত্তের চাটনি-মিরামিষ পকোড়া-পাঁপড়-মাটন কারি আর আইসক্রিম। বিপুল আয়োজন। নিমন্ত্রিত প্রায় ৮০ জন! পুরো রান্না করেছেন একই পরিবারের তিন জন স্কটিশ মহিলা। অবাক হয়ে প্রশ্ন করতেই হয়, এই রান্না তাঁরা শিখলেন কোথায়। জানলাম, ওঁদের পূর্বপুরুষ কলকাতায় অনেক বছর ছিলেন। পুরো দস্তুর বাঙালি খাবার যে সাহেবদের কত প্রিয় তা নিজের চোখে দেখলাম। ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সব শহরে সুপার মার্কেটে সমস্ত রকম ভারতীয় মশলা পাওয়া যায়। এমনকি পাবদা-পার্শে-ইলিশ মাছও! বাংলাদেশ থেকে চালান যায়। কোটি কোটি টাকার রফতানি!

ডরনক থেকে কয়েক মাইল দূরে বোনার ব্রিজ বলে একটা ছোট গ্রাম আছে। সেখানে পিটার আর অ্যান এই অধমকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আবার অবাক হওয়ার পালা। ক্রিকেট অনুরাগী পিটার অনর্গল বলে গেলেন শচীনের যাবতীয় ক্রিকেট কীর্তি। ভারত কোনও বড় আসরে জয়ী বা পরাজিত হলে পিটারের ই-মেল অবশ্যই পৌঁছে যাবে। পাহাড়ের কোলে পিটারের সুন্দর সাজানো সংসার-বাড়ি। বসার ঘর থেকে পরিষ্কার দেখা যায় পাহাড়ে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত।

বোনার ব্রিজ যাওয়ার পথে মণীশ-ম্যাগি দেখাল ডরনক ক্যাথিড্রাল। বালুশিলা দিয়ে নির্মিত দেওয়াল, ধনুকাকৃতি ছাদ, কাচের জানলা। খুব সুন্দর এই ক্যাথিড্রালটা। বেশ পবিত্রতায় মোড়া। পিটার-অ্যানের বাড়িতে চা শেষে ডান রবিন ক্যাসেল। পুরো পথটা মনোরম। মন ভাল হয়ে যায়। বিষাদ পিছু নেয় না। বলতে হয় না, বিষাদ আজ আর আমার পিছু নিতে পারবে না। বুঝি, কেন কেন লক্ষ লক্ষ মানুষ এ দেশে আসেন দেশ দেশান্তর থেকে। পথের দু’পাশে ফুলের মেলা। তেমনই সমৃদ্ধ বনজ সম্পদ। কত যে পাখি! দু’পাশে ফাঁকে ফাঁকে টিউডর ও জর্জিয়ান শৈলীর কটেজ। সব বাড়ির সামনে-পিছনে বাগান। দেবদারু-ওক-পাইন গাছ। দেখতে দেখতে পৌঁছে যাওয়া ক্যাসেলে।

ডান রবিন মানে রবিনস হিল বা ফোর্ট ইন গেলিক। গেলিক ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের ভাষা। ডান রবিন ক্যাসেল আগে ছিল ডিউক অউ সাদারল্যান্ডের বাসভবন। ১৩০০ সালে তৈরি হয় এই ক্যাসেল। নিরাপদ দুর্গ। বিভিন্ন সময় এটার সংস্কার হয়। দীর্ঘ ইতিহাস যার সাক্ষী। ক্যাসের দেওয়াল ৬ ফুট পুরু। ছাদ ধনুকের মতো, বাঁকা। এই ক্যাসেলে আছে একটা সংগ্রহশালা। তখনকার রাজা-মন্ত্রীরা শিকার করতে যেতেন। বিভিন্ন জন্তু-জানোয়ারের মাতা বা পুরো শরীর স্টাফ করে রাখা আছে। আছে প্রাচীন পাথর নির্মিত অস্ত্র-শস্ত্র। কয়লাখনি ও ল্বর্ণখনি সম্পর্কিত তথ্য। মানব জাতির বিবর্তনের বিস্তীর্ণ বর্ণনা। এ ছানা খাওয়ার ঘর, প্রাতরাশ কক্ষ, চা পানের জন্য বিশাল ঘর। আর মিউজিক রুম। রাজাদের যুদ্ধ জয়ের নানা স্মারক রাখা আছে ক্যাসের সংগ্রহশালায়। আর আছে একটা সমৃদ্ধ পাঠাগার। তখনকার দিনে নারীরা প্রাতরাশ করতেন নিজেদের কক্ষে। প্রতিটি কক্ষ কার্পেটে মোড়া। মেঝে, আসবাবপত্র সব মেহগনি কাঠের। এই ডান রবিন ক্যাসেল এখন বারোমাস ব্যস্ত থাকে। নানা ধরনের ইভেন্ট-সম্মেলন-প্রদর্শনী এখানেই হয়, অবশ্যই চড়া দামে। সবচেয়ে কদর বিয়ে বাড়ির জন্য। বিত্তবানদের বিয়ে এখানেই হয়। সুন্দর প্যাকেজিং ব্যবস্থা। এতই তার কদর যে এ বছর এক দিনও আর খালি নেই। পুরো ক্যাসেল জুড়ে অজস্র ফুলের বাগিচা। হবেই তো! ফুল ছাড়া বিয়ে হয়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raja dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE