আরও এক বার ‘প্রথম বার’ ঘটালেন নরেন্দ্র মোদী।
ক্ষমতায় বসার পরেই প্রশাসনে গতি আনতে উঠেপড়ে লেগেছেন মোদী। পূর্বতন সরকারের ‘নীতি পঙ্গুতা’ কাটাতে একের পর এক পদক্ষেপ করছেন। এর ভিতরে অনেকগুলিই নজিরবিহীন। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন, মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে মোদীর বৈঠকঅতীতে এ দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীই যা করেননি। আজ দুপুরে দেশের ৭৭ জন শীর্ষ আমলাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠক সরকার পরিচালনা ও নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
কয়েক দিন আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ১০০ দিনের কাজের রূপরেখা স্থির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সব বিষয়ই আজকের আলোচনায় উঠে এসেছে। সুত্রের খবর, বিভিন্ন মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে আলোচনা করে গুরুত্বের তালিকা ঠিক করা হয়েছে। ঠিক কী ধরনের কাজ তিনি প্রশাসনের কাছে আশা করছেন এ দিন তা স্পষ্ট করেছেন মোদী। বৈঠকে অর্থসচিব অরবিন্দ মায়ারাম, স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী, প্রতিরক্ষাসচিব রাধাকৃষ্ণ মাথুর, বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ-রাও উপস্থিত ছিলেন। সুত্রের খবর, প্রশাসনে সমন্বয় বাড়াতে ও কাজে গতি আনতে বিভিন্ন মন্ত্রককে নিয়ে ১৬টি গ্রুপ গড়া হয়। কাজের ক্ষেত্রে কাছাকাছি থাকা মন্ত্রকগুলিকে এক-একটি দলে রাখা হয়েছিল। যেমন, অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে জুড়ে থাকা দফতরগুলিকে নিয়ে একটি দল, শক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে জুড়ে থাকা কয়লা, পেট্রোলিয়াম, খনিজ পদার্থ, আণবিক শক্তি মন্ত্রকের সচিবরা ছিলেন অন্য একটি দলে। কৃষি উত্পাদন সংক্রান্ত মন্ত্রকের সচিবরা ছিলেন একসঙ্গে, পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রকগুলিকে রাখা হয়েছিল একসঙ্গে। প্রতিটি মন্ত্রকের সচিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, “পূর্বতন সরকারের কাজের সাফল্য ও ব্যর্থতাগুলিকে চিহ্নিত করুন। পাশাপাশি, আগামী পাঁচ বছরের জন্য কাজের রূপরেখা স্থির করুন।’’ এই ভাবনা নিয়ে পরে আবার শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী। আজকের আলোচনায় অর্থ মন্ত্রকের নোটে মূল্যবৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণ, ইস্পাত ও সিমেন্ট ক্ষেত্রের বিলগ্নিকরণের ভাবনাকে রাখা হয়েছিল। প্রস্তাব ছিল সেলের বিলগ্নিকরণের। আবার বাণিজ্য মন্ত্রক নিয়ে এসেছিল বিদেশি লগ্নি প্রসঙ্গ।
মোদীর এ সব নজিরবিহীন কাজকর্মকে কিন্তু কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেস। এআইসিসির সাংবাদিক সম্মেলনে দলের মুখপাত্র শশী তারুরের মন্তব্য, “ কয়েক দিন আগেই মন্ত্রিগোষ্ঠীগুলি ভেঙে দিলেন মোদী। এ বার মন্ত্রীদের ছাড়াই সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি। তা হলে কি প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রীদেরও ডানা ছাঁটা শুরু করলেন ?”
রাজনীতির বিতর্ক যাই হোক, প্রশাসনকে চাঙ্গা করতে মোদী-দাওয়াই কতটা কার্যকরী হয়ে উঠবে, সময়ই তার জবাব দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy