আউং সান সু চি
দীর্ঘ নীরবতা ভাঙলেন। কিন্তু সমালোচনা থামল না। বরং জোরালো হল। শান্তির নোবেলজয়ী মানবাধিকারের লড়াকু নেত্রীর বক্তৃতায় হতাশ বহু মানুষ।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে মায়ানমারের নেত্রী এবং সরকারের পরামর্শদাতা আউং সান সু চি মুখ খুললেন মঙ্গলবার। তবে মায়ানমারের রাজধানী নেপিদও থেকে দেওয়া তাঁর আধ ঘণ্টার টিভি বক্তৃতায় মাত্র একবারই উচ্চারিত হল ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটা! শুধু এই প্রসঙ্গ নয়, সু চি-র গোটা বক্তব্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রইল বিতর্কের এমন অনেক পরিসর।
কূটনীতিকদের দাবি, সু চি সঙ্কটের সমাধান খুঁজতে সাহায্য করলেন না, উল্টে তৈরি করলেন আরও এক গুচ্ছ প্রশ্ন। মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপরে চলতে থাকা নির্যাতন নিয়েও একটি নিন্দাসূচক শব্দও শোনা গেল না সু চি-র বক্তৃতায়। অথচ দিন কয়েক আগেই এই নির্যাতন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার হাইকমিশনার জায়েদ রাদ আল হুসেন বলেছিলেন, ‘‘এটি জাতি নিধনের ভয়ঙ্কর উদাহরণ।’’
সু চি এ দিন আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে যেন বিঁধে বললেন, তাঁর দেশ ‘‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের ভয় পায় না।’’ যে কথা তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চেও। ইয়াঙ্গন সে কথায় হাততালি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা কোন দিকে। সু চি-র বক্তৃতার লক্ষ্যও ঠারেঠোরে আন্তর্জাতিক দুনিয়াই। তাই বক্তৃতা সম্প্রচার হয়েছে ইংরেজিতে। এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে হাজির না থেকেও এ ভাবে তিনি বার্তা দিলেন সবাইকে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোহিঙ্গাদের যে জঙ্গি সংগঠন অগস্টে রাখাইন প্রদেশের ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায়, সেই আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-র কথা বলতে গিয়ে রোহিঙ্গা শব্দটা একবার সু চি-র কথায় উঠে আসে। সঙ্গে তাঁর দাবি, দেশের সমস্যাগুলো ঠিক কী, তা খুঁজতে হবে মায়ানমার সরকারকে। এই বক্তব্যেই তৈরি হয়েছে উষ্মা। কারণ রাখাইন প্রদেশ কী কারণে উত্তপ্ত হল বা কী ভাবে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠন, এমনকী মায়ানমার সরকারও বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করেছে।
তাই সু চি-র কথায় ক্ষুব্ধ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের অভিযোগ, ‘‘রাখাইন প্রদেশের ভয়ঙ্করতার দিকে না তাকিয়ে সু চি আর তাঁর সরকার বালির মধ্যে মাথা ডুবিয়ে বসে আছে!’’ ’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy