Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মহাসাগর পার দৃষ্টিহীন নাবিকের

সান দিয়েগো থেকে ফুকুসিমা— ৫২ বছরের মিতসুহিরো ইয়ামোতো দু’মাসে সাড়ে আট হাজার মাইলেরও বেশি পাড়ি দিয়েছেন। শনিবার সকালে ফুকুসিমার বন্দরে এসে ভিড়েছে তাঁর ১২ মিটারের নৌকা ‘ড্রিম ওয়েভার’ নিয়ে।

মিতসুহিরো ইয়ামোতো (বাঁদিকে)।

মিতসুহিরো ইয়ামোতো (বাঁদিকে)।

সংবাদ সংস্থা
টোকিয়ো শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫৯
Share: Save:

প্রশান্ত মহাসাগর পার করলেন জাপানের এক দৃষ্টিহীন নাবিক। দু’মাসে এক বারও না থেমে একটানা নৌকা চালিয়ে এই অভিযান শেষ করেন তিনি। জাপানের দৃষ্টিহীন নাবিকদের সংগঠন জানিয়েছে, এমন রেকর্ড এই প্রথম।

সান দিয়েগো থেকে ফুকুসিমা— ৫২ বছরের মিতসুহিরো ইয়ামোতো দু’মাসে সাড়ে আট হাজার মাইলেরও বেশি পাড়ি দিয়েছেন। শনিবার সকালে ফুকুসিমার বন্দরে এসে ভিড়েছে তাঁর ১২ মিটারের নৌকা ‘ড্রিম ওয়েভার’ নিয়ে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রওনা হয়েছিলেন ক্যালিফর্নিয়া থেকে। সঙ্গে ছিলেন এক সাহায্যকারী। মার্কিন নেভিগেটর ডো স্মিথ শুধুমাত্র হাওয়ার গতির বিষয়ে তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন তাঁকে। সাবধান করেছেন সম্ভাব্য বিপদ দেখলে।

২০১৩ সালেও এক বার প্রশান্ত মহাসাগর পেরনোর চেষ্টা করেছিলেন ইয়ামোতো। সে বার সঙ্গে ছিলেন এক জাপানি নেভিগেটর। ফুকুসিমা থেকে যাত্রা শুরু করে সান দিয়েগোয় শেষ করার কথা ছিল তাঁদের। বন্দর ছাড়ার পাঁচ দিনের মাথায় তিমির ধাক্কায় নৌকা উল্টে যাওয়ায় থামাতে হয় অভিযান। সমুদ্রে তলিয়ে গিয়েছিল বেশ কিছু দামি যন্ত্রপাতি। জাপানের সেনাবাহিনী কোনও মতে উদ্ধার করে ওই দু’জনকে।

ইয়ামোতোর কথায়, ‘‘দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় এই অভিযান সফল হওয়া যেন স্বপ্নের মতো। আমি এখন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ!’’ ইয়ামোতো তাঁর ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘‘শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্যের জন্য এই অভিযান শুরু করিনি। আমি বার্তা দিতে চেয়েছি, কেউ পাশে থাকলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।’’ তিনি ও স্মিথ এই অভিযান থেকে যে অর্থ পাবেন, তা অন্ধত্ব রুখতে দান করা হবে।

এই অভিযানের জন্য সাহায্য চেয়ে বহু দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছিলেন ওই দৃষ্টিহীন নাবিক। তাঁর ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, ১৬ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারান ইয়ামোতো। সেই সময়ে অবসাদ ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। আত্মঘাতী হওয়ার কথাও ভাবেন। কিন্তু মন শক্ত করে ঘুরে দাঁড়ান অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষটি। শুধু নৌকা বাওয়াই নয়, সান দিয়েগোর একটি বাইসাইকেলিং ক্লাবেরও সদস্য তিনি। বিয়ে ও কন্যাসন্তানের জন্মের পরে ২০০৬ সালে সান দিয়গো চলে যান তাঁরা।

ইয়ামোতো জানিয়েছেন, বিয়ের পরে স্ত্রী কারেনের সঙ্গে জাপানের চিবায় থাকতেন তিনি। বাড়ির আশপাশের বহু দোকানে নৌকা ভাড়া পাওয়া যেত। কারেন নিজে দক্ষ নৌকা চালক। আনাড়ি ছাত্রের হাতেখড়ি হয় তাঁর কাছেই। তার পরে ক্রমাগত অনুশীলনে পাকাপোক্ত হয়ে ওঠেন ইয়ামোতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Voyage Pacifice Ocean Japanese Sailor Blind
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE