Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
International News

হামবানতোতায় চিনা নৌসেনাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, ঘোষণা শ্রীলঙ্কার

হামবানতোতা বন্দরে চিনকে কোনও সামরিক কার্যকলাপ চালাতে দেওয়া হবে না। স্পষ্ট জানাল শ্রীলঙ্কা। ভারতের আপত্তির কথা মাথায় রেখেই শ্রীলঙ্কা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানালেন চিনে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত করুণাসেনা কোদিতুবাক্কু।

ভারত মহাসাগরে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় চিনা নৌসেনা। ভারতের বাধায় চিন তাতে বিফল হচ্ছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। (প্রতীকী ছবি)

ভারত মহাসাগরে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় চিনা নৌসেনা। ভারতের বাধায় চিন তাতে বিফল হচ্ছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। (প্রতীকী ছবি)

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৯:১৪
Share: Save:

হামবানতোতা বন্দরে চিনকে কোনও সামরিক কার্যকলাপ চালাতে দেওয়া হবে না। স্পষ্ট জানাল শ্রীলঙ্কা। ভারতের আপত্তির কথা মাথায় রেখেই শ্রীলঙ্কা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানালেন চিনে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত করুণাসেনা কোদিতুবাক্কু। হামবানতোতা বন্দরের ৮০ শতাংশ অধিকারই সম্প্রতি চিনা সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার। এ নিয়ে ভারতের আপত্তি তো রয়েইছে। শ্রীলঙ্কার বিরোধী দল এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিও বিক্ষোভ শুরু করেছে। দেশের বিক্ষোভকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না শ্রীলঙ্কার সরকার। তবে নয়াদিল্লির আপত্তিকে যে কলম্বো মোটেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না, রাষ্ট্রদূত করুণাসেনার মন্তব্যে তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।

হামবানতোতা বন্দরের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চিনাদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের নেতৃত্বে তীব্র বিক্ষোভ শ্রীলঙ্কায়। ছবি: এএফপি।

শ্রীলঙ্কার হামবানতোতায় চিনের বন্দর প্রকল্প নিয়ে ভারতের আপত্তি দীর্ঘ দিনের। সে দেশের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাক্ষে ঘোষিত চিন-পন্থী ছিলেন। তাঁর আমলেই ৭০০ কোটি ডলারের এই চিনা প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগোতে শুরু করে। ভারতের নাকের ডগায় চিনকে বন্দর তৈরি করতে দেওয়া নয়াদিল্লির পছন্দ ছিল না মোটেই। কিন্তু ভারতের আপত্তিতে প্রেসিডেন্ট রাজাপাক্ষে কানই দেননি। ক্ষমতার হাতবদলের পর ছবি বদলায়। মৈত্রীপালা সিরিসেনা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হয়ে চিনা প্রকল্পের গতিরোধ করেন। কিন্তু সম্প্রতি বেজিং এবং কলম্বোর সম্পর্ক আবার কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। সেই সুবাদে হামবানতোতা বন্দরের ৮০ শতাংশ অশীদারিত্ব নিজেদের হাতে নিতে বেজিং সক্ষম হয়েছে। বন্দর লাগোয়া এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কও গড়ছে চিন। তার জন্য শ্রীলঙ্কার সরকার চিনাদের হাতে ১৫ হাজার একর জমিও তুলে দিয়েছে।

হামবানতোতার চিনা ইনডাস্ট্রিয়াল পার্ক নিয়ে ভারতের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু ওই বন্দরের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণই শ্রীলঙ্কা চিনের হাতে তুলে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হামবানতোতা বন্দরে চিন শক্তপোক্ত নৌঘাঁটি গড়ে তুলে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলার কৌশল নিতে চায় বলে নয়াদিল্লি মনে করছে। তার জেরেই ভারতের এই আপত্তি।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো উত্তাল শ্রমিকদের চিন-বিরোধী বিক্ষোভে। ছবি: এএফপি।

শ্রীলঙ্কা কিন্তু ভারতের আপত্তিকে এখন যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। সেই কারণেই চিনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে দিয়ে এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়ানো হয়েছে। করুণাসেনা কোদিতুবাক্কু জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কাজেই বন্দরকে ব্যবহার করতে পারবে চিন। হামবানতোতা বন্দরে কোনও রকম সামরিক কার্যকলাপ চালানোর অনুমতি শ্রীলঙ্কা চিনকে দেবে না। ভারতের আপত্তি রয়েছে বলেই চিনকে এই অনুমতি দেওয়া হবে না, এমনটাই জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কূটনীতিক।

আরও পড়ুন: বাড়ছে পাক সেনার সক্রিয়তা, প্যাঁচে শরিফ, ধীরে চলো নীতি দিল্লির

পাকিস্তান যেখানে তাদের গোয়াদর বন্দরের কর্তৃত্ব প্রায় পুরোপুরিই চিনের হাতে তুলে দিয়েছে, সেখানে শ্রীলঙ্কা কেন সে পথ নেবে না, এ কথাও করুণাসেনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘অন্য কোনও দেশ কী করছে তা আমি জানি না। কিন্তু শ্রীলঙ্কা খুব স্পষ্ট করেই বিনিয়োগকারীদের জানিয়ে দিয়েছে, কোনও সামরিক উদ্দেশে এই বন্দরকে ব্যবহার করা যাবে না।’’

প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন যে মাহিন্দা রাজাপাক্ষে চিনের হাতে হামবানতোতার কর্তৃত্ব তুলে দিতে উদগ্রীব ছিলেন, বিরোধী আসনে বসে তিনিই এখন চিনা প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন। শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন চিনের হাতে বন্দরের ৮০ শতাংশ কর্তৃত্ব তুলে দেওয়ার বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছে। রাজাপাক্ষে সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hambantota Port Sri Lanka China Military Activity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE