সরকারের গোপন নথি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ড হল চিনের এক প্রবীণ সাংবাদিকের। ৭১ বছরের বৃদ্ধা গাও ইউকে গত এক বছর ধরে আটক করে রেখেছিল চিনের কমিউনিস্ট সরকার। আজ বেজিংয়ের একটি আদালত দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে। গাওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৩ সালে কমিউনিস্ট পার্টির অত্যন্ত গোপনীয় কিছু তথ্য বিদেশি ওয়েবসাইটে পাচার করেছিলেন তিনি। বিষয়টির আঁচ পাওয়ার পর থেকেই গাওকে আটক করে রেখেছিল প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সরকার। গাওয়ের ভাই জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।
তবে এটাই প্রথম বার নয়। এর আগেও দেশের গোপন নথি বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাত বছর জেলে কাটাতে হয়েছে গাওকে। কর্মজীবনের শুরু থেকেই তাঁর বিভিন্ন লেখায় কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সমালোচনা করেছেন গাও। আর তার ফলও ভুগতে হয়েছে তাঁকে। গাওয়ের ভাই ওয়েই আজ অভিযোগ করেছেন, গত বছর আটক করার পরে গাওকে ভয় দেখিয়ে যে জবানবন্দি সরকার আদায় করেছিল, তার ভিত্তিতেই আজ রায় দিয়েছেন বিচারক। ওয়েইয়ের দাবি, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে মুখ খোলারই মাসুলই আসলে দিতে হচ্ছে তাঁর দিদিকে।
এই রায়ের পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি চিনা সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাদের দাবি, চিন মুখেই মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে। আসলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করতেই অন্যায় ভাবে জেলে ঢোকানো হয়েছে গাওকে। বৃদ্ধা গাও নিজে অবশ্য রায়ের পরে বিচলিত নন। আজ সংবাদমাধ্যমকে আদালত চত্বরের বহু দূরেই আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তাই গাওয়ের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। আদালত কক্ষে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রায় শোনার পরে চুপচাপ বসেছিলেন গাও। কিছু না বলে শুধু মুচকি হেসেছেন।
সরকারি কোপ যে তাঁকে টলাতে পারবে না, তার ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন গাও। গত বছর আটক হওয়ার ঠিক আগেই একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘পর্বত বা নদীর প্রকৃতি বদলানো যায়। কিন্তু মানুষের প্রকৃতি বদলানো সম্ভব নয়। সাত বছরের জেল এর আগেও খবর নিয়ে আমার উৎসাহ কমাতে পারেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy