ইয়ান কগনিটো।
নাইট শো। রাত ১০টা হবে। হাসি-মশকরায় ফেটে পড়ছে অক্সফোর্ড থেকে ১৪ মাইল উত্তরে বিস্টার শহরের অ্যাটিক বার। মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘লোক হাসাচ্ছিলেন’ ব্রিটিশ কমেডিয়ান ইয়ান কগনিটো। —‘‘ধরুন যদি এই আপনাদের সামনেই মরে যাই।’’ বলতে বলতেই বুকে হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পড়েন তিনি। হেসে কুটিপাটি লোকজন।
কী ‘অভিনয়’! বিবর্ণ চোখ-মুখ থরথর করে কাঁপছে। ঘোর কাটল পাঁচ মিনিট পরে, হলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখে।
খবর যায়। সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসেন চিকিৎসক। জানালেন, মঞ্চেই মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ্ব কৌতুকাভিনেতার।
বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ ব্রিটেনের শিল্পীমহল। প্রিয় অভিনেতার এমন মৃত্যু বিশ্বাস করতে পারছেন না কগনিটো-ভক্তরাও। সে দিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে মজা করছিলেন তিনি। রসিকতা করছিলেন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক নিয়ে। কগনিটোর কৌতুক উপভোগ করছিলেন অ্যাটিক বারের মালিক রায়ান মোল্ডও। বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের মাঝপথ। মজা করতে-করতে আচমকাই বসে পড়েন কগনিটো। মাথা কাত হয়ে যায়, দু’হাত এলিয়ে পড়ে পিছনে। কাঁপতে থাকে কাঁধ। লোকজন ভেবেছিলেন ওটাও ওঁর অভিনয়েরই অংশ। মঞ্চে সারাক্ষণ মজা করতেন। লোকে অস্বাভাবিক কিছুই বোঝেননি।’’ কিন্তু মিনিট খানেক পরেই নিথর হয়ে যান কগনিটো। মুহূর্তের স্তব্ধতা। এ বার ছুটে যান কগনিটোর সহকর্মীরা। মোল্ড জানান, অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হয়েছিল। দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত এক চিকিৎসক সিপিআর দেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অ্যান্ড্রু বার্ডও বলেন, সবাই ভেবেছিলেন, কগনিটো মজা করছেন। জানালেন, মঞ্চে ওঠার আগেই অভিনেতা তাঁকে বলেছিলেন, শরীরটা খুব একটা ভাল নেই। কিন্তু অনুষ্ঠান করবেনই। বার্ড বলেন, ‘‘খুব জোরে কথা বলেন উনি। আমি ভাবছি মজা করছেন। একটু আগেও মৃত্যু নিয়ে রসিকতা করেছেন। দর্শকদের মতো আমিও ভাবছিলাম অভিনয়। যখন ওঁর কাছে ছুটে যাচ্ছি, তখনও ভাবছিলাম এই বুঝি তেড়েফুঁড়ে উঠে আমাকে চমকে দেবেন।’’
অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা জানায়, ১০টা ১১ নাগাদ তাদের কাছে খবর আসে। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স ও স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়। কিন্তু তত ক্ষণে ওই কৌতুকাভিনেতার মৃত্যু হয়েছে।
কগনিটোর আসল নাম পল বারবিয়েরি। লন্ডনে জন্ম। আশির দশক থেকে কৌতুকাভিনয় করছেন। সে দিন দর্শকাসনে ছিলেন তাঁর গুণমুগ্ধ জন অস্টোজ্যাক। বললেন, ‘‘মিনিট দশেক আগে স্ট্রোক নিয়ে মজা করছিলেন উনি। বলছিলেন, ‘ভাবুন আমার স্ট্রোক হয়েছে’। কী খারাপ লাগছে। বসে-বসে সবটা দেখলাম। আর হেসে গেলাম!’’
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy