Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Coronavirus

প্রতিষেধক আবিষ্কার-যুদ্ধে শামিল বাঙালিনি

বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়ার পরে ব্রিটেনে এসেছিলেন সুমি। সেটা ২০০৫ সাল। তার পর একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়েছেন।

সুমি বিশ্বাস

সুমি বিশ্বাস

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

হন্যে হয়ে এখন কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক খুঁজছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীরা। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও ব্যতিক্রম নয়। এখানকার জেনার ইনস্টিটিউট-এর যে দলটি এই মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারে ব্যস্ত, সেই দলে অন্যতম নাম সুমি বিশ্বাস। এই বাঙালিনি ও তাঁর সহকর্মীদের সাফল্যের দিকে এখন শুধু ব্রিটেন নয়, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে।

বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়ার পরে ব্রিটেনে এসেছিলেন সুমি। সেটা ২০০৫ সাল। তার পর একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়েছেন। প্রথমে ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন’-এ যোগ দেন তিনি। সেখানে ১১ মাস কাজ করার পরে ২০০৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে ডি-ফিল করতে। ২০১৩ সালে জেনার ইনস্টিটিউটে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করেন এই বাঙালি ইমিউনোলজিস্ট। তিন বছরের মাথায় এই প্রতিষ্ঠানেরই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হন তিনি।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধীনে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নাম স্পাইবায়োটেক। সেই প্রতিষ্ঠানের সহকারী কর্ণধার ও চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ অফিসারও হলেন সুমি। তিনি মূলত ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে জেনার ইনস্টিটিউটে যে গবেষণা চলছে, সেই দলের নেতৃত্বেও রয়েছেন সুমি। মানবদেহে ট্রায়াল চালানোর প্রথম পর্যায়ে রয়েছে সুমিদের বানানো প্রতিষেধক।

এই বাঙালিনি এখন কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক নিয়ে যে দলে কাজ করছেন, সেখানে রয়েছেন মোট ১৫ জন বিজ্ঞানী। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন সারা গিলবার্ট। তা ছাড়াও আড্রিয়ান হিল এবং টেরেসা ল্যাম্বের মতো বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন সেই দলে। লকডাউনের জন্য বেশির ভাগ বিজ্ঞানীরাই এখন বাড়ি থেকে কাজ করছেন। যাঁদের ল্যাবে যেতে হচ্ছে, তাঁরাও যথাযথ সাবধানতা নিচ্ছেন। তবে গবেষণা নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততার জন্য আপাতত সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা কেউই সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে রেখেছেন।

এ বছরের জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করে সারার দল। গত সপ্তাহে প্রতিষেধকটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই ট্রায়াল ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এই প্রচেষ্টায় আশি শতাংশ সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল সারার দল।

আপাতত গোটা বিশ্বে করোনার প্রতিষেধক তৈরির জন্য ১০০টিরও বেশি প্রকল্পে কাজ চলছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে গেলে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার এখন সব চেয়ে জরুরি। যে ক’টি প্রকল্পে কাজ চলছে, তার মধ্যে সাতটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন। লন্ডন ইম্পিরিয়াল কলেজও একটি প্রতিষেধক বানানোর চেষ্টা করছে, যার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা জুন মাসের মধ্যেই।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর জুয়া-ক্যাসিনোর রাজধানী এই শহর দুশো বছর আগেও ছিল ধু ধু মরুভূমি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE