Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাম্পের আক্রমণের মুখে এ বার মিশেল

এক তিরের নিশানায় দুই পাখি। প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টনকে বিঁধতে গিয়ে এ বার মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকেও একহাত নিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আট বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বহু সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন ওবামা দম্পতি। ক’দিন বাদেই নির্বাচন। শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণের ‘সাউথ লন’-এ গানের আসর বসিয়েছিলেন বারাক ওবামা। তাঁর  প্রেসিডেন্ট-জমানার শেষ সঙ্গীত-সন্ধ্যা এটি। অভ্যাগতদের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘বব ডিলান থেকে জেনিফার হাডসন, কে আসেননি হোয়াইট হাউসের এই সব সঙ্গীতানুষ্ঠানে! এখানেই মিশেলকে তাঁর বিখ্যাত ‘মিশেল’ গানটি গেয়ে শুনিয়েছিলেন পল ম্যাকার্টনি, স্টিভি ওয়ান্ডার গেয়েছিলেন ‘হ্যাপি বার্থডে’। এই ধরনের অনুষ্ঠান আমরা খুব মিস করব।’’ ছবি: এপি

আট বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বহু সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন ওবামা দম্পতি। ক’দিন বাদেই নির্বাচন। শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণের ‘সাউথ লন’-এ গানের আসর বসিয়েছিলেন বারাক ওবামা। তাঁর প্রেসিডেন্ট-জমানার শেষ সঙ্গীত-সন্ধ্যা এটি। অভ্যাগতদের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘বব ডিলান থেকে জেনিফার হাডসন, কে আসেননি হোয়াইট হাউসের এই সব সঙ্গীতানুষ্ঠানে! এখানেই মিশেলকে তাঁর বিখ্যাত ‘মিশেল’ গানটি গেয়ে শুনিয়েছিলেন পল ম্যাকার্টনি, স্টিভি ওয়ান্ডার গেয়েছিলেন ‘হ্যাপি বার্থডে’। এই ধরনের অনুষ্ঠান আমরা খুব মিস করব।’’ ছবি: এপি

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৬
Share: Save:

এক তিরের নিশানায় দুই পাখি। প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টনকে বিঁধতে গিয়ে এ বার মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকেও একহাত নিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কাল নর্থ ক্যারোলাইনার এক সভায় বললেন, ‘‘হিলারির হয়ে প্রচার ছাড়া উনি আর কিছুই চাইছেন না। অথচ এক সময় তিনি নিজেই হিলারির হোয়াইট হাউসে আসার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।’’ এমনকী মিশেল সে বার হিলারির ঘর-সামলানো নিয়েও খোঁটা দিয়েছিলেন বলে দাবি ট্রাম্পের।

২০০৭-এর কথা। ওবামার হয়ে প্রচারে নেমে মিশেল সে বার একাধিক সভায় বিঁধেছিলেন দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারিকে। কালকের সভায় সে প্রসঙ্গ তুলেই ট্রাম্প বলেন, ‘‘এখন তো শুধুই উল্টো কথা শুনি। তবে উনি যে হিলারিকে ঠিক কতটা ভালবাসেন, তার প্রমাণ আগেই পেয়েছি। আজ গুণ গাইছেন। কিন্তু এক সময় ইনিই না হিলারিকে বলেছিলেন—নিজের ঘরেরই যে খেয়াল রাখতে পারে না, সে আবার দেশের খেয়াল রাখবে কী!’’ মিশেলের ওই মন্তব্যের পর থেকেই সমালোচকরা বলে আসছেন, স্বামী বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে হিলারির দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়েই খোঁচা দিয়েছিলেন ওবামা-পত্নী। যা আজও ক্রমাগত অস্বীকার করে আসছে ওবামা-শিবির। তাদের দাবি, মিশেলের বক্তব্যকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেছে শত্রু শিবির।

এখন অন্য সময়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১৭ দিন বাকি। এ বার ওবামা প্রার্থী নন, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের দৌড় শুরু করা থেকে নিজেকে সেই ওবামার উত্তরসূরি হিসেবে প্রচার করে আসছেন ডেমোক্র্যাট হিলারি। সেই সমীকরণেই আগাগোড়া সমর্থন পেয়েছেন মিশেলের। ট্রাম্পের দাবি, হিলারির এই সমর্থন শুধুই প্রচারের স্বার্থে। উনি ভালই জানেন যে, হিলারি আদৌ প্রেসিডেন্ট পদের যোগ্য নন।

কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, একের পর এক জনমত সমীক্ষায় পিছিয়ে পড়ার কারণেই মেজাজ হারাচ্ছেন ট্রাম্প। ওবামাকে বিশ্বের একটা বড় অংশ পছন্দ করেন না বলেও গত কাল পেনসিলভ্যানিয়ার এক সভায় মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি তাঁর ‘না জিতলে ভোটের ফল মানব না’ মন্তব্যেই বিতর্কের পারদ চড়েছে সব চেয়ে বেশি। যা নিয়ে হিলারিও একহাত নিয়েছেন ট্রাম্পকে।

গত কালই ওহায়োর ক্লিভল্যান্ডে সভা ছিল হিলারির। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এমন মন্তব্য করে ট্রাম্প দেশের গণতন্ত্রকেই বিপদে ঠেলে দিচ্ছেন। নেতৃত্ব আর একনায়কত্বের ফারাকটা আমরা বুঝি। শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরও আমাদের দেশজ ঐতিহ্য।’’ ট্রাম্পের এই ‘রিগিং’ ইঙ্গিত হালকা ভাবে নিতে নারাজ ওবামাও। ট্রাম্পের কথার ফাঁদে পা না দিয়ে মার্কিন জনগণকে সুষ্ঠু ভোটদানের ডাক দিয়েছেন মিশেল ওবামা।

আর ট্রাম্প? পেনসিলভ্যানিয়ার সভায় কাল তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীকে মাইক কেড়ে নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিজে যদিও ইতিহাস তৈরির স্বপ্নে মশগুল। ক্ষমতায় এলে প্রথম ১০০ দিন কী করবেন —তার তালিকা করছেন মার্কিন ধনকুবের। সূত্রের খবর, স্থানীয় সময় শনিবার ট্রাম্প পেশ করতে চলেছেন তাঁর ‘ক্লোজিং আর্গুমেন্ট’— তুরুপের তাস!

কোথায় ঘোষণা করবেন? জায়গাটাও ঐতিহাসিক। পেনসিলভ্যানিয়ার গেটিসবার্গ। দেশজোড়া ভাঙনের মুখে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে এক সময় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন
প্রেসিডেন্ট আব্রাহান লিঙ্কন। মঞ্চ আলাদা, লক্ষ্যও ভিন্ন। হোয়াইট হাউস দখলের পর ট্রাম্পের প্রথম১০০ দিনের কাজ কী হতে চলেছে, মুখে কুলুপ এঁটেছেন ঘনিষ্ঠরা। তবু নেতার কথায় ফের ‘গ্রেট আমেরিকা’ তৈরির আশায় বাঁচছেন ট্রাম্প-সমর্থকেরা। কী বলবেন ট্রাম্প, কান পেতে হিলারি-শিবিরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Michelle Obama Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE