৩১ ডিসেম্বর একের পর মিথ্যে, ভুল আর বিভ্রান্তিকর তথ্য। যেখানে পেরেছেন বলে গিয়েছেন অথবা দু’লাইনে লিখেও ফেলেছেন। সগৌরবে! গত এক বছর ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সে সব কীর্তি ফিরে দেখতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, তাঁর সকালবেলার টুইটগুলোই ছিল ‘মোক্ষম’।
সমীক্ষকদের দাবি, ২ জানুয়ারি তাঁর আক্রমণের তিন প্রিয় ‘নিশানা’ নিয়ে মিথ্যে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। তিন নিশানা অর্থাৎ ইরান, হিলারি ক্লিন্টন এবং মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস! আর একটি মার্কিন দৈনিকের দাবি, ২০১৮-র শুরুতে ১৯৮৯টি মিথ্যে এবং বিভ্রান্তিকর দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট। আর বর্ষশেষে এসে তাঁর মিথ্যের ঝুলিতে জমা হয়েছে ৭৬০০ মন্তব্য। যা গড় হিসেব করলে দাঁড়ায় ২০১৮-য় রোজ ১৫টি করে ভুলে ভরা মন্তব্য শোনা গিয়েছে তাঁর মুখ থেকে। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় তিন গুণ। আর এই ভুলের বহরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো মঞ্চেও হাসির রোল উঠেছে। তিনি সেখানে বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে দু’বছরেরও কম সময়ে
তাঁর প্রশাসন যা করেছে, আর কেউই তা করে দেখাতে পারেনি।’’ হাসি শুনে একটু থমকে গিয়েও থামেনি তাঁর মুখ। তিনি বলে যান, ‘‘এই প্রতিক্রিয়া আশা করিনি।’’
বাণিজ্যিক বিমান পরিবহণের ইতিহাসে ২০০৯ সাল থেকে আমেরিকায় এমনিতেই কোনও দুর্ঘটনার নজির নেই। তা নিয়েও কলার তুলেছেন ট্রাম্প! বলেছেন, তাঁর শাসনে সব চেয়ে ‘সেরা এবং সুরক্ষিত’ বছর কেটেছে বিমান পরিবহণে।
একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ট্রাম্পের এমন ভুলের জেরে আম মার্কিন নাগরিকের ১০ জনের মধ্যে মাত্র ৩ জন তাঁর কথা বিশ্বাস করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ইতিহাস নিয়ে চর্চা করেন মাইকেল ব্যাসলশ। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সত্য আর মিথ্যের মধ্যে তফাতটা নিয়ে আর কোনও প্রেসিডেন্টকে এতটা উদাসীন দেখেছি কি? বা বলা ভাল, তফাতটা মুছে ফেলতে এতটা আগ্রহী আর কাউকে দেখা গিয়েছে কি?’’ ব্যাসলশ বলছেন, প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন সম্পর্কে কী শেখানো হয় স্কুলের বাচ্চাদের?— তিনি কোনও দিন মিথ্যে বলেননি। প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে এমনই উচ্চাকাঙ্ক্ষা গেঁথে গিয়েছে মার্কিন নাগরিকের মনে।
সেখানে ট্রাম্প?
মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগের দিন তিনি প্রচার সভা আর টুইটার মিলিয়ে ১৩৯টি মিথ্যে অথবা বিভ্রান্তিকর তথ্য জানিয়েছেন বলে দেখা যাচ্ছে। হিলারির সঙ্গে রাশিয়ার যোগ, প্রাক্তন এফবিআই অধিকর্তা জেমস কোমি গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন, ডেমোক্র্যাটরা শরণার্থীদের ঢুকিয়ে দিচ্ছেন আমেরিকায়— এমন সব দাবি ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তালিকার শেষ নেই। আগামী বছর কী নয়া রেকর্ড গড়েন প্রেসিডেন্ট, অপেক্ষায় সমীক্ষকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy