Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্বপ্নের সঙ্গে গাঁটছড়া, নিজেকেই বিয়ে করলেন এই কন্যা!

বয়স তিরিশ পেরিয়েছে! মা-বাবা চান, মেয়েকে সৎপাত্রে দান করতে। আত্মীয়-প্রতিবেশীদেরও সে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। কিন্তু মেয়ে চান স্বপ্নের ডানায় ভর করে উড়তে— এই গল্পটা খুব চেনা, প্রায় প্রতিটা ঘরের।

বিয়ের সাজে লুলু জেমাইমা। ছবি:গোফান্ডমি অ্যাকাউন্ট থেকে

বিয়ের সাজে লুলু জেমাইমা। ছবি:গোফান্ডমি অ্যাকাউন্ট থেকে

সংবাদ সংস্থা
কাম্পালা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩১
Share: Save:

জোর তোড়জোড়। বিয়ের মণ্ডপে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব সকলেই। আর তাদের সামনে সমস্ত রীতি-রেওয়াজ মেনে নিজের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধলেন উগান্ডার এক কন্যা।

বয়স তিরিশ পেরিয়েছে! মা-বাবা চান, মেয়েকে সৎপাত্রে দান করতে। আত্মীয়-প্রতিবেশীদেরও সে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। কিন্তু মেয়ে চান স্বপ্নের ডানায় ভর করে উড়তে— এই গল্পটা খুব চেনা, প্রায় প্রতিটা ঘরের।

কিন্তু এই গল্পটাকেই বদলে দিতে চাইলেন উগান্ডার বাসিন্দা ৩২ বছরের লুলু জেমাইমা। দুর্দান্ত পড়াশোনা, সামনে দুরন্ত স্বপ্নের হাতছানি। পৃথিবীবিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ার ডাক আসছে— কিন্তু লুলুর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য সে সব যথেষ্ট ছিল না বাবা-মায়ের কাছে। তাঁদের একটাই দাবি, এ বার যোগ্য ছেলেকে বিয়ে করে সংসারী হোক মেয়ে।

শেষমেশ বাবা-মায়ের চাপে সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেন লুলু। বিয়ে করবেন। এক গ্রাফিক শিল্পী-বন্ধুর সাহায্য নিয়ে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়ে দেন বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়দের। তবে কাকে বিয়ে করছেন! সবার প্রশ্নের উত্তরে সে দিন একটাই কথা বলেছিলেন লুলু, ‘‘পাত্র কে, সেটা সারপ্রাইজ।’’

অবশেষে এসে গেল সেই দিন। ২৭ অগস্ট। দিনটা লুলুর জন্মদিনও। সে দিনই বিয়ে করবেন কন্যা। আসরে বিয়ের সাজে হাজির হলেন লুলু। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী ঘোষণা করলেন, আর কাউকে নয়। নিজেকেই নিজে বিয়ে করছেন তিনি। কারণ তাঁর কাছে নিজের পড়াশোনা, স্বপ্নের চেয়ে বড় কিছুই নয়। আর তাদের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধতে চান লুলু।

বাবা-মা আসেননি অনুষ্ঠানে। লুলুর কথায়, ‘‘পরের দিন ওঁদের সঙ্গে কথা বলি। তখনও ওঁরা ধন্দে। খানিকটা আহতও হন। কিন্তু আমি শুধু বোঝাতে চেয়েছিলাম, আমি বিয়ের জন্য এখনও প্রস্তুত নই।’’

২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ মিডিয়া (চলচ্চিত্র) বৃত্তি পান। স্নাতক পাশ করে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য আবেদন করেন লুলু। আসে ডাকও। ২০১৭, অগস্টে সেখানে যোগ দেন। এর আগে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও জনসংযোগকারী আধিকারিক হিসেবেও কাজ করেছেন।

গোটা অনুষ্ঠানে লুলুর খরচ হয়েছে মাত্র ২ ইউরো। তা-ও সেটুকু যাতায়াত বাবদ। এক বান্ধবীর সৌজন্যে জোগাড় হয়ে গিয়েছিল বিয়ের গাউন। বিয়ের কেকটি বানিয়ে দিয়েছিল ভাই। আর অতিথিরা পানশালার খরচ নিজেরাই মিটিয়েছেন।

তবে কোথা থেকে পেলেন এমন প্রথা ভাঙার সাহস?

তাঁর কথায়, ‘‘আমার ১৬ বছরের জন্মদিনে আমার বিয়ের বক্তৃতা তৈরি করে ফেলেছিলেন বাবা। আগে আমার জন্মদিনে মা আমার জন্য প্রার্থনা করতেন। ইদানিং তার সঙ্গে জুড়েছিল ভাল পাত্রের আর্জি। যে আমার যত্ন করবে, আমাকে ভাল রাখতে পারবে। আর আমি আমার ৩২ বছরের জন্মদিনে এমন এক জনকে বিয়ে করলাম, যাকে নিয়ে আমি নিশ্চিত, যে সে আমায় ভাল রাখবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Dream
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE