বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা সম্পর্কে মন্ত্রিসভার দুই সদস্যের মন্তব্যের দায় নিলেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পষ্ট জানালেন, প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে দুই মন্ত্রী যা বলেছেন, তা সরকারের বক্তব্য নয়। ক্যাবিনেটের বৈঠকেই হাসিনা কামরুল ইসলাম এবং মোজাম্মেল হকের আচরণের সমালোচনা করেন। নাম না করলেও, ওই দুই মন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হাসিনা বলেছেন, মন্ত্রিসভায় থাকতে হলে যা খুশি বলার অভ্যাস ছাড়তে হবে।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য মন্ত্রীরা কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছেন। ক্যাবিনেট বৈঠকের আগে থেকেই কামরুল ও মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আঁচ বাংলাদেশের শাসক দল ও বিচারবিভাগে টের পাওয়া যাচ্ছিল। ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধী মির কাসেম আলির অ্যাপিল মামলার শুনানি থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলে যে মন্তব্য খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম করেছিলেন, বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল প্রথমে তার বিরুদ্ধে সরব হন। তার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নাম না করে কামরুল ইসলামের বোধবুদ্ধি এবং আইন সম্পর্কে ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন। ক্ষোভ আরও বিভিন্ন মহলে ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগ প্রধান শেখ হাসিনার অবস্থান না জেনে কেউ আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিয়েছেন, দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে তিনি খুবই বিব্রত। মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে বিষয়টি না থাকা সত্ত্বেও প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুই মন্ত্রীর অবমাননাকর মন্তব্যের ব্যাপারটি হাসিনা নিজেই টেনে আনেন। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক তখন বৈঠকে উপস্থিত। হাসিনা বলেন, ‘‘একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দুজন মন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন, এতে মনে হয় যেন ওই সংগঠনটি সরকারের কোনও সংগঠন এবং এই বক্তব্য যেন সরকারের বক্তব্য। যদি কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে চান, তাহলে রাস্তায় গিয়ে দিন। মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়া সত্ত্বেও, বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেলেই যা খুশি বলবেন এবং যে কোনও সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলছেন, এটা ঠিক নয়।’’
আরও পড়ুন:
ঢাকায় মন্ত্রীদের নিশানায় প্রধান বিচারপতি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy