ছবি: এএফপি।
ছুরি নিয়ে এলোপাথাড়ি হামলায় জাপানের কাওয়াসাকিতে মৃত্যু হল দু’জনের। মৃতদের মধ্যে এক জন বছর এগারোর স্কুল পড়ুয়া। অন্য জন এক পড়ুয়ার বাবা (৩৯)। আত্মহত্যা করেছে আততায়ী। জখম হন অন্তত ১৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ জনই স্কুলপড়ুয়া।
মঙ্গলবার জাপানের ঘড়িতে তখন সকাল আটটা। সবে স্কুলের পথে রওনা হয়েছে পড়ুয়ারা। অনেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। তামা ওয়ার্ডের বাসস্টপে লাইন করে দাঁড়িয়েছিল ‘ক্যারিটাস এলিমেন্টারি’ স্কুলের পড়ুয়ারা। হঠাৎই দু’হাতে দু’টি ছুরি নিয়ে ওই লাইনে ঢুকে পড়ে ৫০ বছরের এক ব্যক্তি। পরনে কালো জামা ও প্যান্ট। চোখে চশমা। এলোপাথাড়ি ছুরি চালাতে শুরু করে সে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে এক বাসচালক ঘাতককে আটকাতে গেলে দ্রুত নিজের ঘাড়েই ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করে সে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় ছুরি দু’টি। তবে ঘাতকের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। কেনই বা সে হামলা চালাল তা-ও স্পষ্ট নয় প্রাথমিক তদন্তে। মৃত দু’জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তার মধ্যে রয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া হানাকো কুরিবায়াশি। অন্য জন সাতোশি ওয়ামা বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তোশিচিকা ইশি জানিয়েছেন, রাস্তার কাছেই একটি পার্কে ছিলেন তিনি। হঠাৎই পড়ুয়াদের আর্তনাদ শুনে দেখেন, ছুরি নিয়ে এক ব্যক্তি চিৎকার করে বলছেন, ‘‘খুন করে ফেলব তোমাদের।’’
আক্রান্তদের অধিকাংশই হাসপাতালে ভর্তি। তাদের চোখেমুখে এখনও আতঙ্কের রেশ। প্রথম শ্রেণির এক পড়ুয়ার বাবা জানিয়েছেন, হামলার খবর পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও স্কুলের তরফে জানানো হয়, তাঁর মেয়ে ভাল আছে। ঘটনার সময়ে স্কুলবাসেই ছিল সে।
ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও মূল্যে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীও জানিয়েছেন, স্কুল ও স্কুল চত্বরে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত রকম বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আক্রান্তদের সহানুভূতি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। বর্তমানে জাপানেই রয়েছেন ট্রাম্প। এ দিন ঘটনাস্থলে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধাও জানান অনেকে।
জাপানে এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। ২০০১ সালে শেষ বার ওসাকার একটি স্কুলে ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল এক ব্যক্তি। যার ফলে মৃত্যু হয় আট পড়ুয়ার। আহত হয় ১৫ জন। সেই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ঘাতককে। তার পর থেকেই কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে প্রতিটি স্কুলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy