লিয়ন লেডারম্যান
‘ঈশ্বরকণা’র কথা তাঁর মুখেই প্রথম শোনা গিয়েছিল। ১৯৯৩ সালে নিজের বইয়ে হিগস-বোসন কণার বর্ণনা দিয়ে তিনিই লিখেছিলেন ‘গডস পার্টিকল’। পদার্থবিদ্যায় নোবেল সম্মান পেয়েছেন আরও আগে, সেই ১৯৮৮ সালে। যদিও বয়সকালে চিকিৎসার খরচ সামাল দিতে সেই নোবেল পদক নিলামে তুলতে হয়েছিল মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী লিয়ন লেডারম্যানকে।
গত ৩ অক্টোবর, ৯৬ বছর বয়সে রেক্সবার্গের আইডাহো শহরের একটি হাসপাতালে মারা গেলেন লেডারম্যান। রেখে গিয়েছেন হিগস-বোসন নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা করা মহামূল্যবান তত্ত্ব। যদিও শেষ কালে নিজের সাফল্যের স্মৃতিই ছেঁড়া-ছেঁড়া হয়ে গিয়েছিল। ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন প্রবীণ বিজ্ঞানী।
১৯২২-এ নিউ ইয়র্ক শহরে জন্ম লেডারম্যানের। বাবার একটি ধোপাখানা ছিল। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া। নিউ ইয়র্কের সিটি কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা। স্নাতকের পরেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যাওয়া। ফিরে এসে ফের ডুব দেন পড়াশোনায়। ’৫১-তে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাব-অ্যাটমিক পার্টিকল নিয়ে গবেষণা শুরু। এর পর দীর্ঘ পথচলা। ১৯৭৮-’৮৯, ফার্মিল্যাব-এর ডিরেক্টর ছিলেন তিনি।
১৯৮৮ সালে ‘মিউয়ন নিউট্রিনো’ নামে একটি সাব-অ্যাটোমিক পার্টিকল আবিষ্কার করার জন্যই পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন লেডারম্যান। পরবর্তী কালে ডিমেনশিয়া ধরা পড়ার পরে নিলামে তোলেন সেই সোনার পদক। ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ডলার দাম উঠেছিল। ৩৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী, লেডারম্যানের স্ত্রী এলেন কার লেডারম্যান বলেন, ‘‘উনি মানুষ ভালবাসতেন। চেষ্টা করতে তাঁদের শেখাতে, বোঝাতে কেন বিজ্ঞান নিয়ে এত চর্চা হচ্ছে।’’ শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল টার্নার বলেন, ‘‘শক্তি কী কিংবা কণাদের নিয়ে তাঁর গবেষণা অনস্বীকার্য। তার থেকেও বড় কথা, সময়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে ছিল লেডারম্যানের বিজ্ঞান-চর্চা।’’
আরও পড়ুন: স্পিড পোস্টে স্পিডই নেই! ক্ষোভ রাজ্যের
২০১৫ সালে নিলামে পদক বিক্রির পরে লেডারম্যান-পত্নী অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘নোবেল সম্মান উনি ভোগ করেছেন। ওঁর ইচ্ছে, বিজ্ঞানের প্রতি ওঁর ভালবাসা, এ বার অন্য কারও কাছে ‘সম্পদ’ হয়ে থাকুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy