Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
International News

কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনা করুক পাকিস্তান, ভারতের পক্ষেই রায় আন্তর্জাতিক আদালতের

কুলভূষণের বিচার হয়েছিল পাকিস্তানের সামরিক আদালতে। এ দিন আন্তর্জাতিক আদালতের রায়, কুলভূষণের বিচার হওয়া উচিত ফৌজদারি আদালতে। 

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
দ্য হেগ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৮:৫২
Share: Save:

কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ভারতের পক্ষেই রায় দিল আন্তর্জাতিক আদালত। কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড রদ করে পুনর্বিচার করা উচিত পাকিস্তানের— পর্যবেক্ষণ আন্তর্জাতিক আদালতের। কুলভূষণকে কনস্যুলার অ্যাকসেস দেওয়ার নির্দেশও এ দিন দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। শুধু তাই নয়, কনস্যুলার অ্যাকসেস না দিয়ে পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তি ভঙ্গ করেছে বলেও পর্যবেক্ষণ আন্তর্জাতিক আদালতের ১০ সদস্যের বিচারপতির প্যানেলের।

কুলভূষণের বিচার হয়েছিল পাকিস্তানের সামরিক আদালতে। এ দিন আন্তর্জাতিক আদালতের রায়, কুলভূষণের বিচার হওয়া উচিত ফৌজদারি আদালতে। আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায়কে ভারতের জয় হিসেবেই দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।

দূতাবাস সম্পর্ক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশনে বলা হয়েছে, কোনও দেশের নাগরিক অন্য দেশে গিয়ে গ্রেফতার হলে তাঁর নিজের দেশের দূতাবাসের আধিকারিকদের বন্দির সঙ্গে দেখা করতে হবে। কিন্তু কুলভূষণের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সেই অনুমতি দেয়নি। এ দিনের রায়ে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, কনস্যুলার অ্যাকসেস না দিয়ে ওই ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের দাবি, ইরান থেকে পাকিস্তানে গিয়ে গ্রেফতার হন ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার কুলভূষণ। কিন্তু পাকিস্তান তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগ আনে। সেই মামলাতেই পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই আন্তর্জাতিক আদালতে যায় ভারত। কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি জানিয়ে।

আরও পডু়ন: কী হয়েছিল কুলভূষণের? কেনই বা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল পাকিস্তানের আদালত?

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে সাময়িক স্বস্তি সব্যসাচীর, নোটিস খারিজ, কাল অনাস্থা ভোট হচ্ছে না

২০১৬-এর ৩ মার্চ বালুচিস্তান প্রদেশ থেকে কুলভূষণকে গ্রেফতার করে পাক নিরাপত্তা বাহিনী। তার পর ২০১৭-র এপ্রিলে কুলভূষণকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাক সামরিক আদালত। ওই সময় ভারতের তরফে জানানো হয়, নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ইরানে ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন কুলভূষণ। সেখান থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। রায় ঘোষণা পর্যন্ত কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে স্থগিতাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক আদালতের ১০ সদস্যের বেঞ্চ।

আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের আরও অভিযোগ ছিল, ৪৯ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার কুলভূষণের সঙ্গে পাকিস্তানে ভারতীয় হাইকমিশনের সদস্যদের দেখা করতে (কনস্যুলার অ্যাকসেস) দেওয়া হচ্ছে না।

কুলভূষণকে কনস্যুলার অ্যাকসেস না দিলেও পাকিস্তান ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর ইসলামাবাদে তাঁর স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে ওই অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসারের সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়।পরে যদিও ভারতের তরফে অভিযোগ করা হয়, কুলভূষণকে ‘গুপ্তচর’ প্রমাণ করানোর জন্যেই পাকিস্তানের সেটা একটা কৌশল ছিল।

আরও পডু়ন: বৈঠক হয়ে গিয়েছে রামলালের সঙ্গে, শোভন বিজেপির পথেই, স্পষ্ট ইঙ্গিত ঘনিষ্ঠদের

ভারতের অভিযোগ ছিল, এই ভাবেই ভিয়েনা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে ইসলামাবাদ। পাক সামরিক আদালতের ওই রায়কে ভারতের তরফে আন্তর্জাতিক আদালতে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে অভিযোগ করা হয়। পাকিস্তান ভারতের সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। বলে, কুলভূষণের মতো ‘গুপ্তচর’ দিয়েই ভারত পাকিস্তানের গোপন খবরাখবর সংগ্রহের চেষ্টা করেছিল।

এই মামলায় ভারতের পক্ষে আইনজীবী হরিশ সালভে পাকিস্তানের সামরিক আদালতের কার্যকলাপ নিয়েও আন্তর্জাতিক আদালতে প্রশ্ন তোলেন। তারই প্রেক্ষিতে তিনি যাদবকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ খারিজ করার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে আর্জি জানান। অন্য দিকে, পাকিস্তানের আইনজীবী খায়র কুরেশি আন্তর্জাতিক আদালতকে ভারতের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করার অনুরোধ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE