দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কানাডা। অবিবাহিতা মহিলারা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লেই পাঠানো হত প্রসূতি হোমে। সন্তানের জন্মের পরে সদ্যোজাতকে কেড়ে নেওয়া হত মায়ের থেকে। তার পর সেই বাচ্চাদের দত্তক নিতেন অন্য কোনও দম্পতি। তাদের স্তন্যপান করাতে, এমনকি ছুঁতে পর্যন্ত পারতেন না মা। সন্তানের দুঃখ ভোলাতে কুকুর ছানা উপহার দেওয়া হত অনেককে।
অবিবাহিতা মায়ের ‘লজ্জা’ ঢাকতে এমন ঘটনা আকছার ঘটত ১৯৪০ থেকে ’৭০-এর মধ্যে। সম্প্রতি কানাডার সেনেট কমিটির এক রিপোর্টে উঠে এসেছে দেশের এই অন্ধকার অধ্যায়। কমিটির দাবি, এই নির্দয় নীতির জন্য ক্ষমা চাক সরকার।
কমিটির চেয়ারম্যান আর্ট এগলেটন জানিয়েছেন, অবিবাহিত মায়ের ‘সামাজিক কলঙ্ক’ মুছতে জোর করে তাঁদের পাঠানো হত ওই হোমগুলিতে। যেগুলি সাধারণত চালাত সেনা নইলে ধর্মীয় সংগঠন। রেকর্ড বলছে, ১৯৪৫ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে কানাডায় এই রকম ছ’লাখ সন্তানের জন্ম হয়েছিল। এই শিশুদের ৯৫ শতাংশকেই দত্তক দেওয়া হয়েছিল অন্য কোনও দম্পতিকে। ‘এ লজ্জা আমাদেরও’ শীর্ষক রিপোর্টে প্রকাশ, হোমে পাঠানোর পরে নিত্য অত্যাচার করা হত ওই মহিলাদের। বাইরের
বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হত। সন্তান হওয়ার সময়ে যন্ত্রণায় ছটফট করা মা’কে বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখতেন চিকিৎসকরা। ভুক্তভোগীদের এক জনের কথায়, ‘‘লজ্জা ও কষ্ট ছিল সব সময়ের সঙ্গী।’’ অনেকে সন্তানকে চোখের দেখাও দেখতে পাননি। এই যন্ত্রণার অধ্যায় পার করার পরে ভবিষ্যতে আর মা হতে পারেননি হোম ফেরত এক তৃতীয়াংশ মহিলাই।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের যন্ত্রণায় বিচলিত পোপ, ক্ষমাপ্রার্থী
ইউজিনিয়া পাওয়েল নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘প্রথম সন্তান হারানোর দুঃখ আমি কোনও দিন ভুলতে পারিনি। আমায় উপদেশ দেওয়া হয়েছিল, ‘বিয়ে হলেই সব ভুলে যাবে।’ কিন্তু এক জন মা কী ভাবে তাঁর সন্তানকে ভুলতে পারেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy