Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

১১৭ কোটির ক্ষতি দেখিয়ে কর ফাঁকি!

কর সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি যোগাযোগ রয়েছে, এমন এক ব্যক্তির কাছ থেকে দৈনিকটি তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

সংবাদ সংস্থা 
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০৪:২৮
Share: Save:

ব্যবসায় ১১৭ কোটি ডলারের ক্ষতি! যাঁর তাঁর নয়, খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন নয়, ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে। একটি মার্কিন দৈনিক ওই সময়ের কর সংক্রান্ত তথ্য থেকে এমনটাই দাবি করেছে। মূলত ক্যাসিনো, হোটেল এবং জমিবাড়ি ব্যবসায় তাঁর এই বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। আর এই ক্ষতির অঙ্ক দেখিয়ে কর মকুবের সুযোগ নিয়েছিলেন তিনি।

মার্কিন দৈনিকটির প্রতিবেদনে স্বভাবতই বেজায় খাপ্পা প্রেসিডেন্ট। এমনিতেই ওই দৈনিকটিকে সহ্য করতে পারেন না তিনি। তাদের তোপ দেগে বুধবার তাঁর টুইট, ‘‘৮০-৯০-এর দশকে এই রকম বিপুল পরিমাণ ক্ষতির জেরে অনেক জমিবাড়ি ব্যবসায়ীই কর মকুব হয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। একটা অত্যন্ত পুরনো তথ্য ভুল ভাবে দেখানো হচ্ছে। ফেক নিউজ় হিট জব!’’

প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার আগে নিজেকে ধনকুবের ব্যবসায়ী বলে দাবি করে নজর কেড়েছিলেন ট্রাম্প। বাবার জমিবাড়ি ব্যবসা থেকে ৪১ কোটি ৩০ লক্ষ ডলারের সম্পদ বছর তিনেক বয়স থেকেই ট্রাম্পের কাছে চলে এসেছিল বলে আগে জানিয়েছিল দৈনিকটি। কিন্তু নিজের আয়কর দেওয়ার রেকর্ড কখনওই প্রকাশ্যে আনেননি প্রেসিডেন্ট। মার্কিন কংগ্রেসের তরফে বহু বার সে দাবি উঠলেও ট্রাম্প সচেতন ভাবেই এ ব্যাপারে এক পা-ও এগোননি। সোমবারই ‘হাউস ওয়ে‌জ অ্যান্ড মিনস কমিটি’ গত ছ’বছরে ট্রাম্পের দেওয়া আয়কর-রেকর্ড জানতে চেয়েছিল। সংশ্লিষ্ট দৈনিকটির কাছে ওই সময়কার কর দানের কোনও রেকর্ড নেই। মার্কিন করসচিব সাফ জানিয়েছেন, সেই তথ্য দেওয়া যাবে না।

শুধু ১৯৯০ থেকে ’৯১ সালের মধ্যে ট্রাম্পের মূল ব্যবসায় প্রতি বছরে ক্ষতির পরিমাণ ২৫ কোটি ডলারেরও বেশি বলে জানিয়েছে দৈনিকটি। এত ক্ষতি হয়েছিল বলেই এর পর থেকে প্রায় আট-দশ বছর আয়কর দিতে হয়নি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে— দাবি ওই দৈনিকের। অতীতে এই দৈনিকটিই দাবি করেছিল, ৯০-এর দশকে ট্রাম্প তাঁর বাবা-মাকেও আয়কর এড়িয়ে যাওয়ার পথ খুঁজতে সাহায্য করেছিলেন। এবং সেটা পুরোপুরি জালিয়াতির পথেই ঘটেছিল।

তবে ট্রাম্পের আয়কর দানের নিজস্ব রেকর্ড দৈনিকটির হাতে আসেনি। কর সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি যোগাযোগ রয়েছে, এমন এক ব্যক্তির কাছ থেকে দৈনিকটি তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে। প্রকাশ্যে থাকা তথ্যভাণ্ডার থেকে রোজগারের হিসেবে শীর্ষে থাকা ব্যক্তিদের আয়ের নথি সংগ্রহ করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছে দৈনিকটি। উল্লেখ্য, প্রকাশ্য তথ্যভাণ্ডারে শীর্ষ রোজগেরেদের আয় সংক্রান্ত অঙ্কই পাওয়া গিয়েছিল, কোনও ব্যক্তিবিশেষের নাম নয়।

কয়েক সপ্তাহ আগে হোয়াইট হাউসের এক প্রবীণ অফিসার ওই দৈনিককে বলেছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ইচ্ছেমতো লুঠতরাজ চালিয়েছেন। বড়সড় নির্মাণ কাজ আর ভর্তুকি দেওয়া কর্মসূচিতে ঢুকে কর বাঁচিয়েছেন। তাই প্রেসিডেন্ট এখন আমাদের কর-ব্যবস্থাকে তুলোধোনা করছেন। বলছেন, কর আইন পাল্টানো দরকার। বিরাট পরিমাণ কর না দিয়েও কেউ এখানে বিরাট পরিমাণ অর্থ কামিয়ে নিতে পারে।’’ তবে প্রেসিডেন্টের আইনজীবী চার্লস জে হার্ডার গত শনিবার ওই দৈনিককে জানিয়েছিলেন, তারা কর সংক্রান্ত যে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তা আদ্যন্ত মিথ্যে এবং ভয়ঙ্কর সব ভুলে ভরা। তবে ঠিক কোথায় কোথায় ভুল, তা অবশ্য তখন খোলসা করেননি হার্ডার, জানিয়েছে দৈনিকটি। সোমবার হার্ডার বলেন, ‘‘ই-ফাইলিং শুরু হওয়ার আগের দিনগুলোতে ‘ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস’ সংক্রান্ত লেনদেনের অসংখ্য ভুল তথ্য পৌঁছেছে দৈনিকের হাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE